ভারতে ধর্ষণের দায়ে বাংলাদেশি ছাত্রের যাবজ্জীবন

police-1-550x343সিটিএন ডেস্ক:

পশ্চিমবঙ্গে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়া এক বাংলাদেশি নাবলিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে অপর এক বাংলাদেশি ছাত্রকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে নাবালকদের বিচারের জন্য গঠিত বিশেষ আদালত।
বৃহস্পতিবার সফিকুল ইসলাম নামের ওই ছাত্রকে এ কারাদ- দেন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের সিউরির পক্সো আদালতের বিচারক মহানন্দ দাস। সফিকুলের বাড়ি সিরাজগঞ্জের দাদপুরে।
পশ্চিমবঙ্গের পক্সো আদালত সূত্রে জানাগেছে, বিশ্বভারতীর পাঠভবনে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়তে গিয়েছিলেন ওই নাবালিকা ছাত্রী। সাহায্যের নাম করে ব্ল্যাকমেল করে বিশ্বভারতীর গ্রাম সংগঠন বিভাগের গবেষক ছাত্র শফিকুল তাকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রকে দোষী সাব্যস্ত করে তার যাবজ্জীবন কারাদ-ের সাজা ঘোষণা করে আদালত। একই সঙ্গে নির্যাতিতা ছাত্রীকে ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সূত্র জানায়, বিশ্বভারতীতেই নির্যাতিতা ছাত্রীর সঙ্গে আলাপ হয় সফিকুলের। একই দেশের বাসিন্দা এবং বিশ্বভারতীর বড় ভাই হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন সময় ছাত্রীটিকে নানা ভাবে সাহায্য করত শফিকুল। কিন্তু ছাত্রীটির পরিবারের অভিযোগ, ২০১৪ সালের আগষ্ট মাসে সফিকুল বিশ্বভারতী লাগোয়া গুরুপল্লিতে নিজের ভাড়া বাসায় ছাত্রীটিকে সাহায্যের নামে ডেকে ধর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, ঘটনার ছবি নিজের মোবাইলে তুলে রেখে ছাত্রীটিকে ব্ল্যাকমেল করত বলেও অভিযোগ। ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর শান্তিনিকেতন ফাঁড়িতে এ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এর পর পুলিশ অভিযুক্ত শফিকুলকে গ্রেফতারের পাশাপাশি তার কাছ থেকে ল্যাপটপ, পেনড্রাইভ, সিম কার্ড বাজেয়াপ্ত করে। এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় বিশ্বভারতীতে। এরপরই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে। সিউড়ির নাবালকদের বিশেষ আদালতে (পক্সো) গত দেড় বছরে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। কলেজের অধ্যাপক, ছাত্রীর সহপাঠীরাও ঘটনার সাক্ষ্য দেন।
সরকারি আইনজীবী সৈয়দ সামিদুল আলম জানিয়েছেন, ভারতীয় দ-বিধির ৩৪২ ধারায় বেআইনি আটক এবং ৩২৩ নম্বর ধারায় মারধর করার অভিযোগে এক বছর সশ্রম কারাদ-, ৩৫৪ (বি) ধারায় বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি, ৫০৬ ধারায় হুমকি ও মেরে ফেরার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ৭ বছর সশ্রম কারাদ-, সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। অনাদায়ে ৬ মাস সশ্রম কারাদ-। এই সব সাজা এক সঙ্গে চলবে। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই ছাত্রীকে এক মাসের মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তথ্য সূত্র : দৈনিক যুগশঙ্খ, দ্য হিন্দু।


শেয়ার করুন