স্মৃতি ইরানির সেই ভিডিও দেখলেন বিজেপির এমপি!

নিয়ম অনুযায়ী পুলিশের সিল করা ওই দোকানে এখন যে কোনো নাগরিকের প্রবেশ নিষেধ। কিন্তু কংগ্রেসের অভিযোগ, সে নিয়ম ভেঙে গোয়ার কালাঙ্গুটের ফ্যাব ইন্ডিয়ার বিপণিটিতে যাতায়াত করছেন বিজেপি নেতারা। আরটিএনএন
শুধু তা-ই নয়। যে ক্যামেরায় কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানির ট্রায়াল রুমের ছবি উঠেছিল, তার যাবতীয় ফুটেজও দেখছেন বিজেপিনেতা তথা কালাঙ্গুটের বিধায়ক মাইকেল লোবো। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ওই ফুটেজ এমন প্রমাণ নয় যা দেখালে তদন্তে কোনো অসুবিধা হতে পারে। সুতরাং নিয়মভঙ্গের অভিযোগ ধোপে টেকে না। দিন দুয়েকের জন্য গোয়ার বেড়াতে গিয়েছিলেন স্মৃতি। শুক্রবার কালাঙ্গুটের ফ্যাব ইন্ডিয়ার ওই দোকানে কেনাকাটা করতে যান। ট্রায়াল রুমের ভিতরে যখন তিনি পোশাক বদল করছিলেন, তখন নজর আসে এক সিসিটিভি ক্যামেরায় ছবি উঠছে তার। দ্রুত বেরিয়ে এসে স্বামী জুবিন ইরানিকে বিষয়টা জানান তিনি। ফোন করেন লোবোকেও। এফআইআর রুজু হয় কালাঙ্গুট থানায়। ওই সংস্থার চার কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে পরদিনই তাদের জামিন দেয় গোয়ার এক আদালত। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছিল, অভিযুক্তরা যে ওই ফুটেজ দেখেছেন, তার প্রাথমিক প্রমাণ রয়েছে। আরো বিস্তারিত জানার জন্য তাদের জেরা করা প্রয়োজন। ওই ভিডিও, ছবি অন্য কাউকে পাঠানো হয়েছিল কি না, তা জানতেও অভিযুক্তদের জেরা করা দরকার। কিন্তু তারপরও তাদের জামিন দেয় আদালত। এ দিনের জটিলতার শুরুটা অবশ্য অন্যত্র। অভিযোগ পাওয়ার পরেই দোকানটি সিল করে দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তার পরও সেখানে নিত্য যাতায়াত করছেন বিজেপি নেতারা। যা কিনা নিয়মবিরুদ্ধ বলে মনে করছে কংগ্রেস। শুধু তা-ই নয়, মাইকেল লোবো ওই ক্যামেরার যাবতীয় ফুটেজ দেখেছেন। প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘আমিও ওই দোকানের হার্ড ডিস্কগুলো দেখছি। ক্যামেরাটিকে কৌশল করে বসানো হয়েছিল ও তাতে তিন-চার মাস ধরে মহিলাদের পোশাক বদলের ছবি উঠেছে।’ কংগ্রেসের অভিযোগ, ওই ফুটেজ যা কিনা এখন তদন্তের অন্যতম প্রমাণ, তা কীভাবে এক নেতা-বিধায়ককে দেখানো হতে পারে? কংগ্রেস মুখপাত্র দুর্গাদাস কামাতের বয়ানে, ‘আমরা আশা করছি কোনো প্রমাণ বিকৃত করা হয়নি। কোনো ধরনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছাড়াই পুলিশকে এই তদন্ত করতে দেওয়া উচিত।’ গোয়ার আইজি সুনীল গর্গ অবশ্য নিয়মভঙ্গের অভিযোগ মানতে রাজি নন। তার যুক্তি, ‘কোন ধরনের প্রমাণ হাতে রয়েছে, তার উপরই সবটা নির্ভর করছে। যদি কোনো রক্তের দাগ থাকে কিংবা এমন কোনো প্রমাণ যেখানে আঙুলের ছাপ নষ্ট করার সম্ভাবনা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে কোনো নাগরিককে পুলিশ ঘটনাস্থলে যেতে দেয় না।’
এ ক্ষেত্রে যে ব্যাপারটা সে রকম নয়, তারই ইঙ্গিত দিয়েছেন সুনীল। বিতর্কের আরো অবকাশ রয়েছে। যেমন পুলিশের তরফে ওই ৪ জনকে অভিযুক্ত করা হলেও গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মীকান্ত পারসেকার বলেন, ‘স্মৃতির আগে ওই ক্যামেরায় যে মহিলাদের ছবি উঠেছিল, তাদের কারো পুরো দেহের ছবি ওঠেনি। ধরে নেওয়া যায়, সেদিনের ঘটনা পুরোটাই অনিচ্ছাকৃত।’ যদিও পুলিশেরই একটি সূত্রের দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কৌশল করে ক্যামেরাটির মুখ ট্রায়াল রুমের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অভিযুক্ত ৪ জনের মধ্যে একজনই এ কাজ করেছিল বলে দাবি পুলিশের।


শেয়ার করুন