সিনহা হত্যা মামলা: আদালতে বাদীর জেরা

ইসলাম মাহমুদঃ

মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০ টায় গতকাল সোমবার প্রথম দিনে সাক্ষ্য দেওয়া মামলার বাদী, মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসকে মামলার অন্যতম তিন আসামি পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও এএসআই লিটন মিয়ার আইনজীবীরা জেরা করেন। সকাল সোয়া ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত একটানা জেরা করার পর এক ঘণ্টা বিরতি দেওয়া হয়। এরপর বিকাল ৩টায় পুনরায় বাদীর জেরা শুরু করেন আসামির আইনজীবীর।
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের সময় পরিদর্শক লিয়াকত আলী টেকনাফ মডেল থানার অধীন বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রদীপ কুমার দাশ টেনাপ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও লিটন মিয়া বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে সহকারী-উপপরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তারা চাকরি থেকে বহিস্কৃত।
গতকাল সোমবার সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনে মামলার ১৫ আসামির মধ্যে ১২ জনের আইনজীবীরা বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসকে জেরা করেছিলেন।
আজ সকাল পৌনে ১০টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে ১৫ জন আসামিকে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।
পিপি ফরিদুল আলম বলেন, ‘গতকাল প্রথমদিনে শুধু মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের সাক্ষ্য নেয়া সম্ভব হয়েছে। যদিও গতকাল সমনপ্রাপ্ত আরও দুই জন সাক্ষী আদালতে হাজির ছিলেন। প্রথম দফায় তিন দিনের এ সাক্ষ্যগ্রহণ কাল বুধবার পর্যন্ত চলবে। এতে সাক্ষ্যদানের জন্য ১৫ জন আসামিকে আদালত সমন জারি করেছেন।’
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় ওই বছরের ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহ বাদীর এজাহার আমলে নিয়ে তা সরাসরি হত্যা মামলা হিসাবে রুজু করার জন্য টেকনাফ থানার ওসিকে আদেশ দেন। ওইদিন রাতেই টেকনাফ থানায় মামলাটি রুজু হয়। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত শুনানি শেষে মামলাটি তদন্তের জন্য র‍্যাবকে দায়িত্ব দেন।
গত বছর ১৩ ডিসেম্বর র‍্যাবের তদন্তকারী কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে আসামি করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
গত ২৭ জুন আদালত ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করে আদেশ দেন।
গত ২৬ থেকে ২৮ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য থাকলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে যায়। এই অবস্থায় গত ১৬ আগস্ট আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট তিন দিন সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য পুনরায় দিন ধার্য করে আদেশ দেন।


শেয়ার করুন