ভারতে বাবা, কাকা, ভাইয়ের হাতে ধর্ষণের শিকার ষোড়শী

আমাদের সময়.কম:

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায় দুই বছর ধরে মুখ বুজে শারীরিক নির্যাতনের যন্ত্রণা সহ্য করছে ১৬ বছরের এক কিশোরী। দুই বছর পর পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে জানা যায় তার বাবা, কাকা ও ভাই তার সাথে বারবার যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করেছে এবং ধর্ষণও করেছে। পুলিশকে দেয়া তার বক্তব্য অনুযায়ী, এ সময়ের মধ্যে সে দু’বার অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে এবং চারবার আত্মহত্যার অপচেষ্টা করে। সে অভিযোগ করেও মায়ের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পায়নি। বরং তার মা তাকে বলেছে, ‘তারা তোর বাবা, কাকা এবং বড় ভাই অন্য কেউ তো না।’

বৃহস্পতিবার তার স্কুল শিক্ষক তাকে তার জীবনের একটি অতি ভৌতিক গল্প বলতে বলে। একই দিন স্কুল থেকে ফেরার পথে ২০ বছরের বড় ভাই তার হাত-পা বেঁধে, মুখ চেপে তাকে ধর্ষণ করে। শুক্রবার সকালে তার শিক্ষক এবং স্কুলের প্রধান তাকে জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি থানায় নিয়ে যায়। থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়। জরুরি ভিত্তিতে পুলিশ তার কাকাকে গ্রেফতার করে।  পরে রাতে তার বাবা ও ভাইকে গ্রেফতার করা হয় এবং কিশোরীকে জলপাইগুড়ি জেলা শিশু কল্যাণ কমিটির অধীনে পাঠানো হয়।

ধূপগুড়ি উত্তরবঙ্গের নিকটবর্তী একটি ছোট শহর। কলকাতা থেকে ধূপগুড়ির দূরত্ব ৬’শ কিলোমিটার। বাতাসে আন্দোলিত হয় কূলহারা এই কিশোরীর আর্তচিৎকার। সমবেদনা আসে সুদূর কলকাতা থেকে। কিশোরীর এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কলকাতা থেকে একজন শিক্ষক জানান, ‘আমিও একজন বাবা। আমি ঠিক বুঝতে পারছি না এই মুহুর্তে তাকে কি বলা উচিত হবে, তবে আমি অসম্ভব কষ্ট পেয়েছি।’ তার অন্য শিক্ষক সুশান্ত সরকার বলেন, ‘এ ঘটনা আমি আমার জীবনে কোনদিন ভুলতে পারবো না। আমরা তার পক্ষে উপযুক্ত বিচার প্রার্থনা করছি।’

স্থানীয় গণমাধ্যকে এক সাক্ষাৎকারে মেয়েটি বলে, ‘গ্রামের প্রত্যেক মানুষ আমার সমস্যার কথা জানতো কিন্তু এ ব্যাপারে কেউ আমাকে কোন সহযোগিতা করেনি।’ এর আগে সে একবার তার ঘর ছেড়েছিল। তখন সে তার দাদা-দাদীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তারা এ নির্মম কাহিনী শুনে তার বাবাকে আলাদা করে দেয় এবং গালমন্দ করে। তার দাদা-ই ছিল তার পক্ষে একমাত্র প্রতিবাদকারী কিন্তু সে বেশিদিন বাঁচেনি।

এনডিটিভি থেকে অনুবাদ করেছেন সারোয়ার আলম।


শেয়ার করুন