প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি, তাই এবার পাশের হার কম

04_6885সিটিএন ডেস্ক:

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গত বছরের তুলনায় এবছর পাশের হার কমেছে ৮.৭৩ শতাংশ। এই হার কমার পেছনে প্রশ্নপত্র ফাঁস না হওয়াকে অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন শিক্ষাবিদরা। তারা বলছেন, এবছর প্রশ্নপত্র ফাঁস না হওয়ায় ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।
২০১৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৬৯ দশমিক ৬০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাশ করেছে। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১০ লাখ ৬১ হাজার ৮৮৪ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭২ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪২ হাজার ৮৯৪ জন।
আর ২০১৪ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাশ করেছিল। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৭০ হাজার ৬০২ জন। অর্থাৎ গতবারের তুলনায় এবারে সার্বিক পাশের হার কমেছে ৮.৭৩ শতাংশ।
শিক্ষাবিদ মো. কায়কোবাদ প্রিয়.কম-কে বলেন,
গতবার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল কিন্তু এবার তা হয়নি। পাশের হার কমার এটি অনেক বড় কারণ।
প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার প্রভাব এবারের ফলাফলে পড়েছে জোরালোভাবে এমনটাই মনে করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান। তিনি প্রিয়.কম-কে বলেন,
শিক্ষার্থীদের ওপর প্রশ্ন ফাঁসের একটা প্রভাব পড়ছে। যার কারণে তারা প্রতিবছর বিভ্রান্ত থাকে। আর এই বিভ্রান্তিও পাশের হার কমার কারণ।
এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাও দায়ী বলে মনে করেন এই দুই শিক্ষাবিদ।
data
যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মন্তব্যে উল্লেখ করেছেন, বিএনপি-জামায়াত জোট যদি আত্মঘাতী সহিংস কর্মকাণ্ড না চালাত তাহলে পাশের হার আরও বেশি হতো। আর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ দাবি করেছেন, পরীক্ষার সময় হরতাল অবরোধের কারণে পাশের হার কমেছে।
মো. কায়কোবাদ আক্ষেপ করে বলেন, ‘এখনকার শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা মনেই করে সে পাশ করবেই। কারণ তাকে পাশ করিয়ে দেয়া হচ্ছে।’ এজন্য এদেশে বিশ্বমানের পড়াশোনা না হওয়া এবং সঠিকভাবে শিক্ষা গ্রহণে শিক্ষার্থীদের অনাগ্রহকে দায়ী করেন তিনি।
সেইসাথে মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন,
সরকারের একটি মহল কয়েক বছর থেকে মূল কাজের বদলে শিক্ষা ব্যবস্থার সফলতাকে একটু বাড়িয়ে দেখাতে চেয়েছিল। প্রচারণায় মনোযোগ ছিল তাদের বেশি। এটিও পাশের হার কমার কারণ।
এছাড়া পাশের হার কমার পেছনে অন্যান্য কারণ উল্লেখ করে মজিবুর রহমান বলেন, ‘ইংরেজি শিক্ষক স্বল্পতার কারণে শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে দুর্বল, এটি একটি কারণ। এছাড়া এবার ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ নামে একটি নতুন বিষয় যুক্ত করার কারণে গ্রামের শিক্ষার্থীরা এতে ভালো করতে পারেনি।’ এটিকেও পাশের হার কমার কারণ বলে উল্লেখ করেন মজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি শিক্ষার্থীকে আমরা একই পাল্লায় মাপি। কার সক্ষমতা কতখানি সেটা আমরা বিচার করি না। এটি একটি বড় সমস্যা।’ তাই পরিবার ও সমাজের চাপিয়ে দেয়া অসুস্থ প্রতিযোগিতায় কোনো শিক্ষার্থীকে নামিয়ে না দেয়ার পরামর্শ দেন অধ্যাপক মজিবুর রহমান।
আর ভালো মানের শিক্ষাপদ্ধতির জন্য প্রশ্ন ফাঁস, জালিয়াতি এসব যেন না হয় সেজন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরামর্শ দেন মো. কায়কোবাদ।


শেয়ার করুন