শবেকদরে জেগে উঠুন প্রাণের আনন্দে

kadarআল্লাহ সারাবছরের মধ্যে কিছু দিন এবং কিছু রাতকে অনন্য ফজিলত ও মর্যাদাদানে ধন্য করেছেন। তিনি যে রাতটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা দিয়েছেন, কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী তার নাম ‘লাইলাতুল কদর’ (ভাগ্য নির্ধারণী মর্যাদাবান রাত্রি), যা আমরা ‘শবেকদর’ বলে জানি।
এ রাত মুসলিম জীবনে এক অদ্বিতীয় ও অবিস্মরণীয় রাত। এ রাতে মুমিন-মুসলমানদের অন্তরাÍা আনন্দে উদ্বেলিত হয়। একদিকে মাহে রমজানের বিদায়ের করুণ সুর, অন্যদিকে কদর রাতের প্রাপ্তিÑ সত্য বলতে কিÑ একই সাথে আনন্দ-বেদনার অনুভূতি জাগানিয়া এ রকম মোক্ষম সুযোগ মুমিন-মুসলমানদের জীবনে খুব কমই আসে।
মহান আল্লাহ তার প্রিয় হাবিবের উসিলায় গুনাহগার বান্দাদের পরিশুদ্ধ, পবিত্র ও পাপমুক্ত করার যেসব দিনক্ষণ, শুভ সময় ও বিশেষ মুহূর্ত স্থির করে দিয়েছেন, শবেকদরের স্থান সবার ওপরে। আমাদের প্রিয়নবি (সা.) বছরের যে পাঁচটি রাতকে সর্বাধিক মর্যাদার অধিকারী বলে ঘোষণা করেছেন তš§ধ্যে ‘লাইলাতুল কদর’ বা ‘শবেকদর’ অন্যতম।
এ মহান রাতটির অবস্থান সম্পর্কে হাদিস শরীফে বিভিন্ন বর্ণনা দেখা যায়। অধিকাংশ বর্ণনা মোতাবেক, মাহে রমজানের শেষ দশকের যেকোনো বিজোড় রাতে ‘লাইলাতুল কদর’ লুকায়িত আছে। ইমামে আজম হজরত ইমাম আবু হানিফা (র.), সাহাবি হজরত উবাই কা’ব (রা.) প্রমুখের মতে, মাহে রমজানের ২৭তম রাতই হলো ‘লাইলাতুল কদর’। অধিকাংশ আউলিয়ায়ে কিরাম ও সালফে সালেহীন এ রাতকেই ‘লাইলাতুল কদর’রূপে পালন করেছেন। তবুও প্রিয়নবির (সা.) সুন্নাত অনুযায়ী মাহে রমজানের শেষ দশকে এর তালাশে ইবাদত করা উচিত।
পবিত্র কোরআনে এ রাতের গুরুত্ব বর্ণনা করে পুরো একটি সুরা অবতীর্ণ করা হয়েছে। মুহাদ্দিস ইবনে আবি হাতেম (রহ.) তাফসীরের ইমাম মুজাহিদ (রহ.) হতে বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লাহ (সা.) একদিন সাহাবায়ে কিরামদের বৈঠকে বনি ইসরাইলের এক মুজাদিদের কথা উল্লেখ করেন। যিনি এক হাজার মাস নিরবচ্ছিন্নভাবে আল্লাহর সাধনায় লিপ্ত ছিলেন এবং আল্লাহর পথে জিহাদে কাটিয়েছেন। একথা শুনে সাহাবায়ে কিরামের আফসোস হয় যে, এক হাজার মাস অর্থাৎ তিরাশি বছর চার মাস তো এ যুগের অনেকে জীবনও পায় না। তাই হযরত মুসা (আ)-এর উম্মত বনি ইসরাইলের মতো এতো অধিক সাওয়াব লাভের অবকাশও উম্মতে মুহাম্মদির নেই। সাহাবায়ে কিরামের এ আফসোস-অনুশোচনাকালে হযরত জিবরাইল (আ.) আল্লাহর পক্ষ হতে কুরআন মজিদের সুরা কদর নিয়ে হুজুর (সা.)-এর কাছে আগমন করেন।


শেয়ার করুন