মহেশখালীতে ইলিশ রক্ষায় হার্ডলাইনে প্রশাসন

unnamedএম বশির উল্লাহ, মহেশখালী:

বর্তমান ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ মাছ রক্ষায় হার্ডলাইনে অবস্থান করেছেন প্রশাসন। তাই সরকার ঘোষিত ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ নিধন রোধে ব্যাপক প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি করে প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ সংরক্ষণ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সম্প্রতি মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত এক সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সরকার চলতি বছরে বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ১০ আশ্বিন থেকে ২৫ আশিন বা ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর ১৫ দিন সময়কে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ঘোষণা করেছে। এসময়ে সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ অথবা বিক্রয় নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মৎস্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
প্রস্তুতির অংশ হিসাবে, ব্যাপক প্রচারণা এরই মধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্দেশনা সম্বলিত প্রজ্ঞাপন ও প্রচারণার অনুলিপি ফিশিংবোট মালিক সমিতি, মহেশখালী উপজেলার সকল বাজার কমিটি, বরফকলসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে। কক্সবাজার বেতার কেন্দ্র থেকে সার্বক্ষণিক প্রচারণা ও স্থানীয় প্রচার মাধ্যমে সংবাদ প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্যদিকে সর্বাত্মকভাবে মা ইলিশ নিধনে প্রধান প্রজনন সময়ে সব ধরণের নৌযান সাগরে মাছ ধরতে যাবে না। তা বাস্তবায়নে জেলাও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, নৌবাহিনী, কোষ্টগার্ড, বিএফডিসি, ফিশিংবোট মালিক সমিতি, মৎস্যজীবী সমিতি ও ফিশিংবোট শ্রমিক গুলো দায়িত্ব পালন করবেন। নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ রাখার জন্য মহেশখালী ফিশিংবোট মালিক সমিতির উদ্যোগে জেলেদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান এবং উদ্বুদ্ধকরণ সভা ও প্রচারণা চালানো হবে।
মহেশখালী, কুতুবদিয়া, ও কক্সবাজার সদর সংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় নৌবাহিনীর জাহাজ মোতায়েন থাকবে। নিষিদ্ধ সময়ে বরফকল গুলোকে বোট, আড়তদারদের কাছে বরফ সরবরাহ নিষেধ করা হয়েছে। নিষেধ অমান্য করলে বরফকলের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। হিমাগারে পূর্ব মজুদকৃত ইলিশ ছাড়া নতুন ধরা ইলিশ মাছ পাওয়া গেলে ওই হিমাগার সিলাগালা করা হবে। এ ব্যাপারে মনিটরিং টিম নিয়মিত সব এলাকা পরিদর্শন করবেন। সাগরের বিভিন্ন মোহনায় নৌবাহিনী ও কোষ্টগার্ড টহল জোরদার থাকবে। জেলার বিভিন্ন চেক পোস্ট, সড়ক ও নৌপথে মোতায়েন থাকবে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। সার্বিক বিষয়ে এরই মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মহেশখালী উপজেলা মৎস্য র্কমকর্তা বলেন, ‘কক্সবাজার জেলা ও মহেশখালী চ্যানেল ইলিশ প্রজননের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। তাই মা ইলিশ রোধে উপকুলীয় এলাকায় কঠোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিগত বছর গুলোতেও সংশ্লিষ্ট সকলে সহযোগিতা করেছিল। আশা করি চলতি বছরেও সকলে সমান সহযোগিতা করে দেশের প্রধান মৎস্য সম্পদ ইলিশ রক্ষায় এগিয়ে আসবে।’
মহেশখালী উপজেলার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক বলেন , ‘ইলিশ প্রজননের নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরার জন্য কোন ফিশিং বোট সাগরে যাবে না। এ ব্যাপারে যা যা করা প্রয়োজন সব ধরণের সহযোাগিতা দেয়া হবে।
প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আনোয়ারুল নাসের এ প্রতিবেদক বলেন ‘ইলিশ জাতীয় অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। কিন্তু প্রজনন মৌসুমেও ইলিশ নিধন করায় তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ জন্য সরকার প্রতিবছরের ১০ আশ্বিন থেকে ২৫ আশ্বিন ১৫দিন ইলিশ মাছ আহরণ সম্বপূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে। এ জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকুলীয় এলাকায় প্রচুর মাইকিং করা হয়েছে।’


শেয়ার করুন