বিক্রয়ডটকম হবে সেরা মার্কেট প্লেস

বাংলামেইল:

প্রযুক্তির ছোঁয়ায় ইন্টারনেটনির্ভর সেবা, ব্যবসার জয় জয়কার। দেশে দ্রুত গতিতে বাড়ছে মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত দেশের মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ কোটি ৩৬ লাখ। অন্যদিকে একই সময়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৩ লাখ ৫০ হাজার। প্রযুক্তির এই অগ্রগতিতে বাংলাদেশে অনলাইনভিত্তিক ব্যবসার প্রসার যেমন হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন ক্ষেত্র।

বাংলাদেশের এই সম্ভাবনাময় বাজারে আগ্রহী হয়ে দেশের বাইরে থেকেও আসছে বিনিয়োগ। অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে শুরু করছে ব্যবসা। ২০১২ সালের জুনে বিক্রয়ডটকম নামে চালু হয় কেনাবেচার জন্য অনলাইন মার্কেট প্লেস। দ্রুত বর্ধনশীল এই বাজারে বিক্রয়ডটকম হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের বৃহত্তম অনলাইন মার্কেট প্লেস।

বিক্রয়ডটকমের পেছনে ফেলে আসা সময়ের গল্প আর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বাংলামেইলের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রতিষ্ঠানটি মার্কেটিং ম্যানেজার ইশিতা শারমিন।

বিক্রয়ডটকম নিয়ে দেশজুড়েই মানুষের আগ্রহ বহুগুণে বেড়েছে বলে জানান ইশিতা শারমিন। তিনি বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ এখন নাম শুনলেই বোঝে বিক্রয়ডটকম কী। শুরুর দিকে মানুষকে বোঝাতে হতো এটা কেনাবেচার জন্য মার্কেট প্লেস। এখন সারা দেশের মানুষ নিজেদের পণ্য বেচাকেনা করতে আসে আমাদের প্ল্যাটফর্মে। কেউ কিছু বিক্রি করতে গেলেই একবার বিক্রয়ডটকমের কথা ভাবে।’

কোন ধরণের বিজ্ঞাপন বেশি আসে জানতে চাইলে ইশিতা বলেন, ‘কেনাবেচার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় পণ্যগুলো হচ্ছে- মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, প্রোপার্টি এবং প্রাইভেটকার ও যানবাহন। এছাড়া ঘরের আসবাবপত্র, পোশাক, ক্রিকেট সরঞ্জাম, পাখি, চাকরি ও সেবার বিজ্ঞাপনও বাড়ছে প্রতিনিয়ত।’

কোন এলাকার মানুষ বেশি বিজ্ঞাপন পোস্ট করে? উত্তরে ইশিতা বলেন, ‘মূলত যেখানেই ইন্টারনেট আছে সেখানেই বিক্রয়ের ব্যবহার আছে। তবে সবচেয়ে বেশি পোস্ট আসে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনা থেকে। প্রতি মাসে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ আমাদের ওয়েব ভিজিট করে।’

ইশিতা শারমিন বলেন, ‘আমারা সব সময় মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করেই নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। মানুষের প্রয়োজন, সুবিধাকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। আমাদের একটি বড় সাপোর্ট টিম আছে যারা অনলাইনে, ফোনে মানুষকে বিজ্ঞাপন পোস্ট করতে সহায়তা করে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমার যৌথভাবে কাজ করতে চুক্তি করছি। ক্রেতাদের অ্যান্টিক, ব্যবহৃত ও পুরনো গাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপনের জন্য আমারা গত বছর ঢাকা মহানগর পুরাতন গাড়ি ব্যবসায়ী বহুমুখি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সঙ্গে (ডভকল) চুক্তি করেছি।’

ইশিতা শারমিন বলেন, ‘সম্প্রতি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এর ফলে বাংলালিংক গ্রাহকেরা বিনামূল্যে বিক্রয়ডটকম ব্রাউজ করতে পারবেন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কৌশল নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। আশা করছি আরো বেশি মানুষের কাছে আমরা পৌঁচতে পারব।

ইশিতা শারমিন বলেন, ‘বিক্রয়ডটকম প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে কেনাবেচার ধরন বদলে দিয়েছে। অনলাইনে পুরানো এবং অব্যবহৃত পণ্য কেনাবেচার মাধ্যম হিসেবে বিক্রয়ডটকম ব্যবহারে সবাই বেশি উৎসাহী। আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি বিক্রয়ের গ্রাহকদের সর্বাধুনিক ও নিরাপদ সেবা দিতে।’

অনলাইন মার্কেট প্লেসগুলো ব্যবহার করে চুরি হওয়া জিনিসপত্র বিক্রির অভিযোগ ওঠে প্রায়। এ প্রসঙ্গে ইশিতা বলেন, ‘বিক্রয়ডটকম একটি প্লাটফর্ম। মার্কেটেও অনেক চোরাই পণ্য বিক্রি হয়। সেসব পণ্যের দায় মার্কেটের নয়, যে বিক্রি করছে তার। আমাদের নিজস্ব একটি লিগ্যাল টিম আছে যারা প্রতিটি পোস্ট বিশেষ পদ্ধতিতে চেক করে। আপত্তিকর, সন্দেহজনক হলে সেসব পোস্ট তারা মুছে দেয়। আমারা ভবিষ্যতে এ কাজে পুলিশের সহায়তাও নেবো।’

বিক্রয়ডটকম বাংলাদেশের বাজারে সেরা হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয়ে বললেন মার্কেটিং ম্যানেজার ইশিতা শারমিন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করতে কাজ করছি। কম সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মার্কেট প্লেস তৈরি করেছি আমরাই। মানুষ পুরনো জিনিসপত্র বিক্রি করতে বিক্রয়ডটকমকেই বেছে নিচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘২০১২ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে বিক্রয়ডটকম বাংলাদেশের বৃহত্তম মার্কেট প্লেসে পরিণত হয়েছে। এক প্ল্যাটফর্মে পছন্দের জিনিস কেনার সুযোগের পাশাপাশি বিক্রিও করা যাচ্ছে সহজে। কেনার ক্ষেত্রে অনেকগুলো প্রক্রিয়ায় পছন্দের জিনিস কেনা যায়। দাম, ধরণ, এলাকা এসব ভিত্তিতে সহজে কেনা যায়। ইন্টারনেটের প্রসার যত বেশি হবে বিক্রয়ডটকম আরো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে।’


শেয়ার করুন