পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার একমাত্র পথ সবুজ অর্থনীতি গড়া : প্রধানমন্ত্রী

সিটিএন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি জোরদার করার মাধ্যমে দেশের সবুজ উন্নয়ন নিশ্চিত করে পরিবেশগত সুরক্ষা এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রিন হাউস গ্যাস ইফেক্টের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে সবুজ অর্থনীতি গড়ার পথই একমাত্র বিকল্প।’
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়ন, দূষণমুক্ত, পরিবেশ বান্ধব ও টেকসই সবুজ অর্থনীতি গড়তে হলে আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণকে মূল ধারায় নিয়ে আসতে হবে। তিনি প্রতিটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে পরিবেশগত প্রভাব ভালোভাবে নিরূপণ করে দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্যও সংশ্লিষ্টদের আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইসস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান এবং পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা ২০১৬ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। আরও বক্তব্য রাখেন পরিবেশ ও বন সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ, পরিবেশ ও বন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রইসুল আলম মন্ডল এবং প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুস আলী।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু এওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনর্জাভেশন-২০১৬, জাতীয় পরিবেশ এওয়ার্ড ২০১৬ বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০১৫ ও সামাজিক বনায়নের লভ্যাংশের চেক প্রদান করেন।
গ্রিন হাউস গ্যাস ইফেক্টের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এই পরিস্থিতিতে টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে সবুজ অর্থনীতি গড়ার পথই একমাত্র বিকল্প উল্লেখ করে বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়ন, দূষণমুক্ত, পরিবেশ বান্ধব ও টেকসই সবুজ অর্থনীতি গড়তে হলে আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণকে মূল ধারায় নিয়ে আসতে হবে।
প্রতিটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে পরিবেশগত প্রভাব ভালোভাবে নিরূপণ করা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদী দূষণ, পাহাড় কাটা ও কৃষি জমিতে রাসায়নিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধসহ পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
জাতি হিসেবে পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব সকলের এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সবাইকে বৃক্ষরোপণ করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নদী দূষণের ক্ষেত্রে রাসায়নিক সার যেমন আছে, আছে বর্জ্য আর জলযানও। এসব থেকে নদী ব্যাপকভাবে দূষণ হয়ে থাকে। এ বিষয়ে সবার সতর্ক থাকতে হবে।’
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বনভূমি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ম্যানগ্রোভ বন তৈরি করতে হবে। নারকেল বাগান তৈরি করতে হবে। যার মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে শিল্পাঞ্চল থাকবে, সেখানে জলাধারের ব্যবস্থা করতে হবে। যেখানে আবাসিক এলাকা তৈরি করা হবে, সেখানেও জালাধারের ব্যবস্থা করতে হবে। যারা শিল্পাঞ্চল-আবাসিক এলাকা তৈরি করবেন, তাদেরই জলাধারা তৈরি করতে হবে। পারিবেশ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখতে প্রতিটি এলাকায় জলাধার রাখতে হবে।’
এজন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়কে নজরদারি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি তাদেরকে অব্যাহত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে রাজউক’সহ সংশ্লিষ্টদের চাপ প্রয়োগেরও আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে ‘পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ’ জারী করেন। তখন পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়। এ অধ্যাদেশ ও প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় সৃষ্টি হয়েছে আজকের পরিবেশ অধিদপ্তর।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে অনুচ্ছেদ ১৮(ক) সংযুক্ত করেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন’। তাই এটি সংরক্ষণ করা আমাদের আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।
