সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ আজ

প্রথম ম্যাচে ৭ রানের রুদ্ধশ্বাস জয়ের পর দ্বিতীয়টিতে ২ উইকেটে হার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এবারের ওয়ানডে সিরিজটা যেন বড্ড ভারী হয়ে গেছে বাংলাদেশের জন্য।

আর এর সবটুকু কৃতিত্বের দাবি রাখে আসগর স্ট্যানিকজাই অ্যান্ড কোং। দৃঢ়চেতা মনোবল আর লড়াকু মানসিকতায় ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছে আফগানরা। এ অবস্থায় স্বাগতিক বাংলাদেশের সামনে সিরিজ জয়ের সঙ্গে শততম জয়ের উত্সব করার সুযোগ।

শনিবার মিরপুরে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচ। কোনো অঘটন ঘটলে অবাক হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ ৩ ম্যাচের এ সিরিজে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান এখন ১-১-এর সমতায়। এক কথায় আজকের ম্যাচটা যেন সিরিজের ভাগ্য নির্ধারণী ম্যাচও।

সিরিজের শুরুতে এসব চিন্তার সুযোগ ছিল না মোটেও। কারণ ২০১৫ সালের পুরোটা সময় নিজেদের সাফল্যগাধা রচনা করেছিল মাশরাফি-মুশফিক-সাকিব-তামিমরা। ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে আসার পর এমন বাংলাদেশকে যেন আগে কোনো দিন দেখেনি ক্রিকেটবিশ্ব।

ঘরের মাঠে একে একে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ক্রিকেট পরাশক্তিকে মাটিতে নামিয়ে ছাড়ে টাইগাররা। কিন্তু দশ মাসের ব্যবধানে সেই দল এখন দুঃস্বপ্নের ঘেরাটোপে।

আফগানিস্তান সিরিজটাকে দেখা হচ্ছিল ইংল্যান্ড সিরিজের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে। যার কারণে বাংলাদেশের সফর সূচিতে আফগানিস্তান সিরিজ না থাকা সত্ত্বেও আইসিসির সহযোগী দেশটির সঙ্গে খেলতে আগ্রহ প্রকাশ করে বিসিবি। উদ্দেশ্য ছিল, ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল ঢাকায় আসার আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আবহমণ্ডলে মাশরাফি-সাকিবদের ফেরানোর। কিন্তু মাঠের লড়াই যে বলছে উল্টো কথা।

দুর্বল ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ছন্নছাড়া ফিল্ডিং। এ দুয়ের যোগফলে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে দলের বোলিং সামর্থ্যকেও। আফগানদের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে বড্ড নড়বড়ে ছিল বাংলাদেশের পারফরম্যান্স। কিন্তু দুই বছর আগেও নিজেদের পারফরম্যান্সের জোরেই আইসিসির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণের গৌরব অর্জন করে মাশরাফি মর্তুজারা।

আফগানদের বিপক্ষে স্নায়ুক্ষয়ী প্রথম ম্যাচে গুলি চলে যায় কানের পাশ দিয়ে। হারতে হারতে জিতে অধিনায়ক মাশরাফি বলেছিলেন, ‘এ জয় পাল্টে দেবে পুরো দলের শরীরী ভাষা।’ কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে অধিনায়কের সেই আত্মবিশ্বাসের যথোপযুক্ত মর্যাদা দিতে পারেননি দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা।

স্কোরবোর্ডে মাত্র ২০০ রান জমা করতে শক্ত হাতে ব্যাট চালাতে হয় অভিষিক্ত অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতসহ টেইএন্ডারদের। প্রথম দুটো ম্যাচে সবদিক থেকেই স্বাগতিকদের চেয়ে শ্রেয়তর ক্রিকেট খেলেছে সফরকারীরা। প্রথম ম্যাচে ২৬৫ রানের পর দ্বিতীয়টিতে স্বাগতিকদের ২০৮ রানে আটকে রাখে আফগান বোলাররা।

দুই ম্যাচেই রানের জন্য রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয়েছে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের। অফস্পিনারের পাশাপাশি একাধিক লেগস্পিনার খেলানোর চমত্কার পরিকল্পনা করেছেন আফগান কোচ লালচাঁদ রাজপুত। যার ফসল ঘরে তুলেছে সফরকারীরা।

তবে এতসব একসঙ্গে ভাবতে নারাজ অধিনায়ক মাশরাফি। হতাশার ম্যাচ ভুলে আজ সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় তার কণ্ঠে। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা সবাই হতাশ। একটা খারাপ দিন গেছে। যেকোনো খেলাতেই এমনটা হয়। এগুলো মাথায় নিয়ে নামলে খেলাটা আরো কঠিন হবে। তাই মানসিকভাবে নির্ভার থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’


শেয়ার করুন