বাবুলের বিরুদ্ধে এসআই আকরামের বোনের লিখিত অভিযোগ

গোয়েন্দা পুলিশের কাছে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে ‘কিছু লিখিত অভিযোগ’ জমা দিয়েছেন মাগুরায় নিহত পুলিশ কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আকরাম হোসেনের বোন জান্নাত আরা পারভীন রিনি। তবে এই অভিযোগে কী রয়েছে, সে বিষয়ে অভিযোগকারী বা পুলিশ-কারও পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে কিছু জানানো হয়নি।

বুধবার সকালে চট্টগ্রাম লালদীঘিতে অবস্থিত নগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে এসে এই অভিযোগ জমা দেন। এ সময় তার সাথে ছিলে রিনির বড় বোনের মেয়ে মুর্শিদা জাহান ডলি। পরে তারা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. কামরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম মহানগরীর জিইসির মোড়ের অদুরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে নিহত হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এর কিছুদিন আগে থেকেই বাবুল আক্তার রাজধানীতে তার শ্বশুরের বাসায় বসবাস শুরু করেন। এ সময় বাবুল আক্তারের শ্বশুর-শাশুড়ি জামাতার পক্ষে কথা বললেও সম্প্রতি তারা মিতু খুনের জন্য বাবুলকেই দায়ী করছেন।

downloadএর মধ্যেই মাগুরার এসআই আকরামের মৃত্যুর ঘটনাটি আলোচনায় এসেছে। এই পুলিশ কর্মকর্তার বোন জান্নাত আরা পারভীন রিনি এই ‘হত্যা’র জন্য বাবুলকে দায়ী করেছেন।

মিতু হত্যার প্রায় ৯ মাস পর গত ফেব্রুয়ারিতে ঝিনাইদহে সংবাদ সম্মেলনে বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে এসআই আকরামকে হত্যার অভিযোগ আনেন তার বোন। তিনি দাবি করেন, আকরামের স্ত্রী বর্ণির সঙ্গে বাবুল আক্তারের পরকিয়া প্রেম ছিল।

পুলিশের উপপরিদর্শক আকরাম হোসেন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে বলেই এতদিন প্রচার ছিল। কিন্তু তার বোন জান্নাত আরা পারভীন রিনির অভিযোগ, আকরামকে হত্যার পর একে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিয়েছেন বাবুল আক্তার।

অবশ্য বর্ণি এবং বাবুল আক্তার দুজনই নিজেদের মধ্যে কোনো ধরনের সম্পর্কের গুঞ্জন অস্বীকার করে আসছেন। দুই জনকে কেউ কখনও দেখেননি বলেও দাবি করেছেন বর্ণি।

২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর একআই আকরামকে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বড়দাহ এলাকায় মহাসড়কে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাকে পরে ঝিনাইদহ সদও হাসপাতাল পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পওে ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি মারা যান।

বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেনও গণমাধ্যমকে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তার জামাতার বিরুদ্ধে পরকিয়ার অভিযোগ তারাও শুনেছেন। এখন এগুলো আর অবিশ্বাস হয় না। যদিও বাবুল ফেসবুকে লিখেছেন, তার সঙ্গে তার স্ত্রী মিতুর কিশোরী বোনকে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এই অভিযোগ এনেছে তার শ্বশুর বাড়ি।

বুধবার বেলা ১২টায় দিকে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে জান্নাত আরা পারভীন রিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে আমাদের কিছু অভিযোগ ছিল। আমরা সেগুলো লিখিতভাবে দায়ের করেছি। আবার এ ব্যাপারে মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছেও বলেছি।’

তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ‘এসআই আকরামের বোন জান্নাত আরা পারভীন রিনি বাবুল আক্তার সম্পর্কে কিছু অভিযোগ জানানোর কথা বলেছিল। আমি তাদের লিখিতভাবে জানাতে বলেছি। তারা লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে।’

কামরুজ্জামান বলেন, ‘মিতু হত্যার তদন্তের মধ্যে হঠাৎ সাবেক এসআই আকরামকে হত্যা ও তার স্ত্রীর বনানী বিনতে বশির ওরফে বর্ণির সাথে বাবুল আক্তারের পরকীয়ার বিষয়টি চলে আসে। যা বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেনও টেনে আনেন। ফলে তদন্তে নতুনর মোড় নেয় মিতু হত্যা মামলা। তদন্তের স্বার্থে এসআই আকরামের বোন রিনিকে তাদের অভিযোগ লিখিতভাবে জানানোর কথা বলা হয়েছে।’

——–ঢাকাটাইমস


শেয়ার করুন