মডেলদের গোপন কষ্ট

মডেলসিটিএন ডেস্ক:
জমকালো ফ্যাশন জগত, চারপাশে আলো, ক্যামেরা আর অর্থের ছড়াছড়ি। এই সবকিছুর পেছনে একটি দুঃসহ যন্ত্রণার গল্প আছে। প্রতিটি মডেলের তথাকথিত অস্থিচর্মাসার শরীরের প্রতিটি কোষ সেই যন্ত্রণার ইতিহাস জানে। বড় বড় ফ্যাশন হাউসগুলো মডেলকে দেখে শুধুমাত্র একটি কাঠামো হিসেবে যেখানে তার পোশাকটি ফুটে উঠবে কী না। যদি না ওঠে তাহলে মডেলকে কোনও দিক থেকে এক কমাতে হবে বা কোন দিকে একটু বাড়াতে হবে সেই প্রেসক্রিপশন দেয়। সেটি অনুযায়ী কাজ করতে হয় মডেলদের।
এসব করতে গিয়ে অনেক অমানবিক পরিশ্রম ও কষ্ট করতে হয়েছে মডেলদের। শতকোটি ডলারের অন্তর্বাস ব্র্যান্ড ভিক্টোরিয়াস সিক্রেটের সাবেক মডেল এরিন হিথারটন প্রথম মুখ খুলেছেন। বলেছেন ভিক্টোরিয়াস সিক্রেটের মডেল হতে গেলে কি করতে হয়। মটো ওয়েবসাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, আমার শেষ দুটি ভিক্টোরিয়াস সিক্রেটের ফ্যাশন শো’তে আমাকে বলা হয়েছে আমার ওজন বেশি, আমাকে ওজন কমাতে হবে। আমি দিনে দুইবার ব্যায়াম করার পরেও আমার ওজন কমছিলো না। শেষ পর্যন্ত আর চাপ নিতে না পেরে আমি কাজটি ছেড়ে দিই। আমার মনে হচ্ছিলো আমার শরীর আর নিতে পারছে না।
হিথারটনের কথার পুনরাবৃত্তি করলেন আরেক মডেল জুজুয়ানা বাকওয়াল্ড। তিনি উইলহেমিনা মডেল কোম্পানিতে কাজ করছেন। তিনি বলেন, আমার এজেন্ট আমাকে পরামর্শ দিয়েছে আমি যেন খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিই।
তিনি বলেন, ‘মডেলরা পরিবর্তনশীল কাপড়ের হ্যাঙ্গার। তাদের সবসময় ০-২ সাইজের মধ্যে ওঠানামা করতে হয়।’
ওজন বাড়ানো কমানোর এই চাপের মধ্যে বাকওয়াল্ডের অ্যানোরেক্সিয়া বা খাবারে অরুচি অসুখ বেধে যায়। যা থেকে মুক্তি পেতে তার লেগেছে ৪ বছর। অনেকেই এই অসুখ থেকে সেরে উঠতে পারেন না। গত বছরেই ইসাবেল কারো নামে একজন ফ্রেঞ্চ মডেল অ্যানোরেক্সিয়াতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
আই-ডি ম্যাগাজিনের সাবেক সহ-সম্পাদক ও বর্তমানে কিংস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ক্যারিন ফ্র্যাংকলিন বলেন, ‘৩০ বছর আগে মডেলদের উচ্চতা ছিলো কম, ওজনও উচ্চতার সঙ্গে সংহতি রেখেই ছিলো। এখন উচ্চতা ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি হলেও উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে ওজন বাড়ানো হয়নি। এর ফলে এসব জটিলতা দেখা দিচ্ছে।’
গত বছরের ডিসেম্বরে ফ্রান্স অতিরিক্ত চিকন মডেলদের নিষিদ্ধ করে। ২০১২ সালে ইসরায়েলও কম ওজনের মডেলদের নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়ন করে।ধ০৩৩ধ৪৭৮-ফভ৬ভ-৪৫পফ-নপধ৯-ফ১১৪৭১ভনভ৮ভব
যুক্তরাষ্ট্রেও মডেলদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় একটি বিল পাস হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এটি সহসাই আইনে পরিনত হবে।


শেয়ার করুন