উখিয়া বন বিভাগে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার কাঠ

qশফিক আজাদ, উখিয়া

সরকারী কাঠ সম্পদ লুটপাটের স্বর্গরাজ্য উখিয়া ও ইনানী বন বিভাগের জব্দ করা প্রায় কোটি টাকার কাঠ সম্পদ খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বন বিভাগের কর্তা-ব্যক্তিরা বলেছে, এসব কাঠ নিলামে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু ডিপোতে বছরের পর বছর পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে এসব কাঠ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় সরকার প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে বলে সচেতন ব্যাক্তিরা দাবি করছেন।
উখিয়া বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ২টি রেঞ্জ অফিস ১১ টি বন বিটের আওতায় ৩৬ হাজার হেক্টর বন সম্পদ রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে রয়েছেন, ২জন রেঞ্জ কর্মকর্তা ৭ জন বিট কর্মকর্তা ও ২৩ জন বন প্রহরী। অথচ এসব কর্মস্থলে শতাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী থাকার কথা।
জানা গেছে, কর্মচারীর সল্পতার কারণে সংশ্লিষ্ট বিটের আওতাধিন সংরক্ষিত কাঠ সম্পদ অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। এ সুযোগে এলাকার এক শ্রেণীর কাঠ চোর সিন্ডিকেট হাতকরাতী শত শত শ্রমিক দিয়ে উখিয়া ও ইনানীর বৃহত্তর সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে দিন রাত বন সম্পদ লুটপাট করে সড়ক ও নৌপথে পাচার অব্যাহত রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়দের অভিযোগ কাঠ পাচারের সাথে কতিপয় বন বিট কর্মচারীর সংশ্লি¬ষ্টতা রয়েছে। মাঝে মধ্যে বন কর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে যৎসামান্য পরিমাণ চোরাই কাঠ আটক করলেও বৃহত্তর চোরাই কাঠের চালান অনায়াসে পাচার হয়ে যাচ্ছে। উদ্ধার করা এসব চোরাই কাঠ সময় মত নিলামে বিক্রি না হওয়ায় অধিকাংশ মূল্যবান কাঠ পঁেচ গলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, কক্সবাজার সদর বিট থেকে শুরু করে টেকনাফ রেঞ্জ পর্যন্ত যে সমস্ত উদ্ধারকৃত কাঠের ডিপো রয়েছে এসব কাঠ ৩ মাস অন্তর বিভাগীয় বন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে নিলাম দেওয়া হয়। তবে আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ার কারণে কিছু কিছু কাঠ ডিপোতে দীর্ঘ স্থায়ী থেকে যায়। উখিয়ার থাইংখালী বিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, কতিপয় কাঠ ব্যবসায়ী আক্রোশের বশবর্তী হয়ে প্রতিযোগীতা মূলক সরকারী নিলাম ডাকের চাইতে অতিরিক্ত মূল্যে কাঠের ডিপো খরিদ করে। পরবর্তীতে ঐ সব ব্যবসায়ীরা লোকসানের ভয়ে কাঠ সরবরাহ নেয় না। ফলে এভাবে কিছু কিছু কাঠ ডিপোতে পড়ে রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে।
সরজমিন, উখিয়ার রেঞ্জের সদর বিট, থাইংখালী বিট, উখিয়ার ঘাট বিট, মোচার খোলা বিট ঘুরে দেখা যায়, এসব বিটের ডিপোটের কোটি টাকার জব্দ করা কাঠ পরিত্যক্ত অবস্থায় বিন্ষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সচেতন ব্যক্তিরা বলেন, এসব কাঠ যথা সময়ে নিলাম দেওয়া হলে সরকারের প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব আদায় হতো সরকারের।


শেয়ার করুন