ম্যাথুউয়ের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হাইতি, ৩৩৯ জনের প্রাণহানি

হাইতিতে হ্যারিকেন ম্যাথিও এর আঘাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩৩৯ জনের প্রাণহানির ঘটেছে। প্রধান নগরী জেরেমির ৮০ শতাংশ ভবন পিশে ফেলেছে প্রলয়ংকারী এই ঘূর্ণিঝড়। এছাড়া সুড নগরীর অন্তত ৩০ হাজার বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি চতুর্থ মাত্রার ঝড়ে রূপ নিয়ে ‍বাহামার উপরে ঘুরছিলো। ক্যারিবিয়ান সাগরে গত ১ দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এ ঝড়টি ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার দিকে।

হারিকেনের সম্ভাব্য আঘাত সম্পর্কে ইতোমধ্যে ফ্লোরিডার নাগরিকদের সতর্কতার পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নির্দেশনা দিয়েছে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।

মার্কিন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ক্যাটাগরি-৪ ঝড়টি ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার বেগে ফ্লোরিডার দিকে ধেয়ে আসছে। ক্যারিবিয়ান সাগরে উৎপন্ন হারিকেন ‘ম্যাথিউ’ গত সপ্তাহজুড়ে শক্তি সঞ্চয় করতে থাকে। ঝড়টি এতো ধীরে ধীরে এগুতে থাকে যে তখন এর শক্তি নিয়ে সবার মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

হাইতির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলীয় জেরেমি শহরের ছবিতে ঝড়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়িঘর দেখা গেছে। চিকিৎসাকেন্দ্র এবং খাবারের আড়তগুলোও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা গেছে। শহরের অধিকাংশ এলাকাই ঝড়ে পুরোপুরি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ম্যাথিউয়ের তাণ্ডবের কারণে হাইতির বহু প্রতীক্ষিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড়টি ঘন্টায় ২৩০ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে কিউবা ও হাইতির ওপর দিয়ে বয়ে যায়। গমনপথে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতে ওই অঞ্চলের শহরগুলো ভাসিয়ে দিয়ে যায়। এতে গবাদিপশু, ফসল ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

ঘূর্ণিঝড়টি হাইতির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গমনপথের সবকিছু ধ্বংস করে এগিয়ে গেছে। ম্যাথিউয়ের তাণ্ডবে উপকূলীয় এলাকার সড়কগুলোতে নৌকাসহ ধ্বংস হওয়া বিভিন্ন জিনিসের স্তূপ জমে গেছে। সাগর থেকে উঠে আসা পানিতে আবাসিক এলাকাগুলো ডুবে গেছে।

জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ওই প্রদেশে সাত লাখেরও বেশি মানুষের বাস বলে জানিয়েছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে প্রায় ১১ হাজার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

এই প্রদেশের জেরেমি শহরের মানুষেরা খোলা আকাশের নিচে দিনযাপন করছে। কারণ শহরের অধিকাংশ বাড়ি ধসে পড়েছে নয়তো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির দক্ষিণ উপকূলের অধিকাংশ শহরে একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে বিভিন্ন খবরে জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল থেকে ১৫ লাখ মানুষকে সরে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। উপকূলের বাসিন্দাদের ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য সরাসরি আঘাত মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকার জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের গভর্নর রিক স্কট।

 


শেয়ার করুন