যে কোনো মুহূর্তে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ!

122286_1সিটিএন ডেস্ক :

মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই লাগতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সিরিয়ার আকাশে মুহুর্মুহু উড়ছে দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার যুদ্ধবিমান।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট মাত্র একদিনে আইসিসের বিরুদ্ধে ২৪টি হামলা চালিয়েছে।

রাশিয়া চালিয়েছে ৫৫টি টার্গেটে হামলা। কখনো কখনো রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান একটি থেকে আরেকটি মাত্র ২০ মাইল দূরত্বে অবস্থান করছে।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে গতিতে এসব যুদ্ধবিমান ছোটে তাতে মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে দুটি বিমানের সংঘাত ঘটার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে।

যদি তাই ঘটে তাহলে ওই ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই শুরু হয়ে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। অন্যদিকে বৃটেনের আকাশসীমা রক্ষা ও ইউক্রেনকে সহায়তা দিতে বৃটেন ১০০ সেনা পাঠাচ্ছে পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লিথুয়ানিয়া ও লাতভিয়ায়।

কয়েক দিন আগে তুরস্ক অভিযোগ করেছে, রাশিয়ার যুদ্ধবিমান তুরস্কের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। সব মিলিয়ে এক তালগোল পাকানো অবস্থা বিরাজ করছে।

এমন সময়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগার জন্য প্রয়োজন শুধু বারুদে একটুখানি উত্তাপ। তা শুরু হতে পারে সিরিয়ার আকাশ সীমা থেকে। পশ্চিমা সামরিক বিশেষজ্ঞরা এমনই সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন।

এ খবর দিয়ে অনলাইন ডেইলি মিরর বলেছে, সিরিয়ার আকাশ ক্রমশ যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র আর নানা সামরিক অস্ত্রে সজ্জিত যুদ্ধযানে সয়লাব।

সামরিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে কোনো সময় এসব যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ড্রোনের টক্কর লাগতে পারে।

এক সামরিক বিশেষজ্ঞ বলেন, এক আকাশসীমায় এত জটিল একটি পরিস্থিতি অসম্ভব ব্যাপার। সিরিয়ার আকাশসীমায় সামরিক যানের উপস্থিতি দেখুন তা আসলেই ভীতিকর।

যেকোন সময় ভুল করে একটি যুদ্ধবিমানকে গুলি করা হতে পারে। যদি তাই করা হয় তাহলে ভয়াবহ এক পরিণতি নেমে আসবে।

এর অর্থ হলো কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তেজনাকর হয়ে উঠবে। আমরা পৌঁছে যাবো একটি যুদ্ধের খুব কিনারে।

সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমানগুলো অনেক সময় তাদের লক্ষ্যবস্তুকে ত্যাগ করে ফিরে যাচ্ছে। এর কারণ, কাছাকাছি অবস্থান করে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান।

তার সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের এমন কৌশল। কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কমান্ডের রাডারে যেসব ছবি ধরা পড়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের কত কাছে চলে যাচ্ছে রাশিয়ার এসইউ-৩৪ যুদ্ধবিমান।

সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান অভিযানবিষয়ক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল চার্লস ব্রাউন। তিনি এমন অবস্থাকে ভীতিকর বলেছেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বিমানগুলো এত কাছাকাছি চলে যায় যে, তাদের মধ্যে দূরত্ব অনেক কম থাকে। এতে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ঘটে যেতে পারে সর্বনাশা এক ঘটনা।

সিরিয়ার উপকূলে অবস্থান করছে চীনের যুদ্ধবিমান বহনকারী জাচাচ লিয়ানোনিং। জে-১৫ যুদ্ধবিমানগুলো যাতে টার্গেটে হামলা চালাতে পারে তার জন্য এ ব্যবস্থা।

যদি এখানে এক সেকেন্ডের একটি ভুল হয় তাহলে পরিস্থিতি হয়ে উঠবে আরো উত্তেজনাকর। হেনরি জ্যাকসন সোসাইটির রাশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ অ্যানড্রু ফক্সঅল বলেন, একটি ভুল কূটনৈতিক পর্যায়ে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনবে।

কিন্তু তার চেয়েও ভয়ের বিষয় আছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সমর্থক সেনাদের বিরুদ্ধে আইএসবিরোধী জোট যে লড়াই করছে তা সব মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

ড. ফক্সঅল বলেন, ক্রেমলিন প্রাথমিকভাবে সিরিয়ায় রাশিয়াপন্থি শাসকগোষ্ঠী গড়ে তোলার ইচ্ছা পোষণ করে। এক্ষেত্রে চীনের হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরো জটিল করেছে।

আশঙ্কা রয়েছে তারা সিরিয়ার বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালাতে পারে আইএসের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর কথা বলে। উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, রাশিয়া ওই অঞ্চলে তার প্রভাব বিস্তৃত করতে চায়।

বিশেষ করে ইরাক ও ইরানের শিয়া মুসলিমদের মাঝে। সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে রাশিয়ার বিমান হামলা ইরাক সমর্থন করে বলে মনে হচ্ছে।

এক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পরিকল্পনা কাজ দিয়েছে ভাল। এরই মধ্যে রাশিয়ার বিমানগুলোকে নিজেদের আকাশসীমায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে ইরান।

মধ্যপ্রাচ্যে এই ইরান ও ইরাক প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হলেও এক্ষেত্রে তারা একজোট। এখন উত্তেজনা আরো বেড়েছে একটি রিপোর্টের কারণে। তাতে বলা হয়েছে, আইসিসের নেতা আবু বকর আল বাগদাদীকে অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

তাদের গাড়িবহরে ইরাকি বিমানবাহিনী বোমা হামলা চালানোর পর এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওদিকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পশ্চিমারা যে লড়াই করছে তা নিয়ে পশ্চিমাদের সমালোচনা করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন।

তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও তাতে কোনো ফল আসছে না। তবে ন্যাটোর সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল জাপ ডি হুপ শফার চ্যানেল ৪ নিউজকে বলেছেন, আমার মনে হয় পুতিন তার নিজের ফাঁদে নিজেই পড়বেন।


শেয়ার করুন