সন্তানের সামনে মাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, উল্লাস

image_151516_0লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে সন্তানের সামনে মাকে বিবস্ত্র করে গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে বর্বর নির্যাতনের পর মাথা ন্যাড়া করে গলায় জুতার মালা পরিয়ে উল্লাস করার অভিযোগ উঠেছে এলাকার নুর হোসেন, তার ছেলে আজিজ ও মেয়ে হাসিনা বেগমের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী। জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

এলাকাবাসী জানায়, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বিগা গ্রামের হতদরিদ্র আবদুল কাদেরের স্ত্রী খুরশিদা বেগম নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান। গত কয়েকদিন ধরে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তার মাটি কাটার কাজ করেন তিনি। প্রতিদিনের মত মঙ্গলবারও রাস্তার মাটি কাটার কাজ করার জন্য সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান ওই নারী। ওইদিন দুপুর বারোটার দিকে খুরশিদা বেগমকে ডেকে ব্রক্ষপাড়া গ্রাম এলাকায় নিয়ে যায় ওই এলাকার মনা মিয়ার স্ত্রী হাসিনা বেগম। পরে মনা মিয়ার সঙ্গে নারী নির্মাণ শ্রমিক খুরশিদা প্রায়ই মোবাইল ফোনে কথা বলার অভিযোগ এনে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়।

খুরশিদা অভিযোগ অস্বীকার করলে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে টানা হেঁচড়া করে পেটানো শুরু হয়। এক পর্যায়ে হাসিনা বেগমের বাবা নুর হোসেন ও ভাই আজিজসহ তিনজন একত্রিত হয়ে ব্রক্ষপাড়া এলাকায় ১২ বছরের মাদ্রাসা পড়–য়া ছেলের সামনে মাকে (খুরশিদা বেগম) গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে বিবস্ত্র করে বর্বর নির্যাতন চালায়। পরে ব্লেড দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে গলায় জুতার মালায় পরিয়ে আনন্দ উল্লাস করে তারা। তার শোর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ওই নির্যাতিত নারীকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

বর্তমানে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই নারী। এ ঘটনার পর থেকে অপমান ও লজ্জায় ভেঙ্গে পড়েছেন তিনি। তার কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে ওই গ্রাম।

রাতে ওই নির্যাতিত নারী বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় নুর হোসেন, তার ছেলে আজিজ ও মেয়ে হাসিনা বেগমকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাসিনা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী। এ নিয়ে এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.তোতা মিয়া জানান, এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের অভিযান চলছে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।


শেয়ার করুন