বাংলাদেশের স্থপতি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক আলোচনা

mujibসংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
বাঙলা, বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু সমার্থক শব্দ। তিনটি শব্দ একই সুতোতে গাঁথা। বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিলো বাঙালিকে একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে পরিচিত করা, বাংলাদেশকে পৃথিবীর বুকে একটি স্বাধীন ও স্বার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য।
কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৩৭৬তম পাক্ষিক সাহিত্য সভায় “বাংলাদেশের স্থপতি : বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমান” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তাগণ এসব কথা বলেন।
একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে গত ১২ আগস্ট ২০১৬ শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তাগণ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তানের মৃত্যুকূপ ফিরে আসার পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক জনসভায় বলেছিলেন, কবি গুরু আপনি দেখে যান আপনার বাঙ্গালি আজ মানুষ হয়েছে। (কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতাংশ ‘সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালির মুগ্ধ জননী, রেখেছো বাঙ্গালি করে মানুষ কর নি’)।
বক্তাগন বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল এই অল্পসময়ের রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেশিরভাগ সময়ে কারগারে কাঠিয়েছেন। তিনি পুরো জীবনটাই ব্যয় করেছেন বাঙ্গালির জন্য, বাঙলার জন্য, বাংলাকে সোনার বাংলায় পরিণত করার জন্য। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশের নিরন্ন মানুষের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেওয়ার জন্য। এদেশের দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো এদেশকে সোনার বাংলা পরিণত করতে। তিনি চেয়েছিলেন, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ। কিন্তু এদেশের কিছু উচ্চাভিলাসী, বিভ্রান্ত ও বিপদগামী সেনা সদস্য বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো।
বক্তাগণ বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশের ইতিহাস ভিন্ন ভাবে লেখা হতো।
বক্তাগণ আরো বলেন, একজন মহান নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন সব কিছুর উর্ধ্বে। পাকিস্তানি কারাপ্রকোষ্ট থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরার সময় তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সহযোদ্ধা ও সাহায্যকারী ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধিকে বলেছিলেন ‘আমার দেশ থেকে আপনার সেনাবাহিনি কবে ফিরিয়ে আনবেন?’ বক্তাগণ বলেন এখান থেকেই বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বক্তাগণ বলেন, কত বড় দেশপ্রেমিক হলে, বুকে কি পরিমাণ সাহস থাকলে একথা বলা যায়। বক্তাগণ বলেন, দেশপ্রেম এমনই যেখানে ১০০ নম্বরে ৯৯ নম্বর পেলেও ফেল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেদিন তাঁর দেশ প্রেমের পরীক্ষায় শতভাগ উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
একাডেমীর স্থায়ী পরিষদের সদস্য ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক কবি-অধ্যাপক দিলওয়ার চৌধুরী ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বংশধারা, শৈশব ও শিক্ষা জীবন সম্পর্কে কিছু কথা’ শীর্ষক শিরোনামের প্রবন্ধ উপস্থান করেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক বাঁকখালী পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক মো. ফরিদ সিবগাতুল্লাহ।
একাডেমীর স্থায়ী পরিষদ সদস্য গবেষক নূরুল আজিজ চৌধুরী ‘মানুষ বঙ্গবন্ধু’ বিষয় নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন।
একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুলের সঞ্চালনায় একাডেমীর নির্বাহী সদস্য ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পিটিআইর প্রাক্তন সুপার রাজবিহারী চৌধুরী, প্রবীণ আইনজীবী একাডেমীর জীবন সদস্য শামসুল আলম কুতুবী, একাডেমীর সহ-সভাপতি ও কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছড়াকার মো. নাছির উদ্দিন, কক্সবাজার আদর্শ মহিলা কামিল (মাস্টার্স) মাদরাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক ও বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মো. নূরুল আবসার, রাজাপালং ফাজিল মাদরাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক ও শহরের লাবণী পয়েন্ট ‘আলিফ লাম মিম’ জামে মসজিদের খতিব রাহমত সালাম, নাইক্ষ্যংছড়ি হাজি আবুল কালাম সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক হাসান আহমদ সোবহানি, একাডেমীর শিশু ও মহিলা বিভাগের বিভাগীয় সম্পাদক কবি শামীম আকতার প্রমুখ আলোচনা করেন।
পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বিপদগামী সেনা সদস্যদের হাতে নিহত সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মুনাজাত করা হয়। মাওলানা রাহমত সালাম বিশেষ দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন।
এরআগে মো. নাছির উদ্দিন, আবৃত্তিকার কল্লোল দে চৌধুরী ও এম রফিক বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা পাঠ ও আবৃত্তি করেন।
২৬ আগস্ট জাতীয় কবির মৃত্যু বার্ষিকীর অনুষ্ঠান
কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৩৭৭তম পাক্ষিক সাহিত্য সভা আগামী ২৬ আগস্ট ২০১৬ শুক্রবার বিকাল ৪টায় কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত অনুষ্ঠান জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে কবির জীবনালেক্ষ নিয়ে আলোচনা করা হবে। অনুষ্ঠানে একাডেমীর সংশ্লিষ্ট সকলসহ জেলার কবি-সাহিত্যিক, সাহিত্যামোদি, সাহিত্যানুরাগী, চিন্তাশীল গবেষক, বুদ্ধিজীবীসহ সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুল অনুরোধ জানিয়েছেন।


শেয়ার করুন