সদকায়ে ফিতর যথাযথভাবে আদায় করুন

url27 ঈদের নামাজের আগেই সাদকায়ে ফিতর আদায় করা বাঞ্ছনীয়, যাতে ওয়াজিব আদায় হয়ে যায়। বিখ্যাত সাহাবি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, ‘রসুলুল্লাহ (স.) লোকদের ঈদের নামাজের আগে সদকায়ে ফিতর আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন’ (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)।
প্রিয়নবি (স.) আরো ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেক স্বাধীন, ক্রীতদাস, ছোট কিংবা বড়দের পক্ষ থেকে অর্ধ ‘সা’ গম বা এক ‘সা’ খেজুর ফিতরা হিসেবে আদায় কর’ (আবু দাউদ)।
সদকায়ে ফিতরের পরিমাণের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে মতভেদ দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে ‘সা’ একটা বিশেষ পরিমাণের ওজন। এই ‘সা’ দুই ধরনের, হিজাযি এবং ইরাকি। হিজাযি ‘সা’-এর ওজন ৫.৩৩ রিতিল এবং ইরাকি ‘সা’-এর ওজন ৮ রিতিল। আমাদের দেশের ওজনে এক রিতিল সমান আধাসের বা ৫০০ গ্রাম। সুতরাং এক হিজাযি ‘সা’ আমাদের দেশের ওজনে প্রায় পৌণে তিন সের বা দুই হাজার ৭৫০ গ্রাম। আর ইরাকি ‘সা’-এর ওজন প্রায় চার হাজার গ্রাম। এ হিসাবে হাদিসে উল্লিখিত খাদ্যশস্য বা এর মূল্য ‘সাদকায়ে ফিতর’ হিসেবে আদায় করতে হবে।
দেশের অন্যতম দ্বীনি প্রতিষ্ঠান আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়ার শরীয়া বোর্ডের পক্ষ থেকে এবারের ফিতরা ৭০ টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। মূলত ফিতরা খাদ্যশস্য দিয়ে প্রদান করাই উত্তম। আর যদি তা সম্ভব না হয় তবে মূল্য প্রদানের ক্ষেত্রে স্থানীয় বাজার দর হিসেবেই দিতে হবেÑ এটাই শরিয়তের ফয়সালা। মনে রাখতে হবে, সদকা-ফিতরা গরিবের হক। তাই সামর্থ্যবান ও ধনী মুসলমানরা ফিতরার পরিমাণ অর্ধ ‘সা’ গম বা আটার মূল্য ৬৫ বা ৭০ টাকা না দিয়ে এক ইরাকি ‘সা’ বা ৪০০০ গ্রাম বা চার কিলোগ্রাম খেজুরের মূল্য দেয়াই সমীচীন। এই ফিতরা আদায় করার মাধ্যমে একদিকে যেমন আল্লাহ রোজাদারদের ভুল-ত্র“টি মাফ করেন, তেমনি অন্যদিকে নিঃস্ব, দরিদ্র ও অসহায় মুমিন মুসলিমরা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হন এবং ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। তাই যেভাবে গরিব ও অসহায় লোকদের উপকার বেশি হয়, সেদিকেই আমাদের খেয়াল রাখা উচিত।


শেয়ার করুন