শেখ হাসিনা বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সরকারের কার্যক্রমের স্বীকৃতি হিসাবে আমাকে গত বছর জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পরিবেশ পদক “চ্যাম্পিয়ন’স অব দি আর্থ” প্রদান করে। যা আমি দেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছি। কারণ তারাই ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত করেছে এবং আমরা সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, জীব বৈচিত্র রক্ষা করার সুযোগ পেয়েছি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের পক্ষ থেকে ১৯৮৫ সাল থেকে ১ আষাঢ় সারাদেশে বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে সবাইকে পুনরায় এই বর্ষার মৌসুমে অন্তত একটি করে হলেও ফলজ, বনজ ও ভেষজ গাছের চারা রোপণে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিককালে একটু বন্যা শুরু হয়েছে। বন্যাটা এই সময়ে আমাদের দেশে স্বাভাবিক একট ব্যাপার। তবে, মাঝে মাঝে বন্যা খুব বড়ো আকারে আসে কাজেই বন্যাদুর্গত মানুষের প্রতি সাহয্যের হাত বাড়াবার জন্য সকলের প্রতি তিনি আহবান জানান। তিনি বন্যার ক্ষতির পাশাপাশি এর উপকারি দিক হিসেবে ভূগর্ভের পানির স্তর যে নিচে নেমে যায় তা রিচার্জ হয় বলে উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি পলিবাহিত ব-দ্বীপ অঞ্চল। এখানে বন্যা আমাদের ভূমিও পুনর্গঠন করে। কিন্তু ,বন্যার ফলে মানুষের যে ক্ষতি সেই ক্ষতিটা যাতে না হয় তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ আমাদের নেয়া প্রয়োজন। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের নদীগুলি ড্রেজিং করা, পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং নদীর প্রবাহ সচল রাখা’সহ নানা কর্মসূচি তাঁর সরকার হাতে নিয়েছে এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে ।
পরিবেশ রক্ষা আমাদের একান্তভাবে দরকার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তায়ন করে যাচ্ছে এবং তা করে যাচ্ছে বলেই আজ বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিশ্বে জলবায়ু জনিত ক্ষতি যখন দেখা দিয়েছে তখন আমরা কারও জন্য অপেক্ষা করি নাই। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন ফান্ড তৈরি করে এই পরিস্থিতি মোকাবেলার উদ্যোগ নেই। যাতে করে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা যায়।
তিনি বলেন, আমরা এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি বলেই আজ বিশ্ব কূটনিতিতে স্বল্পোন্নত দেশগুরোর পক্ষে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কনভেনশনের আওতায় গঠিত গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড বোর্ড,এ্যাডাপটেশন ফান্ড বোর্ড, এক্সিকিউটিভ কমিটি অন লস এন্ড ড্যামেজ,কনসালটেটিভ গ্রুপ অব এক্সপার্টস এন্ড মন্ট্রিল প্রোটোকল ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি’র সদস্যপদ লাভ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারো জন্য বসে না থেকে প্রথম বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্যাটেজি এন্ড অ্যাকশন প্লান (বিসিসিএসএপি) প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য নিজস্ব অর্থেই ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করি। ২০০৯ সাল থেকে বিগত ৭ বছরে দেশের মোট বনভূমির পরিমান ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। আমরা এটকে ২৫ শতাংশে নিয়ে যেতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় পরিবেশ উন্নয়ন, জীববৈচিত্র রক্ষা এবং বন ভূমি সংরক্ষণ ও বৃক্ষ রোপণ কার্যক্রমের ব্যাপক প্রসার তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের তথ্য তুলে ধরে বলেন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সরকার ন্যাশনাল বায়োডাইভার্সিটি ষ্ট্রাটেজি এন্ড অ্যাকশন প্লান (এনবিএসএপি) প্রণয়ন করেছে। ‘বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন, ২০১৬’ ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে, আগামী সংসদের অধিবেশনে এটি পাশ করা হবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০’ প্রণয়নের কাজ চলছে। জীব বৈচিত্র সংরক্ষণে গাজীপুরে ৩৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এবং চট্রগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ রাসেল এভিয়ারি ও ইকোপার্ক স্থাপন করা হয়েছে। এ বছর বন বিভাগ প্রায় ৩ কোটি চারা উত্তোলন করেছে।
