নামাজ খুলবে রিজিকের দ্বার!

monajat-taoba-400x220আল্লাহ মানুষের জীবিকা বা রিজিকের মালিক। কিন্তু জীবন-জীবিকার তাগিদে মানুষ ছুটে বেড়ায় দিকদিগন্তে। রিজিকের চিন্তায় তার বিবেক-বুদ্ধি সদা থাকে ব্যস্ত। অর্থনৈতিক উত্থান-পতনে দিশেহারা হয় মানুষ। অথচ এই রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালা নিজ হাতেই গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, রিজিকের জন্য তোমরা আমার রহমতের দুয়ারে আস এবং নামাজ আদায় কর। যতদিন তোমার জন্য রিজিক থাকবে ততদিন তোমার মৃত্যু হবে না।
মানুষ চাওয়ার আগেই তার সব চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা। শস্য, ফলমূল আর বৃক্ষলতা তারই করুণার সাক্ষী। আকাশ থেকে রহমতের বৃষ্টির অঝর ধারায় তিনিই সিক্ত করেন সৃষ্টিকুলকে। বৃক্ষরাজির অক্সিজেন দিয়ে পরিবেশকে পরিশুদ্ধ করেন; রাখেন বসবাসের উপযোগী করে। পবিত্র কোরআনুল কারিমে সূরা হুদের ৬নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘আর পৃথিবীতে কোনো বিচরণশীল নেই, যার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নেননি।’ সূরা রুমের ৪০নং আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর রিজিক দিয়েছেন, এরপর তোমাদের মৃত্যু দেবেন, এরপর তোমাদের জীবিত করবেন।’
মসজিদ-এ প্রবেশের দোয়া
ﺓاللحم افتح لي أبواب ﺩﺣﻤﺘﻚ
উচ্চারণঃ আল্ল-হুম্মাহ তাহলী আবওয়া-বা রহমাতিকা।
অর্থঃ হে আল্ল-হ! তুমি আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দাও।
মসজিদ-থেকে বের হওয়ার দো’আ:
اللهة إني اسألك من ﻓﻀﻠﻚ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্’আলুকা মিন ফাদলিকা।
অর্থঃ হে আল্ল-হ ! অবশ্যই আমি তোমার অনুগ্রহ আশা করছি।
—( মুসলিম, মিশকাত : হাঃ ৬৫১ )
عَن عُمَرَ رضي الله عنه، قَالَ : سَمِعتُ رَسُولَ الله ﷺ، يَقُولُ: ্রلَوْ أَنَّكُمْ تَتَوَكَّلُونَ عَلَى اللهِ حَقَّ تَوَكُّلِهِ لَرَزَقَكُمْ كَمَا يَرْزُقُ الطَّيْرَ، تَغْدُو خِمَاصاً وَتَرُوحُ بِطَاناًগ্ধرواه الترمذي، وَقالَ: ্রحديث حسنগ্ধ.
বাংলা অনুবাদ
উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথাযোগ্য ভরসা রাখ, তবে তিনি তোমাদেরকে সেই মত রুজি দান করবেন যেমন পাখীদেরকে দান করে থাকেন। তারা সকালে ক্ষুধার্ত হয়ে (বাসা থেকে) বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে (বাসায়) ফিরে।
[তিরমিযি ২৩৪৪, ইবন মাজাহ ৪১৬৪, আহমদ ২০৫, ৩৭২, (তিরমিযি, হাসান)]
পবিত্র কোরআনের উপরোক্ত আয়াতের ভিত্তিতে বলা যায়, পৃথিবীর সব মানুষকে পর্যাপ্ত রিজিক ও নেয়ামত দেওয়া হলে ধন-সম্পদ প্রাচুর্যের কারণে কেউ কারও মুখাপেক্ষী থাকত না। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, মানুষের ধন যত বাড়ে লোভ-লালসা তত বাড়ে। ফলে সবাই পর্যাপ্ত ধন-সম্পদের মালিক হলে পারস্পরিক রেষারেষি ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনোভাব বেড়ে যেত। আল্লাহর প্রদত্ত ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থার কারণে ধনীরা যাদের সম্পদ নেই তাদের কাছেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুখাপেক্ষী থাকে। আবার যাদের সম্পদ নেই ধনীদের সঙ্গে তাদেরও মুখাপেক্ষিতা গড়ে উঠেছে।
আজ আমরা কৃষিকাজ কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্যে রিজিকের অনুসন্ধান করতে গিয়ে নামাজের আদেশ লক্সঘন করছি, অথচ এই নামাজেই রয়েছে আমাদের রিজিকের ফয়সালা। উল্লিখিত দুটি আয়াতেই রিজিক সমস্যার সমাধানে আল্লাহর ইবাদতের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। কোটি মানুষ চেষ্টা করেও এক ফোঁটা পানি বানাতে পারবে না। বানাতে পারবে না একটি শস্যও। তাই রিজিকের একমাত্র মালিক আল্লাহ তায়ালার ওপরই ভরসা করতে হবে সব ধরনের রিজিকের জন্য। তার মহান দরবারেই ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে আমাদের রিজিক প্রার্থনা করতে হবে।


শেয়ার করুন