ভূমিদস্যুদের তান্ডব, লবণ লুট, বাসা-বাড়ি ভাংচুর

পোকখালীতে সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি লবণ চাষীরা: বাঁচাতে প্রতিবাদ সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজার ঈদগাঁও উপজেলাধীন পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী এলাকায় মূল মালিকের কাছ থেকে বর্গা নিয়েও সন্ত্রাসিদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন লবণ ব্যবসায়ি ও চাষীরা। চিহ্নিত সন্ত্রাসিরা বারবার লবণ মাঠে হানা দিয়ে উৎপাদিত লবণ লুট ও চাষীদের ঘর ভেঙ্গে নিয়ে গেছে।

সশস্ত্র এই সন্ত্রাসিরা চলমান লবণ মৌসুমে বারবার হানা দিয়ে উৎপাদিত সব লবণই নিয়ে গেছে। তারা চাষীদের প্রতিনিয়ত হুমকি ও হত্যার ভয় দেখিয়ে যাচ্ছে।

এমন অভিযোগ তুলেছেন লবণ ব্যবসায়ী ঈদগাঁও উপজেলার পূর্ব পোকখালী সিকদার পাড়ার বশির আহমদ, একই ইউনিয়নের ইছাখালী এলাকার মোক্তার আহমদ ও বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী পাগলীর আগা এলাকার মো. শাহজাহান ভূট্টো, জসিম উদ্দিন, আইয়ুব আলী, রুবেল, শুক্কুর, হেলাল, সাদ্দাম হোসেন, নুরুল কাদের।

তাদের মতে, গোমাতলী এলাকার মোহাম্মদ হোসেন ওরফে রাইফেল মাছন, আবু সৈয়দ, আমানু, বন্দুক নকী, নুরুচ্ছফা, আবদুল হক, মোজাহেরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসি লবণ মাঠে হানা দিয়ে লবণ লুট ও ঘরবাড়ি ভাংচুর করে নিয়ে যায়। এই সন্ত্রাসিদের ‘গডফাদার’ হিসেবে কাজ করছেন জনৈক রাজন নামের এক ব্যক্তি।

লবণ চাষীদের অভিযোগ, রাজনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসিরা শুধু হামলা ও লুট করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে লবণ চাষীদের জেলও খাটিয়েছেন অনেকবার।

গত শুক্রবার এই সন্ত্রাসি কর্মকান্ডের প্রতিবাদে পোকখালী মুসলিম বাজারে প্রতিবাদ সভাও করেছেন লবণ চাষী ও ব্যবসায়ীরা। এই সভায়ও একই অভিযোগ তুলে বক্তব্য দিয়েছেন চাষী, ব্যবসায়ি ও স্থানীয়রা। প্রতিবাদ সমাবেশে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, দু”বেলা দু”মুটো ভাত খেতে সহ্য করতে হচ্ছে প্রভাবশালীদের নির্যাতন। কোন মতে কিছু জায়গা বর্গা নিয়ে চাষ করছি, তাও আবার ভুমিদস্যুদের রোষানলে পড়ে প্রতিদিনের পরিশ্রম পানিতে মিশে যাচ্ছে। পারছিনা সইতে, পারছিনা কইতে। কারণ মুখ থেকে বের হলেই জেল-জুলুম অনিবার্য। তারা এতই প্রভাবশালী তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কেউ নেই। আমরা নিজদেশে পরবাসী হয়ে বসবাস করছি। তারা বলেন, সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হুমকীতে জানের কোন নিরাপত্তা নেই। ওই সন্ত্রাসীদের কবল থেকে মুক্ত করে আমাদের জমি আমাদের ফরিয়ে দিয়ে দু”বেলা দু”মুটো আহারের সুযোগ দিয়ে পরিবার পারিজন নিয়ে বাঁচার ব্যবস্থা করার জোরদাবী জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।
সুত্র মতে, রামু উপজেলাধীন জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের উত্তর মিঠাছড়ি এলাকার ওবাইদুল হক চৌধুরী গংদের কাছ থেকে ১০ বছরের চুক্তিতে লবণ মাঠ বর্গা নেন ওই ব্যবসায়ীরা। তারা অন্য আরও চাষীদের সেই জমি লাগিয়ত করেন। কিন্তু জমির মালিক না হয়েও সন্ত্রাসিরা চাষী ও ব্যবসায়ীদের নির্যাতন নিপীড়ন ও লুটপাট করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। ওই লবণ ব্যবসায়ি ও চাষীদের অভিযোগ, তাদের বর্গা নেয়া লবণ মাঠের অবৈধ দখল নিতে প্রভাবশালী একটি মহল ভাড়াটে সন্ত্রাসি দিয়ে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটাচ্ছে। চাষী ও ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলেই তাদের উপর নেমে আসে নানা নির্যাতন। এমনকি তাদের আরামের ঘুম হারাম করে দেয় সন্ত্রাসীরা। এবিষয়টি চাষীপক্ষ প্রশাসনকে জনালে থানা প্রশাসন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বর্গা নেয়া লবণ ব্যবসায়ী ও চাষীরা এই সন্ত্রাসিদের কবল থেকে তাদের ও সাধারণ লবণ চাষীদের রক্ষা করার জন্য প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

শুক্রবারের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন লবণ চাষী মোশতাক আহমদ, বশির আহমদ, জসিম উদ্দিন, আইয়ুব আলী, রুবেল, শুক্কুর, হেলাল, সাদ্দাম হোসেন, নুরুল কাদের প্রমূখ।


শেয়ার করুন