পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায় ভারতীয়রা!

1444932214-400x266সিটিএন ডেস্ক:
পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্ম প্রচারণার আড়ালে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা চলছে। এর নেপথ্যে রয়েছে ভারতীয় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে টার্গেট করে খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে অস্ত্র ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের স্থানীয় এজেন্টরা। নিরীহ ও দরিদ্র পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অশিক্ষা ও কুসংস্কারকে পুঁজি করে ধর্ম প্রচারণার আড়ালে চলছে অস্ত্রের অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা।
বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন দুর্গম এলাকার বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছ থেকে সংগ্রহ করে এসব অস্ত্র বাংলাদেশের বিভিন্ন পাহাড়ি ও দেশীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে বিক্রি করা হয়। এর নেপথ্যে পালিয়ান নামে এক ভারতীয় অস্ত্র ব্যবসায়ীর জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে র‌্যাব।
র‌্যাব জানায়, পালিয়ান ভারতের মিজোরাম এলাকায় থাকে। সে অস্ত্র ব্যবসার জন্য বেছে নিয়েছে মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও ভারত- এই তিন রাষ্ট্রের সীমান্তের সংযোগস্থলটিকে। গহীন জঙ্গল থাকায় ওই এলাকায় কোনো দেশের আইন-শৃক্সখলা বাহিনীর পক্ষেই কোনো ধরনের অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না।
দীর্ঘদিন ধরে নজরদারির পর এ ধরনের একটি চক্রের তিন সদস্যকে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বান্দরবান জেলার সদর থানাধীন মধ্যম পাড়াস্থ মাস্টার পাড়া শপিং সেন্টারের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক তিনজনই উপজাতীয় নাগরিক। এরা হলো, লাল পিয়ান থা বোম (৪৮), বাসু বোম (৪৫) ও সিনথাওয়াই চাক। তাদের বাড়ি বান্দরবান জেলায়। এসময় তাদের কাছ থেকে তিনটি একে-৪৭ রাইফেল, ২টি বিদেশি পিস্তল, ৫টি ম্যাগজিন, ৪টি গুলি, ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে মিডিয়াকে অবহিত করতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় র‌্যাব-৭ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় আটক তিন উপজাতীয়কে উপস্থিত করা হলেও তারা সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারণার আড়ালে অস্ত্র ব্যবসা চলে আসছে। অস্ত্রগুলো মূলত পার্বত্য তিন জেলার বিভিন্ন বিবদমান গোষ্ঠীর কাছে বিক্রি করা হয়।
র‌্যাব অধিনায়ক জানান, আটক তিনজনের মধ্যে দুইজন বোম সমপ্রদায়ের। অপরজন চাক সমপ্রদায়ের। অস্ত্র ব্যবসায়ীরা তাদের কাজে বিভিন্ন উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর সদস্য ছাড়াও কিছু কিছু বাঙালিকে বেছে নেয়। তবে বাঙালিরা সাধারণত ধর্ম প্রচারের কাজ করে না। ভাষাগত সুবিধা কাজে লাগিয়ে ধর্ম প্রচার করে উপজাতীয়রা। এর আড়ালে চালিয়ে যায় অস্ত্র ব্যবসা। তিনি বলেন, একে-৪৭ রাইফেলগুলো বান্দরবান থেকে প্রতিটি ৪ লাখ টাকায় কেনা হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের কাছে ২০ লাখ টাকায় বিক্রয় করার কথা ছিল।
এ ঘটনায় বান্দরবান জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানান। গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আরো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীকে এরা অস্ত্র সরবরাহ করে কি না অথবা পার্বত্য চট্টগ্রামের কোন কোন এলাকায় তাদের অস্ত্রের মজুদ রয়েছে, পাহাড়ি সন্ত্রাসী ছাড়াও দেশি সন্ত্রাসীদের মধ্যে কারা এদের ক্রেতা, রিমান্ডে এনে এসব বিষয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে র‌্যাব অধিনায়ক জানান।-ইত্তেফাক।


শেয়ার করুন