ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষা অফিসের অবহেলায় উখিয়ার ৪১৭ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি বঞ্চিত

শফিক আজাদ, উখিয়া৥

স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে প্রায় ২ বছর ধরে ৪১৭ জন ছাত্র/ছাত্রী উপবৃত্তি পাওয়া থেকে বঞ্চিত কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার দুর্গম পাহাড়ী জনপদের অজপাড়া গায়ে অবস্থিত রুমখাঁ বড়বিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। হতদরিদ্র গরীব ও মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীরা ২ বছর যাবত উপবৃত্তি না পাওয়ার ঘটনায় এলাকার শিক্ষানুরাগীসহ অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরকার ঝরে পড়া রোধ ও শতভাগ  শিশুদের স্কুলমুখি করতে শিক্ষা ক্ষেত্রে জোরালো পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করে আসলেও সদ্য সরকারীকৃত বড়বিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বেলায় এ নিয়মনীতি পালন করা হচ্ছে না। সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণ শিক্ষামন্ত্রী মোঃ মুস্তাফিজুর রহমান ফিজার ছাত্র/ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদানের কঠোর নির্দেশ থাকলেও বিভিন্ন জটিলতা কারনে এ বিদ্যালয়ে মন্ত্রীর নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে না। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ৪১৭ জন ছাত্র/ছাত্রীর পড়ালেখার মান ধরে মাত্র ৩শিক্ষক বিগত কয়েক বছর যাবত আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। যার ফলশ্র“তিতে গত ৩০ডিসেম্বর ঘোষিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় উপজেলা পর্যায়ে শতভাগ কৃতকার্য হওয়ার গৌরব অর্জন করে বিদ্যালয়টি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসের আন্তরিকতার অভাব ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে ২ ভাইয়ের (কাশেম ও হাশেম) দ্বন্দ্বে স্কুলটির ছেলে/মেয়েদের পড়ালেখার ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারী বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে শুরু করে উপবৃত্তি বঞ্চিত এতদ্বাঞ্চলের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা। বিগত ১ বছর ধরে কতিপয় সভাপতি নামধারী ও  স্থানীয় গ্রাম্য ডাঃ মোহাম্মদ কাশেমের নানামূখি ষড়যন্ত্রের কারনে স্কুলটির ক্ষেত্রে এ করুণ পরিনতি সৃষ্টি হয়েছে একাধিক শিক্ষক/শিক্ষিকা অভিযোগ করে জানায়।
২০১৩ থেকে ২০১৪সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত রুমখাঁ বড়বিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪১৭জন ছাত্র/ছাত্রীর প্রায় ৭লক্ষ টাকা ২ বছর শিক্ষার্থীরা উত্তোলন করতে না পারায় ছাত্র/ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয়ের জৈষ্ঠ্য প্রধান শিক্ষিকা মমতাজ বেগম জানান, নানামূখি ষড়যন্ত্রের মাঝে তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ে বিদ্যালয়টি একাই টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার একটি স্বার্থন্বেষী ও ষড়যন্ত্রকারী মহল বিদ্যালয়ের সুনাম বিনষ্টের পাশাপাশি ছাত্র/ছাত্রীদের উপবৃত্তি ও তার বেতন-ভাতা ও বন্ধ রাখেন। ওই মহলটি বিদ্যালয়টি ধ্বংস করার জন্য কতিপয় দু®কৃতিকারীদের লেলিয়ে দিয়ে বিভিন্ন ভাবে তাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে ও অভিযোগ করেন।
ওই এলাকার একাধিক শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি পরিচয়দানকারী ডাঃ কাশেমের মেয়েকে ওই বিদ্যালয়ে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের এক কর্মচারী ২০১২সালে ২লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনার জের ধরে ওই কাশেম বিদ্যালয় নিয়ে এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার সাহাব উদ্দিন বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্কুলটির উপবৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে আন্তরিকতা থাকলেও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সৃষ্ট দ্বন্দ্বে ছাত্র/ছাত্রীদের তা দেওয়া সম্ভব হয়নি।


শেয়ার করুন