কেন্দ্রীয় টিম কক্সবাজারে

রোহিঙ্গাদের মাঝে বিএনপির ত্রাণ বুধবার

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মীর্জা আব্বাস বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকলে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি অনেক আগেই কন্ট্রোল করা যেতো। শহীদ জিয়াউর রহমানের আমলেও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি কন্ট্রোল করা গিয়েছিল কূটনৈতিক তৎপরতায়। ওই সময় এক চুক্তির মাধ্যমে দুই লাখ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছিল। খালেদা সরকার আমলেও কূটনৈতিক তৎপরতায় কয়েকদফা শরণার্থী হয়ে আসা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো গিয়েছিল। তারপর আর কোন সরকার এই কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারেনি।’

তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ নিয়ে আসা বিএনপির প্রতিনিধি দলের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই দলটি বুধবার উখিয়া ও টেকনাফে নতুন করে শরণার্থী হয়ে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিএনপির পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করবেন।

মীর্জা আব্বাস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সরকার চাইলে কূটনৈতিক তৎপরতায় অনেক আগেই রোহিঙ্গা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারতো। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। অথচ বিএনপি রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার বাহিনীর নির্যাতন শুরু হওয়ার পর থেকেই এব্যাপারে সোচ্চার হয়েছে। তবে সরকারের বোধোদয় হয়েছে অনেক পরে।’

তাঁর মতে, বাংলাদেশ সরকারের গর্জনটা বাংলাদেশের মতো ছিল না। বাংলাদেশের মতো গর্জন দিতে পারলে এভাবে রোহিঙ্গা নির্যাতন হতো না।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে ত্রাণ দিতে এসেছি। রাজনীতি করতে আসিনি।’

ত্রাণ বিতরণে তিনি সরকারের সর্বাত্বক সহযোগিতা কামনা করেন বলেন, ‘বিএনপি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাধ্যমতো ত্রাণ বিতরণ করবে। এই ত্রাণ যেমন বেশিও না, তেমনি আবারও কমও না।’

বিএনপির ত্রাণ কার্যক্রম একদিনে শেষ হবে না উল্লেখ করে মীর্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপি সাধ্যমতো ত্রাণ বিতরণ করবে এবং তা অব্যাহত থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘কী জঘন্য ভাবে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও গণহত্যা চালানো হয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। শুধু মুসলমান হিসেবে বলছি না, অন্য কোন জাতিগোষ্টী হলেও আমরা একই কথা বলতাম।’

তিনি মনে করেন, মিয়ানমার বাহিনী রোহিঙ্গাদের নির্যাতন শুরুর পর থেকে যদি তাদের বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হতো, এবং শক্ত কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হতো তাহলে রোহিঙ্গাদের এভাবে গণহারে হত্যা ও নির্যাতন করতে পারতো না মিয়ানমার।

তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘বিএনপি ঢাকায় বসে গর্জন করার যে অভিযোগ সরকার করছে তা সত্য নয়। বরং বিএনপি অনেক আগেই শরণার্থী শিবির গুলোতে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে। অথচ সরকার প্রধানই অনেক পরে কক্সবাজার এসেছেন।’

তিনি প্রশ্ন তুলেন, যে মোদী রোহিঙ্গা নির্যাতন শুরু হওয়ার পর মিয়ানমারে গিয়ে সেনাবাহিনী গণহত্যাকে সমর্থন দিয়ে আসেন তাঁর কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার কিভাবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থন আশা করে!

ভারতের মোদী সরকারের কাছ থেকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের সমর্থন প্রত্যাশাকে ‘নতজানু কূটনীতি’ বলেও মন্তব্য করেন।

কক্সবাজার শহরের একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান, দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুুদু ও ডা. একেএম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী প্রমূখ।

এদিকে বিএনপির এই প্রতিনিধি দলটি বেলা আড়াইটার ঢাকা থেকে যাত্রা করার কথা থাকলেও প্রায় আড়াই ঘন্টা পর বিকেল ৫টার দিকে তাঁরা বেসরকারি ফ্লাইটে কক্সবাজারের দিকে যাত্রা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাথে দেখা করতে কক্সবাজার সফরে থাকায় কক্সবাজারগামি সব ফ্লাইট দীর্ঘ সময় বিরত করা হয়।


শেয়ার করুন