এম বজলুর রহমান, ঈদগাঁও :
আশুরা শব্দটি আরবি ‘ আশুরাহ’ ধাতু থেকে এসেছে। ‘ আশারাহ’ শব্দের অর্থ হলো দশ। দশম দিবসে আশুরা পালিত হয় বলে একে আশুরা বলা হয়। আর তা হলো মহররম মাসের ১০ তারিখ।
আশুরা দিবসের ফজিলতঃ
আশুরা দিবসে সাওম পালনের জন্য রাসুল ( সঃ) নির্দেশ দিয়েছেন। ফলে ইসলামের প্রথমিক যুগে আশুরা সাওম ফরজ ছিল বলে ধারনা করা হয়। দ্বতীয় হিজরী সনে রমজানের সাওম ফরজ হওয়ার বিধান নাজিল হলে আশুরার সাওম ঐচ্ছিক হিসেবে বিবেচিত হয়। তবুও তার সাওয়াবের কমতি নেই। রাসুল ( সঃ) ইরশাদ করেন তিনি বলেন, রমজান মাসের রোজার পরে সর্বাধিক উত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা, আর ফজরের পরে উত্তম সালাত হলো তাহাজ্জাদের সালাত( মুসলিম আস-সাহীহ) ।
আরো বর্ণিত আছে, আশুরার দিবসে সাওম সম্পর্কে রাসুল ( সঃ) কে জিঙ্গাস করা হলো তিনি বলেন, এর ফলে আগের বছরের গোনাহ মাফ করে দেয়া হয়।
আশুরার সংঘটিত কয়েকটি ঐতিহাসিক ঘটনাঃ
১। আশুরার দিনে হযরত আদম ( আঃ) কে সৃষ্টি করা হয় এবং এই দিনে তিনি জান্নাতে প্রবেশ বরেন। এই তারিখেই জান্নাত থেকে পৃথিবীতে প্ররিত হন এবং বহু বছর পর এই তারিখেই আরেফাতের ময়দানে জাবালে রহমতে তিনি ও বিবি হাওয়া ( আঃ)-এর পুনরায় ও বিবি হাওয়া ( আঃ)- এর পুনরায় সাক্ষাত লাভ হয় এবং তাঁদের মার্জনা করা হয়।
২। এদিবসে হযরত ইদ্রিস ( আঃ) কে আকাশে উত্তোলন করা হয়।
৩। এতারিখে হযরত নূহ ( আঃ) কে তুফান ও প্লাবনের পানি হতে পরিত্রান দেওয়া হয়।
৪। এদিনে হযরত আইয়ুব ( আঃ) কে ১৮ বছর রোগ ভোগের পর রোগ মুক্তি দেয়া হয়।
৫। এতারিখে হযরত ইব্রাহীম ( আঃ) কে অগ্নিকুণ্ড হতে নিস্কৃতি দেয়া হয়।
৬। এদিনে হযরত দাউদ ( আঃ) কে বিশেষ ক্ষমা করা হয় এবং হযরত সুলাইমান ( আঃ) কে স্বীয় হারানোর বাদশাহী পুনরায় প্রদান করা হয়।
৭। এদিবসে হযরত ইউনুছ( আঃ) কে ৪০ দিন পর মাছের উদরে থাকার পর নিস্কৃতি দেয়া হয়।
৮। হযরত ইয়াকুত ( আঃ) স্বীয় হারানো পুত্র হযরত ইউসুপ ( আঃ) এর সাক্ষাত লাভ করেন।
৯। এদিকে হযরত সূসা ( আঃ) ফিরাউনের কবল থেকে নিস্কৃতি লাভ করে।
১০। এই তারিখে হযরত ঈসা ( আঃ) কে আকাশে উত্তোলন করা হয়।
১১। আমাদের প্রিয় নবী ( সঃ) মক্কা শরীফে এদিনে তাশরীফ আনেন।
১২। এদিনে নবী করিম ( সঃ)-এর কলিজার টুকরা ফাতেমা ( রাঃ)-এর নয়ন মনি হযরত ইমাম হুসাইন ( রাঃ) এবং তাঁর ৭৭ জন পরিজন ও ঘনিষ্ঠজন জালিম ইয়াজিদ সৈন্য কর্তৃক কারবালা প্রান্তরে ফোরাত নদীর তীরে নির্মমভাবে শহীদ হন।