সবচেয়ে প্রাচীন কোরআনের খণ্ড বার্মিংহাম ভার্সিটিতে!

jakia..quran_75350সম্প্রতি বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় মিলেছে কোরআনের অতি প্রাচীন একটি খণ্ড। ধারণা করা হচ্ছে, এটি হতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন কোরআনের অংশবিশেষ।

ধারণা করা হচ্ছে হাতে লেখা কোরআনের ওই খণ্ডটি প্রায় এক হাজার ৩৭০ বছর পূর্বের। কয়েকশ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারে মুসলিমদের পবিত্র এই ধর্মগ্রন্থ সকলের অগোচরেই পড়ে ছিল।

হাতে লেখা কোরআনের এই খণ্ডটিকে ‘অবিস্মরণীয় আবিষ্কার’ উল্লেখ করে ব্রিটেনের পাঠাগার বিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ ঈসা ওয়ালি বলেন, ‘এটি মুসলিমদের আনন্দ উল্লাসের আরেকটি সুযোগ।’

বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগারে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য বইয়ের সঙ্গে রাখা ছিল হাতে লেখা এই ধর্মগ্রন্থটি। তবে এটি যে মহামূল্যবান এবং প্রাচীন কোরআনের একটি খণ্ড তা এতোদিন কারো জানা ছিল না।

সর্বপ্রথম একজন পিএইচডি গবেষকের নজর কাড়ে হাতে লেখা ওই ধর্মগ্রন্থটি। এরপর তিনি এর রেডিওকার্বন ডেটিং টেস্টের সিদ্ধান্ত নেন। টেস্টের ফলাফল ছিল রীতিমতো চমকপ্রদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সংগ্রহশালার পরিচালক সুশান ওররাল বলেন, ‘ওই গবেষক নিজেও চিন্তা করতে পারেন নি যে এটি এতো প্রাচীন। আমাদের কল্পনার চেয়েও অনেক বছরের পুরানো ধর্মগ্রন্থ এটি। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন কোরআনের খণ্ড এখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। যা নিঃসন্দেহে সারা বিশ্বকে অবাক করেছে।’

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি পরিচালিত রেডিওকার্বন ডেটিং টেস্টে দেখা যায়, ভেড়া বা ছাগলের চামড়ার উপর এটি লেখা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্রিস্ট এবং ইসলাম ধর্মের অধ্যাপক ডেভিড থমাস বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আরও কয়েক বছর আগে হাতে লেখা হয় এই খণ্ডটি।’

জানা যায়, ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী নবী মুহাম্মদ (সা.) খ্রিস্টাব্দ ৬১০ থেকে ৬৩২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ঐশ্বরীয়ভাবে নবুওয়্যাত প্রাপ্ত হয়েছেন। মুহাম্মদের কাছ থেকে শুনে শুনে ওই সময়ে লিখে রাখা হতো কোরআনের বিভিন্ন অংশ।

বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থমাস বলেন, ‘ডেটিং টেস্টের ফলাফল বলছে, এই কোরআনের খণ্ডটি হয়তো মুহাম্মদের কাছ থেকে শুনে কেউ লিখে রেখেছিলেন, এমন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’

থমাস আরও বলেন, এই কোরআন খণ্ডের অনেক অংশ পাথর, খেজুরের কাঁটা এবং উটের ঘাড়ের হাড় দিয়ে লেখা। এছাড়াও এই বইটির সর্বশেষ ধাপ লেখা হয়েছে ৬৫০ খ্রিস্টাব্দে। যা মুহাম্মদের মৃত্যুর মাত্র দুই দশক পরের ঘটনা।


শেয়ার করুন