‘মামলাবাজ’ জোলেখার মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলার প্রতিবাদে থিমছড়িবাসির মানববন্ধন

ডেস্ক নিউজঃ

জমি নিয়ে পারিবারিক বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ‘চাঁদাবাজি’র মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের থিমছড়ি এলাকার মসজিদ কমিটির সভাপতিসহ গণ্যমান্য ১৫ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন সর্বস্তরের এলাকাবাসি। ওই মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, চাঁদাবাজি তো দূরের কথা, বাদীর সাথে আসামিদের কারও কোন ঘটনা হয়েছে কিংবা দেখা হয়েছে এমন প্রমাণ যদি কেউ দিতে পারে আসামিরা সবাই স্বেচ্ছাকারাবরণ করতে রাজি আছেন।

গর্জনিয়ার পশ্চিম থিমছড়ি এলাকার জুলেখা খানম নামের ‘মামলাবাজ’ এক মহিলা এই মামলাটি করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই মহিলা অতীতেও বহু মানুষকে মামলায় ফাঁসিয়ে সুবিধা আদায় করেছেন।

শুক্রবার (৩০ জুন) জুমার নামাজের পর থিমছড়ি বাজারে এই মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে সর্বস্তরের নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ওই ‘সাজানো’ মামলার আসামি থিমছড়ি মসজিদ কমিটির সভাপতি ব্যাংকার নুরুল ইসলাম ও এলাকার স্বনামধন্য ব্যক্তি শফিউল আলম। এছাড়াও লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন থিমছড়ি মসজিদ পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ জাকারিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, মামলার আর্জিতে উল্লেখ করা ঘটনা দিন ২৭ মে ওই এলাকায় ‘চাঁদাবাজি’ ও ‘অস্ত্রের মহড়া’র কোন ঘটনাই ঘটেনি। যেখানে ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে সেখান থেকে বাজার দেখা যায়। বাজারের কোন লোকই এ ধরণের কোন চোখে দেখেননি কিংবা কারও কাছে শুনেননি। তাছাড়াও মামলায় ৫ জন স্বাক্ষী দেয়া হয়েছে, যারা সকলেই বাদী জুলেখা খানমের স্বামী, আপন ভাই ও রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই মামলার বিবাদীগণ তাদের পুর্বপুরুষের সম্পত্তি ফিরে পেতে কক্সবাজার সহকারী জজ আদালতে মামলা করেছেন। ওই মামলার ২৯ জন বিবাদীর মধ্যে জুলেখা খানম ২১ নম্বর বিবাদী। সেই মামলায় কোন ধরণের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পেরে মিথ্যা কল্পকাহিনী সাজিয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করছে।

তাদের মতে, জুলেখা খানম তার ‘চাঁদাবাজি’ মামলায় যে জমির কথা উল্লেখ করেছেন সেই জমির সাথে বিবাদীদের জমির কোন সম্পর্ক নেই। বরং ভিন্ন খতিয়ান, ভিন্ন দাগ। বাদী আর্জিতে বলেছেন- ৩২২৫ সৃজিত বিএস খতিয়ানের ১৭২৮, ১৭২৯ ও ১৭২৩ দাগের দশমিক ২০ একর জমি। অথচ বিবাদীদের সাথে তার ও তাদের বিরোধীয় জমি হচ্ছে বিএস ১৬৮৬ ও ১৬৮৭ খতিয়ানের ৪ দশমিক ১৯ একর জমি।

ইতোপূর্বে জুলেখা খানমের আপন দুই ভাই জিয়াউল করিম ও জসিম উদ্দিন ১৬৮৬ ও ১৬৮৭ খতিয়ানের বিরোধী জমি নিয়ে দুটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন, যা বর্তমানে রামু সহকারী জজ আদালতে চলমান রয়েছে।

‘মামলাবাজ’ জোলেখার মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলার প্রতিবাদে থিমছড়িবাসির মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জুলেখা খানম মিথ্যা তথ্য দিয়ে কল্পকাহিনী সাজিয়ে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা করে এলাকার শান্ত পরিবেশ নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে।

দাবি করা হচ্ছে, এই বাদী জোলেখা খানম একজন ‘মামলাবাজ’। তিনি অতীতেও বহু মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কয়েক বছর আগে এলাকার জনপ্রিয় এমইউপি আবদুল জব্বার মেম্বারের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা করেছিলেন। যা পরে তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও মামলা করার অভিযোগ রয়েছে জোলেখা খানমের বিরুদ্ধে।

সংবাদ সম্মেলনে থিমছড়ি মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ব্যাংকার মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম বলেন, বাদী মামলায় যেদিনের কথা বলেছেন ওইদিন আমি এলাকায় তো ছিলামই না, এমনকি কক্সবাজারেও ছিলাম না। ওইদিন আমার মেয়ের বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কুমিল্লায় ছিলাম।

তিনি বলেন, ওইদিন আমি এলাকায় ছিলাম, চাঁদাবাজির কোন ঘটনা ঘটেছে এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারলে আমি স্বেচ্ছায় কারাবরণ করবো।

বিশিষ্ট সমাজকর্মী শফিউল আলম বলেন, যেদিনের ঘটনা বলা হচ্ছে ওইদিন ঘটনা তো দূরের কথা, জোলেখাকে কেউ এই এলাকায় দেখেছেন কিনা সেটা স্বাক্ষী দিতে পারলে, চাঁদা দাবি করেছি এমন ঘটনার স্বাক্ষী দিতে পারলে আমি নিজেই কারাগারে চলে যাবো।

তিনি বলেন, জোলেখা গং, রশিদ গং ওরা হলো আমার পূর্বশত্রু। শত্রুতা করতেই এই মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। আপনারা বাজারের প্রতিটি দোকানে দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারেন- ২৭ মে জোলেখাকে মামলার ঘটনাস্থলে কেউ দেখেছে কিনা?

এ ব্যাপারে মামলার অন্যতম স্বাক্ষী, স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ যোবায়ের মোবাইলে সাংবাদিকদের জানান, ওই দুইপক্ষের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধের কথা তিনি জানেন। কিন্তু চাঁদা দাবি করেছেন এমন কোন ঘটনা তিনি জানেন না।

এ ঘটনায় এলাকাবাসির দাবি, মিথ্যা মামলা করে এলাকার শান্ত পরিবেশ নষ্ট করায় বাদী জোলেখা খানমসহ স্বাক্ষীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দেয়া হোক।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী জোলেখা খানমের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


শেয়ার করুন