উখিয়ায়

বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী শ্লীলতাহানি সহ নানান অভিযোগ

indexশফিক আজাদ, স্টাফ রিপোর্টার :

উখিয়ার পালংখালীতে এক বন বিট কর্মকর্তা বিরুদ্ধে নারীর শ্লীলতাহানি সহ নানান অভিযোগ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ওই বনবিট কর্তৃক মামলা দায়ের করে নিরীহ লোকজনকে হয়রানীও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে শ্লীলতাহানির শিকার নারী বাদী হয়ে পালংখালী বনবিট কর্মকর্তা মো. মাসুদ সরকারকে অভিযুক্ত করে গত ২ ডিসেম্বর উখিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলার পালংখালীর গয়ালমারার বনবিট সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকায় বাড়ী তৈরী করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন স্থানীয় ছৈয়দ আকবরের ছেলে দিনমজুর ফিরোজ মিয়া। পার্শ্ববর্তী এলাকায় ফিরোজের অপরাপর ভাই-বোনদের নিয়ে থাকতো তার পিতা। জীবিকার তাগিদে স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে দিনের বেলায় প্রায় সময় যৌন হয়রানীর উদ্দ্যেশে ফিরোজাকে উত্যক্ত করতো বিট কর্মকর্তা মাসুদ। এক পর্যায়ে তিনি ফিরোজাকে কু-প্রস্তাব দিতে থাকেন। গত ৩০ নভেম্বর মধ্য রাতে ফিরোজার শ্বশুড় ছৈয়দ আকবর মারা যান। পরদিন ১ডিসেম্বর সকাল ১১টার দিকে শ্বশুড়ের মৃতদেহ দাফনের জন্য নিয়ে গেলে ফিরোজা বেগম বাড়ীতে ফিরে আসেন। এসময় বাড়ীতে একা পেয়ে ফিরোজাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায় বনবিট কর্মকর্তা মাসুদ। এতে বাধা দিলে ফিরোজাকে এলোপাতাড়ী কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করা হয়। পরে এলাকাবাসী খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এলে বিট কর্মকর্তা মাসুদ পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা ফিরোজাকে উদ্ধার করে উখিয়া হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় আহত ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে বনবিট কর্মকর্তা মাসুদকে অভিযুক্ত করে উখিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

ফিরোজা বেগম অভিযোগ করে জানান, এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বনবিট কর্মকর্তা মাসুদ বাদী হয়ে তার স্বামী ফিরোজ মিয়াসহ এলাকার নিরীহ ১২ জন লোকের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানী করছেন। মামলার আসামীরা পুলিশের ভয়ে এখন এলাকা ছাড়া। এ নিয়ে উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) হাবিবুর রহমানের সাথে কথা হলে বনবিট কর্মকর্তা মাসুদ কর্তৃক মামলা দায়ের করার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ফিরোজা বেগমের অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বনবিট কর্মকর্তা মো. মাসুদ সরকার বলেন, বনভূমি দখল করে বাড়ী তৈরী করে বসবাস করছিল ফিরোজা ও তার স্বামী। অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে গেলে বাড়ীতে একা থাকা ফিরোজা তার উপর তেড়ে আসেন। এসময় একটি লাঠি নিয়ে তাকে ভয় দেখালে ফিরোজা দৌঁড়ে পালাতে গিয়ে পাহাড়ের খাদ থেকে পড়ে সে আহত হয়। পরে ওই নারী ও তার স্বামীসহ ১৫/২০ জন লোক বনবিট অফিসে এসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর এবং তাকে মারধর করে। এ ঘটনায় ফরিদুল আলমকে প্রধান আসামী করে ১২ জনের নামে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন বলেন, বনবিট কর্মকর্তা মাসুদ সরকার পালংখালীতে যোগদানের পর বন সম্পদ দিনের পর দিন ধ্বংসের দিকে উপনীত হচ্ছে। প্রভাবশালী লোকজনকে ব্যবহার করে ওই বিট কর্মকর্তা নিরহ বনভূমিতে বসবাসকারীর নিকট থেকে মাসিক চাঁদা দাবী থেকে শুরু করে নানান অপকর্ম চালিয়ে আসলেও মামলার ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মূখ খুলতে পারছেনা। এমনকি পালংখালীতে যেসব অবৈধ করাতকল রয়েছে এগুলো থেকে সে মাসে ১০ হাজার টাকা করে অনৈতিক সুবিধা আদায় করে থাকে।


শেয়ার করুন