প্রহরীর জন্য রাজিয়া-গফুর সিন্ডিকেটের দৌড়ঝাঁপ

Untitled-1 copyশাহেদ ইমরান মিজান, সিটিএন:
কক্সবাজার সদর খাদ্যগুদামে ডেপুটেশনে দায়িত্বরত নৈশপ্রহরী রিদুয়ানকে স্থায়ী করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বহুল আলোচিত রাজিয়া-গফুর সিন্ডিকেট। রামু খাদ্যগুদামের স্থায়ী নৈশপ্রহরী রিদুয়ানকে কক্সবাজার সদর খাদ্যগুদামে স্থীয় করতে তারা এই দৌড়ঝাঁপ চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তারা প্রায় সব প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করে ফেলেছেন। এই সংক্রান্ত একটি সুপারিশ ফাইল সদর খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার কাছে পৌঁছেছে। অভিযোগ উঠেছে, দুর্নীতিবাজ রাজিয়া-গফুর সিন্ডিকেট নিজেদের অপকর্মের সুবিধার্থে রিদুয়ানকে কক্সবাজার সদর খাদ্যগুদামে স্থায়ী করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তাই যে কোন মূল্যে রিদুয়ানকে স্থায়ী করতে দৌড়ঝাঁপ চালাচ্ছে এই সিন্ডিকেটটি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নানা কানাঘুষাও চলছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার সদর খাদ্যগুদাম এলাকার বাসিন্দা ও খাদ্যগুদামের ঝাড়–দার তমিজ উদ্দীনের পুত্র রিদুয়ান

। একই সাথে সদর খাদ্যগুদামের ওএমএস ডিলার আবদুল গফুরের ভাইও তিনি। রিদুয়ানের বর্তমান কর্মস্থল রামু খাদ্যগুদাম। কিন্তু ডেপুটেশনের দোহাই দিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে সদর খাদ্যগুদামে রয়েছেন। ডেপুটেশন থেকে এবার স্থায়ী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি।

অনুসন্ধানী সূত্র মতে, রাজিয়া-গফুর সিন্ডিকেট অবৈধভাবে সরকারি ওএমএস, ভিজিডি, টিআর, কাবিখা ও খয়রাতি প্রকল্পের চাল পাচার করছে। এর মধে সবচেয়ে বেশি দুনীর্তি হচ্ছে ওএমএস’র চাল নিয়ে। সরকার সাধারণ ভোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ওএমএস প্রকল্প চালু করেছে। ডিলারদের মাধ্যমে নির্ধারিত মূল্যে এই চাল বিক্রয়ের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু অনিয়মের মাধ্যমে ওএসএস পদ্ধতিতে চাল বিক্রয় করে না ওএমএস ডিলার আবদুল গফুর। তিনি এই প্রকল্পটি গায়েব করে চড়া মূল্যে বিক্রি করছে ওএমএস’র এসব চাল। একইভাবে ভিজিডি, টিআর, কাবিখা ও খয়রাতি প্রকল্পের চালও কালোবাজারে বিক্রয় করছে এই সিন্ডিকেটটি। এমনকি চুরি করে খাদ্য গুদামের সরকারি চাল পাচারের অভিযোগ রয়েছে রাজিয়া-গফুর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। এই চুরিতে সহযোগিতা করছে গফুরের বাবা খাদ্য গুদামের ঝাডুদার তজিমউদ্দিন ও ভাই নৈশপ্রহরী রিদুয়ান। তাদের মাধ্যমে গভীর রাতে খুচরা ভাবে চুরির চালগুলো পাচার করা হয়। এই সিন্ডিকেটে অন্যতম সদস্য নৈশপ্রহরী রিদুয়ান। গোপনে রাতের আঁধারে চাল পাচারসহ নানা অনিয়মে রিদুয়ানকে ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে ডিলার আবদুল গফুরের ভাই রিদুয়ান। তাই বিশ্বস্ত মানুষ হিসাবেও তাকে সদর খাদ্যগুদামে স্থায়ী করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে রাজিয়া-গফুর সিন্ডিকেট।

নাম প্রকাশ না শর্তে সদর খাদ্যগুদামের একটি সূত্র জানিয়েছে, নৈশপ্রহরী রিদুয়ানকে কক্সবাজারর সদর খাদ্য গুদামে স্থায়ী করতে দর খাদ্য গুদামের উপ-পরিদর্শক রাজিয়া সুলতানা রাজু, পরিদর্শক থোয়াই অং, সহকারী উপ-পরিদর্শক কামরুল হাসান এবং ওএমএস ডিলার আবদুল গফুর দৌড়ঝাঁপ চালাচ্ছে। এই জন্য উপ-পরিদর্শক রাজিয়া সুলতানা রাজু ও পরিদর্শক থোয়াই অং এক সুপারিশপত্র পাঠিয়েছে সদর খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা শাহজামাল বরাবর। শাহজামালও সুপারিশ করে পত্রটি জেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার কাছে পাঠানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সেখানে অনুমোদন পেলে রিদুয়ানকে নিয়ে রাজিয়া-গফুর সিন্ডিকেটের উদ্দেশ্য হাসিল হবে- এমনটি মনে করছে সংশ্লিষ্ট অনেকে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, রিদুয়ান স্থায়ী হলে সদর খাদ্য গুদামের চাল লোপাটকারী সিন্ডিকেটটি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে। কেননা চালপাচারের ক্ষেত্রে বড় অবদান রাখে নৈশপ্রহরী রিদুয়ান।
জানতে চাইলে সদর খাদ্য গুদামের পরিদর্শক থোয়াই অং বলেন, ‘এতে আমার কোনো হস্তক্ষেপ নেই। আমার কাছে আবেদন করলে তা ফরওয়ার্ডিং করে পাঠাতে হয়। নিয়ম মতে তাই করেছি।’
সদর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শাহজামাল বলেন, ‘ আমার কাছে সুপারিশপত্র এসেছে। তবে রিদুয়ানের ব্যাপারে আমার জানা নেই। এখন জানলাম, সে ব্যাপারে আমি খোঁজ নিচ্ছি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


শেয়ার করুন