ব্লগারদের মতোই কুপিয়ে রাবি শিক্ষককে খুন

2016_04_23_10_01_48_uT59VwdUBr1siMTk6Abo5OltCExphH_original
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী খুন পরিকল্পিত বলে ধারণা করছে পুলিশ। খুনের উদ্দেশ্য কিংবা খুনিদের পরিচয় সম্পর্কে পুলিশ এখনও নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারেনি। তবে সন্দেহ জঙ্গি সম্পৃক্ততার। স্বজনরাও এ শিক্ষককে হত্যার কারণ বুঝে উঠতে পারছেন না।

শনিবার সকাল ৭টার দিকে মহানগরীর শালবাগান এলাকায় অতর্কিত হামলা চালিয়ে এ শিক্ষককে খুন করে দুর্বৃত্তরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হামলায় অংশ নিয়েছে ৩ মটরসাইকেল আরোহী। বাসা থেকে বেরিয়ে গলি পথ ধরে হাঁটছিলেন অধ্যাপক রেজাউল করিম। এসময় মোটরসাইকেল আরোহীরা তার পাশে এসে থামেন। মোটরসাইকেল থেকে নেমে আরোহীদের একজন নিজের সঙ্গে থাকা ধারালো অস্ত্র বের করে পেছন থেকে অধ্যাপক রেজাউল করিমের ঘাড়ে কোপ বসিয়ে দেয়। আকস্মিক আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রেজাউল করিম। এসময় তার মাথা ও ঘাড়ে আরো কয়েকটি কোপ মারে ওই দুর্বৃত্ত। মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিনের মতো সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন অধ্যাপক রেজাউল করিম। নগরীর শালবাগান মোড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে ওঠার কথা ছিল তার। বাড়ি থেকে প্রধান সড়কের মাঝে ১০০ মিটারের গলিপথ আছে। অধ্যাপক রেজাউল করিম গলির অর্ধেক পথ পেরিয়েছেন। ওই সময় দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলার শিকার হয়ে প্রাণ হারান সঙ্গীতপিপাসু এ শিক্ষক।

গত ১২ বছরে এ নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হলেন। এর আগে হত্যার শিকার হন রাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক একেএম শফিউল ইসলাম। ২০১৪ সালের ১১ নভেম্বর নিজ বাসার সামনে তাকেও কুপিয়ে খুন করে দুর্বৃত্তরা। একইভাবে খুন হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুতত্ব বিভাগের শিক্ষক এম তাহের। ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের বাসাতেই দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে তাকে খুন করে।

ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীর নিহত হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। পরে সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

খবর পেয়ে সেখানে যান রাজশাহীর বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার মো. শামসুদ্দিন। ঘটনাস্থল ঘুরে এসে পুলিশ কমিশনার জানান, মুক্তমনা ব্লগারদের মতোই কুপিয়ে ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ব্লগার বা মুক্তমনা মানুষদের যেভবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ খুনটিও ঠিক সেরকমই। তবে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়। প্রাথমিকভাবে আঘাতের ধরন দেখে তাই মনে হচ্ছে।’

বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন জানান, খুনের আলামত দেখে ধরে নেয়া হচ্ছে এটি পরিকল্পিত খুন। তবে এ খুনের কারণ ও এর সঙ্গে কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

নিহতের ভগ্নিপতি মাহবুবুল আলম সাংবাদিকদের জানান, প্রতিদিনের মত সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। নগরীর শালবাগান মোড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে ওঠার কথা ছিল তার। কিন্তু তার আগেই বাসার অদূরে গলির ভেতর দুর্বৃত্তরা পেছন থেকে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।


শেয়ার করুন