রোহিঙ্গা শিবিরে আরাকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন নামের জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা বৃদ্ধি

রোহিঙ্গাশফিক আজাদ,উখিয়া প্রতিনিধি।

উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আরাকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন (এআরইউ) নামের একটি জঙ্গি সংগঠনের ব্যানারে শিবিরের অবস্থানরত জঙ্গি ক্যাডারেরা তৎপর হয়ে উঠেছে। দেড় বছর রোহিঙ্গা শিবিরে বাইরে থেকে মিয়ানমারে অবস্থান করে ওখানে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ শেষে আবু ছিদ্দিক ও জঙ্গি ছিদ্দিক কুতুপালং ক্যাম্পে অবস্থান করে গত ২৪ ডিসেম্বর কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরস্থ তাদের আস্তানায় (এআরইউ) এর’ নামে ৪৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করেছে বলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সুত্রে জানা গেছে। ওই রোহিঙ্গা জঙ্গি ক্যাডারেরা তাদের সংগঠনের ভিত্তি শক্ত করতে দেশি-বিদেশী লোকজনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছে। এ সংক্রান্ত জঙ্গি সংগঠন তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কয়েক দফা  গোপন বৈঠক হয়েছে। কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তির ডি-৪ ব্লকের মসজিদের ইমাম মৌলভী মঞ্জুর আলম এসব বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। ক্যাম্প ভিত্তিক জঙ্গিদের নিয়ে আরাকান রোহিঙ্গা ইউনিয়নের তৎপরতা বৃদ্ধি হওয়ার ঘটনায় সাধারণ শরণার্থীসহ শিবিরের সংশ্লিষ্ঠ ক্যাম্প প্রশাসনে উদ্বেগ ও আতংক দেখা দিয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, এ সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের রেজিঃ ও আন-রেজিষ্টার্ড রোহিঙ্গারা। ৪৩জনের এ সংগঠনের সার্বিক সহযোগিতা ও আর্থিক পৃষ্টপোষকতায় রয়েছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা কক্সবাজারে অবস্থানকারী মিয়ানমার রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের সাবেক কমান্ডার হাফেজ ছালাউল ইসলাম। সে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ওইসব কর্মকান্ড তৎপরতার লক্ষ্যে বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা অনুদান এনেছেন। এর আংশিক রোহিঙ্গা শিবিরে ভাগভাটোয়ারা করলেও বেশির ভাগ রোহিঙ্গারা ওই অনুদান বঞ্চিত।  সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের ত্রাণ ও যাকাতের কোটি কোটি আত্মসাতের ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা অর্থ বিতরণের ক্ষেত্রে বেকায়দায় পড়ায় এ জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা ও কার্যক্রম শুরু করেন। কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা আব্দুল আমিন জানান, গত সপ্তাহ খানেক আগে শিবিরের চিহ্নিত জঙ্গি নেতারা গোপন বৈঠক করে। কিন্তু ওই বৈঠকে কি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। নতুন রোহিঙ্গা দর্জি মোহাম্মদ আলম জানান, রোহিঙ্গাদের ত্রাণ ও যাকাতের টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যেই মূলত এ জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা শুরু করে নতুন ভাবে উদ্বেগ গ্রহন করেছে।
ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ শহিদুল হক ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, এখনো বিষয়টি নিয়ে পুলিশের নিকট কেউ অভিযোগ করেনি। তবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুতুপালং শরণার্থী শিবির ইনচার্জ এসএম সরওয়ার আলম এ সংগঠন আত্মপ্রকাশ সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে তিনি জানান। উখিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খাঁন বলেন, পুলিশ প্রতিদিন অপরাধীদের গ্রেফতারে রোহিঙ্গা শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে। এ জঙ্গি সংগঠন সম্পর্কে তার কাছে কোন তথ্য না থাকলেও তিনি বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন।


শেয়ার করুন