পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রস্তুত প্রশাসন

2015_12_28_22_09_20_WI8Kn4q1PuelogOMCAc8X2nQB4TCFJ_originalএম.এ আজিজ রাসেল :

ঈদের টানা নয় দিনের সরকারি ছুটিতে কক্সবাজার ভ্রমণে আসবে লাখো পর্যটক। তাই আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশ। এ নিয়ে ইতিমধ্যে কয়েক দফা বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল রবিবার আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা ও আইন-শৃংখলা বিষয় সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যেগে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন, পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন। সভায় দেশী-বিদেশী পর্যটকদের বিশেষ নিরাপত্তা প্রদান, হোটেল-মোটেলসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা সক্রিয়করণে জোরদার, সমুদ্র সৈকতে লাইটিং ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠকে জানানো হয়, ঈদের ৯ দিনের ছুটিতে আসা কয়েক লাখ পর্যটকদের সার্বিক পর্যবেক্ষণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নিয়োজিত থাকবে র‌্যাব, পুলিশ, ট্যুরিষ্ট পুলিশ, স্ট্রাইকিং ফোর্স, গোয়েন্দা পুলিশ, পর্যটক বেশে মহিলা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহীনির ৫ শতাধিক সদস্য। এছাড়া যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের সর্বাত্মক তৎপরতা থাকবে। বর্ষার এই মৌসুমে উত্তাল সমুদ্রে গোসলে নেমে কোনো পর্যটক যেন বিপদে না পড়েন সে ব্যাপারে কড়া নজরদারি রাখা হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকতের সুগন্ধা, লাবণী পয়েন্টসহ মেরিন ড্রাইভ সড়কের দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী সৈকতে পুলিশের পৃথক পাঁচটি চৌকি স্থাপন করা হয়েছে। টহলে থাকবে একাধিক দল। সমুদ্রে গোসলসহ পর্যটকদের সচেতনতায় ট্যুরিস্ট পুলিশ নানা প্রচারণা শুরু করেছে। এছাড়া কিছু হোটেল টমটম (ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক) চালকদের অগ্রিম টাকা দিয়ে পর্যটক ধরার ফাঁদ বসিয়েছে। পর্যটকেরা বাস থেকে নামলেই টমটমচালকেরা ব্যাগ নিয়ে হোটেলে নেওয়ার জন্য টানাটানি শুরু করেন। এ নিয়ে পদক্ষেপ নিতে ট্রাফিক পুলিশকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
সহকারী ট্রাফিক পুলিশ সুপার আবু সালাম চৌধুরী বলেন, পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়ে শহরের ট্রাফিক-ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। বিশেষ করে সৈকতের কলাতলী সড়কে দীর্ঘ যানজট লেগে থাকে। তবে ঈদের ছুটিতে যানজট নিরসনে আমরা সদা নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আশা করছি পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্রাফিক পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি বলেন, পর্যটকরা কক্সবাজারের মেহমান। তাই তাদের সম্মান রক্ষায় সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয়দের আন্তরিক হতে হবে।
পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন পর্যটন স্পটে অবস্থান নেবে। বিশৃঙ্খলাকারী বা পর্যটক হয়রানী করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, কিছু গেস্টহাউস ও কটেজমালিক পর্যটকদের কক্ষ বরাদ্দের বিপরীতে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ভ্রমণে আসা পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কক্ষ ভাড়া আদায় করা যাবে না। একই সঙ্গে খাবারের চড়া দাম কেউ নিতে পারবে না। কেউ তা না মানলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া পর্যটক আসলে কক্সবাজারের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। তাই ব্যবসায়ীসহ সবাইকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিরলস ভূমিকা রাখতে হবে।


শেয়ার করুন