১৪ মাস পর টেস্ট, ১১ মাস পর ওয়ানডে বাংলাদেশের!

cricket_121199দ্বিস্তরীয় টেস্ট কাঠামো চালু করতে উঠেপড়ে লেগেছে আইসিসি। বিসিবি এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিলেও শেষ পর্যন্ত পেরে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে না। অবশ্য প্রস্তবটি পাস হওয়ার আগেই বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মতো দলকে দ্বিস্তর কাঠামোতে একরকম ফেলেই দিয়েছে আইসিসি। ফিউচার ট্যুর প্রজেক্ট (এফটিপি) দেখলেই সেটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

টেস্টে খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে গত বছরে সবচেয়ে কম টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ, ৫টি। চলতি বছরের সাত মাসে এখনও সাদা পোশাকে মাঠে নামতে পারেনি মুশফিকরা। চলতি মৌসুমেও বড়জোর মাত্র ৫টি টেস্ট খেলার সুযোগ পাবে টাইগাররা। সেখানে ভারত খেলবে ১৭টি , পাকিস্তান ১৫টি, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ১৪টি করে, নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০টি করে এবং শ্রীলংকা ৮টি টেস্ট।

দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে যদি অক্টোবরে ইংল্যান্ড এখানে আসে তাহলে ১৪ মাস পর টেস্ট খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত না আসলে তো এই গ্যাপ আরো লম্বা হবে। ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর টেস্ট খেলার ক্ষেত্রে এটাই সবচেয়ে লম্বা বিরতি।

২০০৬ সালের এপ্রিলের পর টানা ১৩ মাস টেস্টের বাইরে ছিল বাংলাদেশ।ঐ গ্যাপটা হয়েছিল মূলত ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে। এরপর ২০১১’র ডিসেম্বরের পর পরবর্তী টেস্টের জন্য ১১ মাস অপেক্ষা করতে হয় টাইগারদের।

বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট খেলেছে ২০১১‘র ৩ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকাতে।নভেম্বরে ইংল্যান্ড সিরিজটা হলে ঠিক ১৪ মাস ১৭ দিন পর টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ!শুধু টেস্ট কেন, ওয়ানতে ক্রিকেটেও দীর্ঘ দিন মাঠের বাইরে টাইগাররা।

সর্বশেষ গত বছরের ১১ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। এফটিপি অনুসারে টাইগারদের পরবর্তী ওয়ানডে ৭ অক্টোবর। মানে প্রায় ১১ মাস পর ওয়ানডে খেলতে যাচ্ছেন মাশরাফিরা। টেস্ট স্ট্যাটাস পাবার পর এই প্রথম এতো লম্বা সময় ওয়ানডে ক্রিকেটের বাইরে বাংলাদেশ।

ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে সাত নম্বরের দল হয়েও টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে গত বছর সবচেয়ে কম ওয়নডে খেলেছে বাংলাদেশ। এমনকি বাংলাদেশের বেশি ওয়ানডে খেলেছে জিম্বাবুয়ে। গতবছর বাংলাদেশ যেখানে ১৮টি ওয়ানডে খেলেছে, জিম্বাবুয়ে সেখানে ৩১টি।

গত ৬ মাসে একটি ওয়ানডে খেলারও সুযোগ হয়নি বাংলাদেশের। অথচ,এ সময়ে বাংলাদেশের চেয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের নিচে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলেছে ৭টি, পাকিস্তান ২টি এবং জিম্বাবুয়ে ৬টি ম্যাচ! ২০১৬-১৭ সাকুল্যে মাত্র ১০টি ওয়ানডে খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ ! যেখানে ইংল্যান্ড ২৪টি, নিউজিল্যান্ড ২০টি, অস্ট্রেলিয়া ১৬টি, পাকিস্তান ১৯টি, শ্রীলংকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ খেলবে ১৩টি করে ওয়ানডে।

ম্যাচ খেলার এ হারে অবশ্য চিন্তিত নয় বিসিবি। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন ঢাকা টাইমসকে বলেন,‘ আমরা সবার সঙ্গে খেলতে চাচ্ছি না। আমাদের নানা দিক চিন্তা ভাবনা করে এগুতে হচ্ছে। কার সঙ্গে খেললে আমাদের পয়েন্ট বাড়বে, কার র‌্যাঙ্কিং কত। এসব বিষয় আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক-দেড় মাস আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে সিরিজের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছিল। তারা নভেম্বরে সিরিজ খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা না করে দিয়েছি। কারণ ওই সময় বিপিএল। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট আমাদের জন্য। হ্যাঁ, সময়মতো ভারতে সিরিজ না হওয়ার কারণে একটা গ্যাপ তৈরি হয়েছে।’


শেয়ার করুন