সাইবার অপরাধ দমনে আরেক আইন করছে সরকার

সিটিএন ডেস্ক:

RETAIL_CyberCrimeসাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আরও একটি নতুন আইন করেতে যাচ্ছে সরকার। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক জানিয়েছেন এই নতুন আইনের নাম হবে ডিজিটাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে এই আইনের খসড়া প্রনয়ণের কাজ চলছে। খসড়া প্রনয়ণের এই কমিটিতে আছেন আইটি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা জব্বার।
কি ধরনের অপরাধের বিচার এ আইনে করা হবে এ বিষয়ে বিবিসি বাংলার সাথে কথা বলেন মোস্তফা জব্বার। তিনি জানান, এটি এখন ড্রাফটিং টেবিলের ফার্ষ্ট ড্রাফট তৈরি করার জন্য আছে। এই আইনটি প্রনয়ণের প্রধানতম উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে ডিজিটাল সিকিউরিটি বিষয়ে কোন আইন নেই। যে আইন দিয়ে বাংলাদেশের ডিজিটাল অপরাধ বিষয়ক প্রসঙ্গগুলো ছিল সেগুলো ডিল করা হত সেটা হল আইসিটি অ্যাক্ট ২০০৬। আইসিটি অ্যাক্ট ২০০৬ হল আসলে ডিজিটাল সিগনেচার প্রবর্তনের আইন। এ আইনটিতে দু একটা বিষয় আছে যেগুলো কম্পিউটার সিষ্টেম নষ্ট করা, ৫৭ ধারা সহ কিছু ধারা ২০১৩ সালে বেশ কিছু পরিবর্তন করে এর শাস্তি বাড়ানো হয়েছে এবং অজামিনযোগ্য করা হয়েছে।
পূর্বের তথ্য প্রযুক্তি আইনের সাথে বর্তমান আইনের পার্থক্য কি সে বিষয়ে তিনি বলেন, ৫৭ ধারাতে শাস্তি ছিল ১০ বছর এখন সেটা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৪ বছর। নুন্যতম শাস্তি করা হয়েছে ৭ বছর । আগে কোন ধারা আমলযোগ্য ছিলনা এখন বেশ কয়েকটি ধারা আমলযোগ্য করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ধারাকে অজামিনযোগ্য করা হয়েছে। এই পার্থক্যগুলো ২০১৩ সালের সংশোধনীতে রয়েছে।
সাইবার অপরাধ তদন্তে বা অপরাধী সনাক্ত করবার মত যথেষ্ট প্রযুক্তি কি বাংলাদেশ আছে এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা জব্বার বলেন, সমগ্র বিষয় বিবেচনা করে আইন প্রনয়ণ করার জন্য খসরা তৈরি করার চেষ্টা করছি। যেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা হচ্ছে কেবলমাত্র ফেসবুকে লেখালেখি কিংবা ব্লগ এটিই আসলে ডিজিটাল অপরাধ নয়। অর্থনৈতিক বিষয় থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা পর্যন্ত পুরোটার সাথে এখন ডিজিটাল অপরাধ যুক্ত হয়ে গেছে। এটি প্রমাণ করা খুব কষ্টসাধ্য বিষয় হয়ে গেছে। এটা দুনিয়া জোড়া বিস্তৃত একটি অপরাধ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপরাধ করার জন্য একটা লোককে বাংলাদেশে থাকার দরকার নাই। সে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে এই অপরাধ করতে পারে। এ অবস্থাটা যে বিরাজ করে সেই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্যই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন।
তিনি আরও জানান, এসব অপরাধ প্রমাণ করা বড় বিষয়। ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডএ যারা আসে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা সবচেয়ে কঠিন। যে কেউ একটা ভুয়া একাউন্ট খুলতে পারে। মিথ্যা পরিচয় দিয়ে মেইল চালাচালি করার জন্য ফেসবুকে ঢুকে পরতে পারে। তার মিথ্যা পরিচয় দিয়ে মিথ্যা ছবি দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারে। এমনকি আমাদের দেশে নিবন্ধন ছাড়া সিম পাওয়া যায় সে সিম অপরাধের জন্য ব্যবহার করতে পারে। এ বিষয়গুলো আইনের আওতায় আনতে হবে। ফেসবুকে কেউ যদি একটা স্ট্যাটাস দিয়ে পরে সেটা মুছে ফেলে সেটা তাহলে প্রমাণ করব কি করে একটা স্ট্যাটাস ছিল। সে কারণে সাইবার অ্যাক্ট আইনে ডিজিটাল ফরেনস্যিক ল্যাব বলে একটা ল্যাব প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে।
আগের আইন সম্পর্কে অভিযোগ আছে, বলা হয় যে আইনে অপরাধ নির্দিষ্ট করা হয়নি। এই আইনে কি কোন রদবদল করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা জব্বার বলেন, এই আইনে সম্পূর্ণভাবে বিষয়গুলো স্পষ্ট করা আছে। এই আইনটি খসড়া প্রনয়ণের সময় ২১টি দেশে এই ধরনের আইন পর্যালোচনা করে দেখছি। এটি কেবলমাত্র প্রথম খসড়া হচ্ছে, এটি জনগণের সামনে উপস্থাপিত হবে, মানুষের মতামত নেওয়া হবে, স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেওয়া হবে। এরপর মন্ত্রণালয়ে যাবে তারপর মন্ত্রিসভা হয়ে সংসদে যাবে।


শেয়ার করুন