সন্ত্রাসীরা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে

filefileগুলশানের হলি আর্টিসান বেকারি রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতের ঘটনা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির সঙ্কট তৈরি করবে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) তৎপরতা নিয়ে দেশ-বিদেশে বিতর্কের মুখে শুক্রবার (১ জুলাই) রাতে সন্ত্রাসী হামলার এ ঘটনা ঘটলো। এতে বাংলাদেশে আইএসের তৎপরতা নিয়ে চলমান বিতর্ক আরো জোরালো হবে বলেই মনে করছেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার পর আকস্মিকভাবে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি দিয়ে তলোয়ার ও পিস্তল উঁচিয়ে রেস্টুরেন্টে ঢুকে পড়ে একটি সন্ত্রাসী দল। ঢুকেই তারা গুলি ও বোমা ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এসময় বোমার আঘাতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। আহত হন আরো বেশ কয়েকজন। শনিবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে সেনা কমান্ডোর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনির অভিযানে ৬ সন্ত্রাসী নিহত হয় এবং রেস্টুরেন্টের ভেতর থেকে ২০ বিদেশির লাশ উদ্ধার করা হয়।

এই সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে বাংলামেইলের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিদেশি বিভিন্ন মাধ্যম থেকে বাংলাদেশ জঙ্গি সংগঠন আইএসের অস্থিত্ব রয়েছে বলে দাবি করলেও সরকারের পক্ষ থেকে তা নাকচ করা হয়। এর মধ্যে এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা বিতর্ক নতুন মোড় নিতে পারে।

সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জঙ্গিরা এ হামলা করে যা পেতে চেয়েছিল তা পেয়ে গেছে। ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে তাদের অবস্থান জানান দিতে সক্ষম হয়েছে ভালোভাবে। আমরা তাদের হোমগ্রোন জঙ্গি বলি আর যাই বলি এ ঘটনার পর আন্তর্জাতিকভাবে তা টিকছে না। তাই আমাদের সতর্কভাবে আগাতে হবে।’

জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আমাদের যেসব জায়গায় গোয়েন্দা তথ্যে ক্রটি-বিচ্যুতি আছে সেখানে বাইরের সহযোগিতা প্রয়োজনে চাওয়া যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেন এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

এম সাখাওয়াত হোসেন
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখানে আইএস কিংবা আল কায়েদা বিতর্ক করে কোনো লাভ নেই। এদের স্থানীয় জঙ্গি বলে অভিহিত করা হলেও সফলভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।

তিনি বলেন, যাইহোকে, আমরা একটা বিশাল প্রবলেম ফেস করছি। এটাকে আগে এত গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এখন এ নিয়ে কাজ করা দরকার।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইতালির নাগরিক তাভেল্লা সিজার, চলতি বছরের গোড়ার দিকে রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও, ব্লগার, লেখক, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, পীর, পুরোহিত, যাজক, ভিক্ষুদের চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এসব হত্যার পরপরই দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়ে আসছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস), যদিও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এ দাবি নাকচ করা হয়েছে।

তবে মার্কিন গণমাধ্যমে সিএনএন বাংলাদেশ সরকারের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই অপারেশনে অংশগ্রহণকারীদের যুদ্ধক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আছে বলে তাদের মনে হচ্ছে।

বাংলামেইল২৪ডটকম


শেয়ার করুন