বিরোধিতায় নেমেছে মালয়েশিয়ার ট্রেড ইউনিয়নগুলোর একটি অভিভাবক সংগঠন

বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে মালয়েশিয়ায় ঘোর বিরোধিতা

1439149037সিটিএন ডেস্ক :

আগামী তিন বছরে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় ১৫ লাখ শ্রমিক নিয়োগের যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তার বিরোধিতায় নেমেছে মালয়েশিয়ার ট্রেড ইউনিয়নগুলোর একটি অভিভাবক সংগঠন।

ইলেভেন্স মালয়েশিয়া প্ল্যান (১১এমপি) নামের ওই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে মালয়েশিয়ান ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেসের (এমটিইউসি) মহাসচিব এন. গোপাল কিশনাম বলেছেন, বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করলে মালয়েশিয়ার জনগণই চাকুরি আর ভালো বেতনের সংকটে পড়বে। আর এটা করে মালয়েশিয়া ২০২০ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদা লাভ করবে পারবে না।

‘১৫ লাখ (বাংলাদেশি শ্রমিক) আনার সরকারের প্রস্তাবের সঙ্গে আমি একমত নই। এটা কেলানটনের মোট জনসংখ্যার সমান। আমাদের এখানে এতো বিপুল সংখ্যক অবৈধ অভিবাসী থাকতে আমি এটা করার কোনো কারণ খুঁজে পাই না’, বলছিলেন গোপাল

মালয়েশিয়ান ইনসাইডার পত্রিকাকে তিনি বলেন, নিয়োগকর্তারা সস্তায় লোক পেলে স্থানীয় শ্রমিকদের চাকুরির আর কোনো আশা থাকবে না।

গোপাল বলেন, শ্রমিকদের বেতন না বাড়লে ২০২০ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদা অর্জন মালয়েশিয়ার জন্য সম্ভব হবে না।

গত জুনে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতু সেরি আহমাদ জাহিদ হামিদি বলেছিলেন, মালয়েশিয়ার বিভিন্ন খাতের নিয়োগকর্তাদের চাহিদা পূরণের জন্য বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ শ্রমিক আনা হবে।

তবে হামিদি বলেন, এসব বাংলাদেশি শ্রমিক ‘নোংরা, বিপজ্জনক এবং কঠিন’ কাজগুলো করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, মালয়েশিয়ার শ্রমিকরা এসব কাজ করতে আগ্রহী না হওয়ায় সরকারের পক্ষে আর কোনো বিকল্প নেই।

তবে গোপাল বলছেন, বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়লে দেশের শ্রমিকদের বেতন বাড়বে না। এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডের পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার ৪০ ভাগ স্থানীয় শ্রমিক মাসে ২০০০ রিঙ্গিটের (প্রায় ৩৯০০০ টাকা) কম বেতন পান।

অন্যদিক স্বামী ও স্ত্রী চাকুরি করেন এমন পরিবারের মাসিক আয় ৩৫০০ রিঙ্গিটের কম।

গোপালের প্রশ্ন, আগামী ৫ বছরে কি তাদের আয় দ্বিগুন হয়ে যাবে?

মালয়েশিয়ান এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের নির্বাহী পরিচালক দাতু শামসুদ্দীন বর্ধনও একই অভিমত প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, দেশে বিদেশি শ্রমিকদের ঢল নামলে স্থানীয়দের চাকুরির সুযোগ সঙ্কুচিত হবে।

এদিকে মালয়েশিয়ায় সরকারীভাবে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের বিরোধিতায় নেমেছে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানিকারকরা। কারণ সরকারিভাবে শ্রমিক পাঠানো হলে তাদের এই লোভনীয় ব্যবসা হাতছাড়া হয়ে যাবে।

অন্যদিকে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের তদারকির দায়িত্ব পেতে পারেন মালয়েশীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাই আবদুল হাকিম হামিদি। এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে।

 


শেয়ার করুন