সিটিএন ডেস্ক:
নগরীর আম্বরখানা এলাকায় প্রকাশ্যে রাজপথে ফেলে কর্মজীবী নারীকে পেটানোর ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিষয়টি সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। এছাড়াও আজ এলাকাবাসী নগরীতে মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।
এদিকে, নির্যাতনের শিকার নাজমা আক্তার বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার বিষয়টি বাংলামেইলকে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহলে আহমদ।
তিনি বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাতে নাজমা আক্তার নিজে বাদী হয়ে আম্বরখানা কলোনীস্থ নিপুণ টেইলার্সের মালিক তপু ও অপু নামের এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।’
ওসি সোহেল আরো বলেন, ‘এখনো কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
এদিকে, নাজমা আক্তারের ওপর বর্বর নির্যাতনকারীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। বৃহস্পতিবার নগরীর কুয়ারপাড় এলাকা থেকে মিছিলটি বের হয়ে আম্বরখানা পয়েন্টে হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
মতিউর রহমানর পরিচালনায় নাজমা আক্তারের চাচা শামীম মিয়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- রেজাউল করিম রানা। জাহান চৌধুরী, ওলিউর রহমান, করিম শেখ, মনোয়ার হোসেন, কামরুজ্জামান, দেলোয়ার হোসেন, গাজিম শেখ, আনিছ মিয়া, মোস্তাফা মিয়া, আব্দুল হক খান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট নগরীর আম্বরখানা এলাকায় রাস্তায় ফেলে এক নারীকে পেটান তপু নামের এক ব্যবসায়ী। ওই দিন সন্ধ্যায় বাংলামেইলে ‘রাস্তায় ফেলে নারীকে পেটালেন ব্যবসায়ী’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এরপর সিলেটসহ সারা দেশে এ ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
তবে এ ঘটনার পরদিন গতকাল বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তপু নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
বিবৃতিতে তপু টেইলার্সের মালিক তপু জানান, তিনি নাজমাকে মারধর করেননি। এ বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে দাবি করে তিনি অভিযোগ করেন, এ নারী তার ব্যবসার ক্ষতি করেছে।
বৃহস্পতিবার নাজমার চাচা শামীম মিয়া বাংলামেইলকে জানান, তপু টেইলার্সে কাজ নেয়ার পর থেকে তার ভাতিজিকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। পাওনা টাকা চাইতে গেলে তপু তার ভাতিজির ওপর নির্যাতন চালায়। আম্বরখানা ফাঁড়ির পুলিশের সাথে তপু ও তার ভাইয়ের সখ্য থাকায় পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট সৈয়দা শিরিন আক্তার এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড সেক্রেটারি রওশন আরা মুকুল এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নাজমা নামে এ নারী পেশাগত কাজে অনিয়ম করে থাকলে মালিক আইনি সহায়তা নিতে পারতেন। জনসম্মুখে নির্যাতনের ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন তারা।