সুখী দাম্পত্য জীবনে রাসূল সা. এর নির্দেশনা

hadis-400x404বিয়ের পর কে না চায় দাম্পত্য জীবন সুখী হোক। সবাই আশা করে সারাদিন সোহাগ আর খুনসুটিতে কেটে যাক। স্বামী চায় স্ত্রী তার আনুগত্য করুক। আর স্ত্রী চায় স্বামী যেন সবটুকু সোহাগ তার জন্যই জমিয়ে রাখেন। কিন্তু আজকাল এমন স্বপ্ন খুব কমই পূরণ হয়। এর কারণ সামাজিক অস্থিরতা আর নিজেদের আমলের কমতি।
রাসূল সা. এমন দম্পতিদের জন্য কিছু নির্দেশনা বয়ান করেছেন। যা মেনে চললে দাম্পত্য জীবন অনেকটাই ভালোবাসায় পূর্ণ হবে। আসবে অফুরন্ত শান্তি। ইসলাম স্বামীর জন্য স্ত্রী আর স্ত্রীর জন্য স্বামীকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। পড়–ন নিচের একটি হাদিস।
হজরত আবু হুরাইয়া রা. বর্ণনা করেন। রাসুল সা. বলেন, আমি যদি কোন ব্যক্তিকে অপর কোন ব্যক্তির সামনে সিজদা করার জন্য নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তার স্বামীকে সিজদা করার জন্য। [তিরমিযি]
দাম্পত্ব জীবন শান্তি ও প্রেমময় করতে রাসূল সা. স্ত্রী ও স্বামীকে আলাদা আলাদা মর্যাদায় উল্লেখ করেছেন। আসুন হাদিসগুলো পড়ি এবং সে অনুযায়ী আমলের চেষ্টা করি।
১। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. বর্ণনা করেন, রাসুল সা. বলেন, গোটা দুনিয়াই সম্পদে পরিপূর্ণ। এর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম সম্পদ হলো পূর্ণবতী স্ত্রী। [মুসলিম]
২। হজরত আবু হুরাইয়া রা. বলেন, রাসুল সা. ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তির চরিত্র ও আচরণ সবচাইতে উত্তম, ঈমাদের দৃষ্টিতে সে-ই পূর্ণাঙ্গ মুমিন। তোমাদের মধ্যে সেসব লোক উত্তম, যারা তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম। [তিরমিযি]
৩। হজরত উম্মে সালামা রা. এর বর্ণনা মতে, রাসুলে রা. বলেন, কোন স্ত্রী লোক যদি এমন অবস্থায় মারা যায় যে, তার স্বামী তার ওপর সন্তুষ্ট, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [তিরমিযি]
৪। হজরত আবু হুরাইরা রা. বলেন, রাসুল সা. ইরশাদ করেন, কোনো ব্যক্তি যদি তার বিছানায় স্ত্রীকে ডাকে; কিন্তু স্ত্রী তাতে সাড়া না দেয়ায় স্বামী তার উপর অসস্তুষ্ট হয়ে রাত কাটায়, তাহলে ফেরেশতারা ভোর পর্যন্ত তার (স্ত্রী) প্রতি অভিশাপ বর্ষণ করতে থাকে। [বুখারী ও মুসলিম]
৫। হজরত আবু হুরাইরা রা. বর্ণনা করেন, স্বামী বাড়িতে উপস্থিত থাকা অবস্থায় তার অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর পক্ষে (নফল) রোজা রাখা বৈধ নয়। তার অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তিকে তার ঘরে ঢোকার অনুমতি দেয়াও তার (স্ত্রীর) জন্য বৈধ নয়। [বুখারী ও মুসলিম]
হাদিসগুলো পড়লে বুঝতে পারি স্বামীর যেমন স্ত্রীর প্রতি কর্তব্য আছে, তেমনি স্ত্রীরও কর্তব্য তাকে সন্তুষ্ট রাখা। হাদিস অনুযায়ী এভাবে জীবন পরিচালিত করলে আপনার দাম্পত্য জীবন আশা করি প্রেমময় হবে। ভালোবাসায় হবে পূর্ণ। অশান্তি আপনাকে ছুঁতেও পারবে না। আসুন হাদিসগুলো মানার চেষ্টা করে দেখি। আল্লাহ সবাইকে তওফিক দিন। আমিন।


শেয়ার করুন