নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতাল গেইটে অতিরিক্ত টোল টেক্স নেওয়ার প্রতিবাদ

নাইক্ষ্যংছড়ি-রামু সড়কে পাইকারী ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

unnamed (1)হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি :

নাইক্ষ্যংছড়ি-রামু সড়কের নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতাল সংলগ্ন জেলা পরিষদ গেইটে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনে জোর করে অতিরিক্ত টোল টেক্স আদায়ের প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যারিকেট দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে পাইকারী ব্যবসায়ীরা। দিনভর বৃষ্টিতে ভিজে এ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শতশত ব্যবসায়ী অংশ নেন।
পাশাপাশি এ সড়কের পূর্বাংশের গর্জনিয়া বাজার ও নাইক্ষ্যংছড়ি বাজারে বিক্রি করতে আসা শতশত বিক্রেতাদের কাছ থেকে মালামাল ক্রয় করাও বর্জন করেছে তারা। ফলে ঈদের এ পিক-আওয়ারে সপ্তাহিক হাটের দিন মালামাল বিক্রেতারা কয়েক লাখ টাকার মাল বিক্রি করতে না পেরে সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছে কৃষক পরিবারগুলো।এ বিক্ষোভ কর্মসূচীর প্রভাব পড়েছে নাইক্ষ্যংছড়ির লেবুছড়ি, চাকঢালা, বাইশারী ও সোনাইছড়ি বাজারেও।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ কয়েক শতাব্দিকাল ধরে রামু-ককসবাজার-ঈদগাঁও-সাতকানিয়া সহ কয়েকটি এলাকার ব্যবসায়ীরা গর্জনিয়া বাজার ও নাইক্ষ্যংছড়ি বাজারে ব্যবসা করে আসছে। এ ব্যবসা পরিচালনাকালে তারা নিয়মাতান্ত্রিকভাবে সরকারী যাবতীয় টেক্স আদায় করেও আসছিল। এ র্দীঘ সময় ব্যবসায়ী ও ইজারাদারদের মধ্যে সুহাদ্যপূর্ণ সম্পর্কও ছিল। এরই মধ্যে গত কয়েকমাস আগে বান্দরবান জেলা পরিষদের কাছ থেকে হাসপাতাল গেইটটি ডাক নেয় জনৈক ইজরাদার আবু তাহের নামের এক ব্যক্তি।
সবজি ব্যবসায়ী মো: হাশেম, কলা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হানিফ, মো: বেলাল, নূরুল কাদের, লেবু ব্যবসায়ী আবদুল মালেক, সবজি ব্যবসায়ী দেলওয়ার সহ অনেক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ইজারাদার আবু তাহের কয়েকজন বখাটেকে ভাড়া এনে টেক্সের জন্যে নিয়মিত ব্যবসায়ীদের মারধর, হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। আর তাদের দিয়েই মালামাল প্রতি টেক্স আদায় করছে দ্বি-গুন,তিন গুনের বেশী। তারা আরো জানান, ইজারাদার প্রতি জাম্বুরা (তরুমজা) থেকে ১ টাকার পরিবর্তে ৪ টাকা করে টেক্স নেয়। এভাবে এক বস্তা জাম্বুরা থেকে ৮০ টাকা টেক্স নেয় এ ইজারাদার। এভাবে লেবুর বস্তা থেকে ৪০ টাকা, প্রতিটি কলার ছড়া থেকে ২ টাকার পরিবর্তে ৫ টাকা টেক্স নেয়। ভয়ানক বিষয় হচ্ছে প্রতিটি মিষ্টি কুমড়া থেকে টেক্স আদায় করা হয় ১০ টাকা করে।
ব্যবসায়ীদের আরো অভিযোগ এভাবে অতিরিক্ত টেক্স আদায়ের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে ইজারাদার তার লালিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে মারধর করান। আর এ কারনে, তারা বাধ্য হয়ে  বৃহস্পতিবার রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের মহিশকূম এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখে। আর ব্যারিকেট দিয়ে সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে। সারা দিন এভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের পর সন্ধ্যায় নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবুল হোসেন ও কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মনির আহমদ জানান, অতিরিক্ত টোল টেক্স আদায়ের ফলে বাজারের ঐতিহ্য ও সুনাম উভয় নষ্ট হচ্ছে। এ ব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
তবে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে ইজারাদার আবু তাহের সাংবাদিকদের জানান, তিনি জেলা পরিষদ নির্ধারিত টেক্স ছাড়া অন্য কোনভাবে টেক্স আদায় করে না। ব্যবসায়ীরা যা বলছে তা সঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার যা বলবেন তিনি তাই করবেন।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও বান্দরবান ৩০০ নং আসনের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং নাইক্ষ্যংছড়ি সফরে আসলে ভোক্তভোগীরা অতিরিক্ত টোল টেক্স আদায়ের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এখন তাদের একটাই দাবি, এ বিষয়ে অতি শীঘ্রই প্রতিমন্ত্রী বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যতায় এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে হুশিয়ারি দেন তারা।


শেয়ার করুন