রাজনীতির নামে নাশকতাকারীরা খুনি: বেনজীর আহমেদ

image_115003_0নতুন বার্তা ডটকম:
ঢাকা: দেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ বলে মন্তব্য করলেও এর কারণ ব্যাখ্যা করবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেছেন, রাজনীতির নামে যারা এসব নাশকতার পেছনে রয়েছেন তারা ‘খুনি’ এবং তাদের বিরুদ্ধে ‘আলাদা করে’ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত ৫ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে সারাদেশে চলাচলকারী যানবাহনে হামলা ও আগুন দেয়া শুরু হয়েছে। এসব ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে জড়িতদের ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। শনিবার সকালে র‌্যাব সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলন করে এ পুরস্কার ঘোষণা করেন বেনজীর আহমেদ।
খালেদা জিয়ার বক্তব্যের পর দেশে এ পরিস্থিতি শুরু হয়েছে। এটি রাজনৈতিক সমস্যা। আপনি এটিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলছেন কেন? এটি রাজনৈতিক সমস্যা কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বেনজীর বলেন, “এ প্রশ্নের উত্তর আমি দেব না। গাড়িতে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যা করলে সেটা কি রাজনীতি হবে? দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এটি ফৌজদারি অপরাধ।”
তিনি বলেন, “কেউ এদেশে ফৌজদারী অপরাধ করতে পারবে না। কারণ আমাদের দেশ সভ্য দেশ, গণতান্ত্রিক দেশ। এ দেশে আইনের শাসন রয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষের, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা দেব। সেকারণে আমরা মনে করি যারা এ কাজটি করছেন তারা খুনি, হত্যাকারী, তারা সন্ত্রাসী।”
“তাদের আলাদা করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ” বলেও উল্লেখ করেন বেনজীর।
সম্প্রতি রংপুরে একটি অনুষ্ঠানে র‌্যাব মহাপরিচালকের বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচিত হয়। ওই বক্তব্যের পর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নির্বাচন কখন হবে-না হবে সে ব্যাপারে র‌্যাব মহাপরিচালক মন্তব্য করেছেন। ওই অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কটূক্তি করে পুলিশের আইজিপি ও র‌্যাব মহাপরিচালক ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক এজেন্ডার পক্ষেই সাফাই গেয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে র‌্যাব মহাপরিচালকস বলেন, “রাজনৈতিক জোট থেকে কেন এমন কথা বলা হয়েছে জানি না। এটি আমাদের হতাশ করেছে। আমরা স্তম্ভিত।”
তিনি বলেন, “খুন হত্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার আইনসম্মত অধিকার রয়েছে সাধারণ মানুষের। এদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করছি।”
চলমান সহিংসতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যর্থ হচ্ছে কেন- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমার মনে হয় তারা ফেইল করেনি, পর্যায়ক্রমে এটি কমে এসেছে। মিডিয়া, সুশীল সমাজ, রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আশা করছি আমরা সফল হবো।”
সহিংসতা বন্ধের নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুপ্ত হত্যা চালাচ্ছে- বিরোধী দলগুলোর এমন মন্তব্যে র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, “এগুলো পলিটিক্যাল কথাবার্তা। কিছু লোক সব পলিটিসাইজ করতে পছন্দ করেন।…যখন ফ্রান্সে দুই ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এনকাউন্টারে মারা গেল, তারা খুব বিপজ্জনক ব্যক্তি ছিল। সেখানেতো কেউ গুপ্ত হত্যার কথা বলেনি। তারা এগুলো লিখে জাতিসংঘে পাঠায় না। তারা সেগুলো বিকৃতি করে মানবাধিকার সংগঠনে পাঠায় না।…ফ্রান্সে তো বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে গিয়ে কেউ কান্নাকাটি করে না। মানবাধিকারের সিল কি শুধু বাংলাদেশে লেগেছে?”

শেয়ার করুন