রোহিঙ্গা ইস্যু : কক্সবাজারে বার্মিজ পণ্য বর্জনের হিড়িক

 ডেস্ক নিউজ  ;

দীর্ঘ সময় ধরে মিয়ানমারের পণ্যে সয়লাব বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা কক্সবাজার। এই পর্যটন নগরীর বেশির ভাগ মার্কেট ও দোকান গুলোতেই বেশ আগে থেকেই অধিপত্য বার্মিজ পণ্যের। ক্রেতাদের অতিরিক্ত চাহিদার কারণে বাজারে বার্মিজ প্রভাব তুঙ্গে থাকলেও, এবার ঘৃণার আগুনে পুড়তে শুরু করেছে বার্মিজ পণ্য।

সম্প্রতি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর দেশটির সেনাবাহিনীর দমন-নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞের কারণে সমালোচিত হয়েছে মিয়ানমার সরকার। পড়েছে বৈশ্বিক চাপ ও অবরোধের মুখে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে নিয়েও দেশটির উস্কানিমূলক আচরণে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ। বর্জন করছে মিয়ানমারের সব ধরনের পণ্য। যার প্রভাবে ইতোমধ্যেই বাজারে দেখা দিয়েছে, বার্মিজ পণ্য বর্জনের হিড়িক।

সম্প্রতি কক্সবাজারে বার্মিজ মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট ঘুরে দেখা যায় বার্মিজ পণ্যে তেমন কোন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ক্রেতারা। উপড়ন্ত বিক্রেতাকে পরামর্শ দিচ্ছেন এখন থেকে দোকানে আর বার্মিজ পণ্য না রাখতে।

এদিকে কক্সবাজারের সুগন্ধা বিচ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,পর্যটক আকর্শনীয় অনেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে আছে অনেক দোকানি। একটি দোকানে বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ টিম প্রবেশ করে বার্মিজ পণ্যের বর্তমান চাহিদা সম্পর্কে জানতে চাইলে, দোকানি ইসমাইল হোসেন বলেন, আগে বার্মিজ আচারের জায়গায় বাংলাদেশি পণ্য দিলেই ক্রেতারা ক্ষুব্ধ হয় যেত। বার্মিজ ছাড়া অন্য কিছুর তেমন আগ্রহ ছিল না, কিন্তু এখন দেখছি উল্টো চিত্র! বার্মিজ পণ্য কেউ নিতেই চায় না।

‘অনেক বাংলাদেশি কোম্পানি প্যাকেটের গায়ে মেডইন মিয়ানমার লিখে সেখানের জল ছাপ দিয়ে পণ্য বের করতো। ক্রেতা ধরার জন্য। কিন্তু এখনো তাঁরা বৈধ ভাবেই দেশীয় পণ্য বাঁজারে ছাড়ছে। বিক্রিও হচ্ছে ভাল।’ এমন তথ্যও জানান ইসমাইল হোসেন।

অপরদিকে, মিয়ানমারে গণহত্যার প্রতিবাধে দেশটির উপর অর্থনৈতিক অবরোধের প্রথম ধাপ হিসেবে বাংলাদেশে দেশটির সকল ধরনের পণ্য বর্জনে দেশের সকল নাগরিকের প্রতি আহবান জানিয়েছিল গণজাগরণ মঞ্চসহ বেশ কিছু সামাজিক সংগঠন ও বুদ্ধিজীবী প্যানেল।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর বর্বর গণহত্যা শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা। জাতিসংঘের তথ্য মতে হত্যা করে প্রায় হাজারের অধিক সাধারণ মানুষ। পুড়িয়ে দেওয়া হয় বাড়ি ঘর। দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয় ৫ লাখ রোহিঙ্গাকে। মানবিক কারণে তাদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। একই সাথে সীমান্তে মাইন পুঁতে রাখা, সীমান্ত অমান্যসহ বাংলাদেশের সাথে বেশ কিছু উস্কানি মূলক আচরণ করে মিয়ানমার। সরকার এর প্রতিবাদ জানালেও বিষয়টি সাধারণ মানুষ ভাল ভাবে নেয় নি। যার প্রভাব পড়তে শুরু করে বাজারে। বার্মিজ পণ্য বর্জনের হিড়িক বাংলাদেশে।


শেয়ার করুন