জীববৈচিত্র রক্ষায় নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হবে। যার মাধ্যম জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে-উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর সরকার নিজস্ব তহবিল হতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় গঠিত ট্রাস্টে ইতোমধ্যে ৩,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এই ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় এ পর্যন্ত ৪৩৪টি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক ইতোমধ্যে গ্রীন ব্যাঙ্কিং কার্যক্রম শুরু করেছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ২০১৫ সালে ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তিতে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে। একইসঙ্গে রান্নায় জৈব জ্বালানী ব্যবহার অর্ধেকে নামিয়ে আনতে সারাদেশে বন্ধুচুলা ব্যবহার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শিল্প বর্জ্য অপসারনে তাঁর সরকারের গৃহিত থ্রি আর (হ্রাস, পুনঃব্যবহার ও পুনঃচক্রায়ণ) কর্মকৌশল গ্রহণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার শূণ্য বর্জ্য পদ্ধতি অবলম্বনে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করছে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ৩৯টি সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা করেছে। বন অধিদপ্তর ইতোমধ্যে ৭১,০২২ হেক্টর ভূমিতে সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে বাগান তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, এ সকল রক্ষিত এলাকায় সহ-ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করে স্থানীয় জনগণের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করেছে। গড়ে তোলা বাগান থেকে ২৫,৩৪৫ হেক্টর ব্লক বাগান এবং ১১,৯২৬ কিলোমিটার স্ট্রীপ বাগান কেটে পুন: বনায়ন করা হয়েছে। এখান থেকে আয় করা ২৬৪ কোটি ৯২ লাখ ২১ হাজার ৬৮৮ টাকার প্রায় সব অর্থ সামাজিক বনায়নে সম্পৃক্ত ১ লাখ ২০ হাজার ৪১৩ জনের মধ্যে বিতরণ করেছে ।
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গড়াই নদী খনন করেছি। সুন্দরবনে বাঘের ব্রিডিং পয়েন্ট বৃদ্ধির মাধ্যমে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। কিছু কিছু বনজ সম্পদের আহরণ সীমিত করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ৯৬ সালে সরকার গঠনের পর সিলেট ও মৌলভীবাজার এলাকায় ইকোপার্ক সৃষ্টি করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবুজ বেষ্টনী প্রকল্প প্রাকৃতিক দূর্যোগ এর কবল থেকে উপকূলীয় জনগণের জানমালের হেফাজত করছে। কক্সবাজারে যে ঝাউবন দেখা যায় সেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লাগিয়ে গেছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকবেলায় বঙ্গবন্ধু ওই ঝাউবন লাগিয়েছিলেন।
রাজধানী ঢাকার পরিবেশ উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশের বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীকে “প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা” হিসেবে ঘোষণা করে তা ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় হাজারিবাগের ট্যানারি স্থানান্তরে মালিককের ধীরগতিতে অসন্তয় প্রকাশ করে অবিলম্বে ট্যানারী শিল্পসমূহ সাভারের হরিণধরা ট্যানারী শিল্প স্থানান্তর করার জন্য সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম জোরদার করার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের দূষণমুক্ত উন্নত প্রযুক্তির ইটভাটা প্রচলনের কার্যক্রম গ্রহণের কথাও উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশের সামুদ্রিক সম্পদকে কাজে লাগানোর জন্য সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে বলেন, ভারত ও মায়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা মীমাংসার ফলে বঙ্গোপসাগরে প্রাপ্ত ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকার সামুদ্রিক জীববৈচিত্র রক্ষার কার্যক্রম গ্রহনের বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে।
তিনি দেশকে সবুজে সবুজে ভরে তোলা এবং। প্রত্যেকে অন্তত একটি করে বনজ, ফলজ ও ঔষধি চারা রোপণ করা এবং সবুজ অর্থনীতি নির্ভর ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে জাতীয় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন প্রাঙ্গণে একটি তেঁতুল গাছের চারা রোপণ করেন এবং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রর পাশে পরিবেশ মেলা ও বৃক্ষমেলা ২০১৬’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং মেলা ঘুরে দেখেন।
সূত্র : বাসস

 


শেয়ার করুন