নড়াইলে ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ মাশরাফির ৩২তম জন্মদিন পালিত

সিটিএন ডেস্ক:
গতকাল ছিল ৫ই অক্টোবর। এদিনে ৩২ বছরে পা দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সীমিত ওভারের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতূর্জা। ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ খ্যাত টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি ১৯৮৩ সালের এই দিনে নড়াইল শহরে তার নানা বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। এ দিনটির আরও বিশেষত্ব রয়েছে। কারণ ২০১৪ সালের (৫ই অক্টোবর) এই দিনেই জন্ম নেয় মাশরাফি ও সুমি দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান সাহেল মর্তুজা। তাই অধিনায়ক মাশরাফির জন্য এ দিনটি অন্যরকম আনন্দের বটে।
২০০১ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একদিনের ক্রিকেটে অভিষেক হয় মাশরাফির। মাশরাফির বাবার নাম গোলাম মর্তুজা স্বপন। মায়ের নাম হামিদা মতূর্জা। মাশরাফির ডাক নাম  কৌশিক। তিনি এ নামেই নড়াইলে সমধিক পরিচিত। ১৯৯১-এর দিকে মাগুরায় বিকেএসপির প্রতিভা অন্বেষণ ক্যাম্পের বিকেএসপি কোচ বাপ্পির সান্নিধ্যে এসে বোলিংয়ের অনেক মৌলিক বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হন। পরের বছর জাতীয় কোচ ওসমান খান নড়াইলে এক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প চালাচ্ছিলেন। ওই সময় মাশরাফি খুলনায় খেলার আমন্ত্রণ পান। খুলনায় তার গতি ও সুইং হইচই ফেলে দেয়। সেই সূত্রে খুলনা বিভাগীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে সুযোগ এবং ঢাকায় আসা। পরবর্তী সময়ে সুযোগ পান জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। সে সময় তার বোলিং কোচ অ্যান্ডি রবার্টসের পরিচর্যায় পাল্টে যান মাশরাফি। অনূর্র্ধ্ব ১৯ দলে থাকতে মাশরাফি দারুণ পারফরম্যান্সের কারণে জিম্বাবুয়ে দলের বিরুদ্ধে ‘এ’ দলের খেলায় সুযোগ পান।  আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে তার নাম হয়ে যায় ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। এরপর আর ইনজুরি ছাড়া কেউ মাশরাফি বিন মতূর্জাকে আটকাতে পারেনি। খুব অল্প সময়েই তিনি তারকা খ্যাতি পান। ছোটবেলাটা কেটেছে দস্যিপনায়, গাছে চড়ে, স্কুল পালিয়ে চিত্রা নদীতে সাঁতরে, ফুটবল আর ব্যাডমিন্টন খেলে। ১৫৭টি ওডিআই খেলা মাশরাফির ঝুলিতে রয়েছে ২০০ উইকেট। সেরা বোলিং ২৬ রানে ৬ উইকেট। এ ছাড়া ৩৬টি টেস্ট ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৭৮ উইকেট। আর ৩১টি ২০ ম্যাচে নিয়েছেন ২৬ উইকেট। শুরুতে শুধু বোলার হিসেবে জনপ্রিয়তা পেলেও পরবর্তী সময়ে অলরাউন্ডার হিসেবে সুনাম কুড়ান। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ৩৬ টেস্ট ম্যাচে ৭৮ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি তিন ফিফটিসহ ৭৯৭ রান করেন তিনি। বোলিংয়ের সফলতার পাশাপাশি রয়েছে সফল অধিনায়কের কৃতিত্বও। ২০০৬ সালে ক্রিকেট মাশরাফি ছিলেন ওয়ান ডে খেলায় বিশ্বের সর্বাধিক উইকেট শিকারি। ইনজুরির কারণে অনেক দিন ক্রিকেটের বাইরে থাকতে হয় তাকে। ১৪ বছরের ক্যারিয়ারে ইনজুরিতে পড়েন ১১বার। এই ইনজুরির কারণেই ঘরের মাঠে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে খেলা হয়নি তার।
এদিকে, নড়াইলের গর্ব এই প্রিয় ক্রিকেটার কৌশিকের (মাশরাফির ডাক নাম) জন্মদিনে পৃথক পৃথক ভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নড়াইলের সর্বস্তরের মানুষ। জেলার কালিয়া উপজেলার আবাহনী ক্রীড়াচক্র কেক কেটে ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে মাশরাফির জন্মদিন পালন করেছে। এ ছাড়া প্রিয় খেলোয়াড়ের জন্মদিনকে শুভেচ্ছা জানাতে ভুল করেননি তার ভক্ত-সর্মথকরা। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ফেসবুক-টুইটারে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন প্রিয় কৌশিককে।


শেয়ার করুন