নির্যাতিত নারীর ভিডিও সরাতে বিটিআরসিরকে নির্দেশ

সিটিএন ডেস্কঃ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও সিডি বা পেনড্রাইভে রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তা সরিয়ে নিতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর বক্তব্য গ্রহণে পুলিশ প্রশাসনের অবহেলা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন আদালত।

কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আদালত বলেছেন, কমিটিতে নোয়াখালী জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও চৌমুহনী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ থাকবেন।

ওই ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন আদালতের নজরে এনে ভিডিও অপসারণসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনার আরজি জানায় একদল আইনজীবী। শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ রুলসহ ওই আদেশ দেন।

আদালত ওই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে এবং ভুক্তভোগী নারীকে রক্ষার অবহেলায় ওই থানার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নির্যাতনের ঘটনায় করা মামলার সর্বশেষ অবস্থা ২৮ অক্টোবরের মধ্যে জানাতে বেগমগঞ্জ থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ভুক্তভোগী নারীর পরিবারকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে আসা খবর আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।

পরে আদালত তাঁকে এ বিষয়ে লিখিত আবেদন দিতে বলে বেলা আড়াইটা শুনানির সময় নির্ধারণ করেন। আদালতে আবদুল্লাহ আল মামুন ছাড়াও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিনুদ্দিন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই পান্না , সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও রাশেদা চৌধুরী শুনানিতে অংশ নেন। তাঁরাও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আরজি জানান।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। আদালত শুনানি নিয়ে ২৯ অক্টোবর পরবর্তী দিন রেখেছেন।

গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা এ ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করে। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

এ ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামি বাদলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার বাকি তিনজন হলেন দেলোয়ার, রহমত উল্লাহ ও আবদুর রহিম।
থানা সূত্র জানায়, নির্যাতনের শিকার ওই নারী গতকাল রোববার দিবাগত রাতে বেগমগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করেন। একটি মামলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে, অন্যটি পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে।


শেয়ার করুন