বাড়ি ফেরার অনুমতি পেলেন ফরহাদ মজহার

প্রথম আলো :

কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার ফরহাদ মজহারকে তাঁর নিজ জিম্মায় দিয়েছেন আদালত। এর আগে বেলা তিনটা থেকে বিকেল পাঁচটা ৪০ মিনিট পর্যন্ত তিনি জবানবন্দি দেন। ঢাকার মহানগর হাকিম আহসান হাবীব তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তাঁকে নিজ জিম্মায় বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেন।

আদালত ফরহাদ মজহারের কাছে জানতে চান, তিনি নিজ জিম্মায় যেতে যান কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই যেতে চাই।’ আদালতে তাঁকে বিমর্ষ দেখা গেছে।

বিকেল পাঁচটা ৫২ মিনিটে একটি মাইক্রোবাসে করে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন ফরহাদ মজহার। এ সময় সাংবাদিকেরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান। তবে তিনি কথা বলতে চাননি।

জানতে চাইলে ফোনে ফরিদা আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বামীকে ফিরে পেয়েছি। এতেই খুশি।’

আজ বেলা সোয়া একটার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, ফরহাদ মজহারকে কয়েকজন চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। গতকাল সোমবার ভোরে তিনি নিজের বাড়ি থেকে ওষুধ কিনতে বের হয়েছিলেন। পথে এ ঘটনা ঘটে।

গতকাল রাতে উদ্ধারের পর আজ সকাল নয়টার কিছু আগে ফরহাদ মজহারকে প্রথমে রাজধানীর আদাবর থানায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে বেলা ১১টার কিছু আগে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দুই ঘণ্টার বেশি সময় সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ চলে। এরপর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য নিম্ন আদালতে পাঠানো হয় তাঁকে।

ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদে ফরহাদ মজহার চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে নিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন বলে জানান আব্দুল বাতেন। তিনি বলেন, ফরহাদ মজহার তাঁদের বলেছেন, মাইক্রোবাসে তোলার পর তিনি আর কিছু জানেন না। এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, তুলে নেওয়ার পর ফরহাদ মজহারের ব্যবহৃত নম্বর থেকেই তাঁর স্ত্রীকে ফোন করা হয়। ফোনে তিনি জানান, যারা তাঁকে নিয়ে গেছে তাঁরা ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছেন।

গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে যশোরের অভয়নগরে খুলনা থেকে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে উদ্ধার করা হয় ফরহাদ মজহারকে। স্বজনেরা অভিযোগ করেন, গতকাল ভোরে কে বা কারা ফরহাদ মজহারকে রাজধানীর শ্যামলীর হক গার্ডেনের বাসার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গেছে।

পুলিশ আরও জানায়, আদাবর থানায় ফরহাদ মজহারের পরিবারের করা অপহরণের অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। আদালতে জবানবন্দি রেকর্ডের পর তার ভিত্তিতেই তদন্ত চলবে বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়। ব্রিফিংয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার উপস্থিত ছিলেন।

উদ্ধার করার পর গতকাল দিবাগত রাত ১টা ২০ মিনিটে খুলনার ফুলতলা থানায় সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমেদ জানিয়েছিলেন, ফরহাদ মজহারের ব্যাগে মোবাইল ফোনের চার্জার, শার্টসহ বেড়াতে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া গেছে। ব্যাগ দেখে বোঝা যায় যে তিনি স্বেচ্ছায় ভ্রমণে এসেছেন। তিনি সুস্থ আছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, অপহরণ নাটক সাজানো হয়েছিল বলে মনে হয়।


শেয়ার করুন