ত্রাণের টাকা আত্মসাৎকারী আলতাফ ধঁরাছোয়ার বাইরে

11998679_712747492191327_923932590_n copyবিশেষ প্রতিবেদক :

রেড ক্রিসেন্টের টাকা আত্মসাৎকারী আলতাফ এখনো ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভুক্তভোগীরা শরন্নাপন্ন হলেও প্রশাসন এখনো সহযোগীতা করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতারক আলতাফ শহরের ১ নং ওয়ার্ডের মৃত মৌলভী জামাল উদ্দিনের পুত্র বলে জানা গেছে।

জানা যায়, ২৯ আগষ্ট বিকাল ৪ টার সময় কক্সবাজার রেড ক্রিসেন্ট কার্যালয় থেকে ত্রাণ গ্রহণ করেন ১ নং ওয়ার্ডের ৪০ জন অসহায়- গরীব লোক। ওই দিন সাহায্য প্রার্থীদের ৪০টি কার্ড প্রদান করা হয়। কার্ডের মধ্যে রয়েছে, নগদ ৩ হাজার টাকা, ৮টি খাওয়া স্যালাইন ও একটি তেরপাল।
কিন্তু প্রতারক আলতাফ সুকৌশলে খাওয়ার স্যালাইন ও তেরপাল হত-দরিদ্রদের দিলেও নগদ ৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। সব মিলিয়ে ৪০ জন অসহায়- গরীব লোক থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। উক্ত হাতিয়ে নিয়ে টাকা তার কাছে চাইতে গেলে ওই প্রতারক তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে উল্টো হত-দরিদ্রদের উপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পত্রের সূত্রে জানা গেছে।
যাদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে তারা হলেন, ১ নং ওয়ার্ডে স্থানীয় বাসিন্দ রুবি, রাবেয়া, রেজিয়া, জাইতুন, জান্নাতারা, আমেনা, হুসনেআরা, শাহানা, ছেনুয়ারা, জান্নাত বেগম, জুহরা, সেতরা বেগম, মিনু, কাউসার, জন্নাত, রাশেদা, বুরি, তসলিমা, আরেফা, জুবেদা, জুসনা, মুমেনা, পারভিন, নিলু, হামিদা, জিনুসহ আরো অনেকেই আছেন এই তালিকায়।

ভুক্তভোগী জুহরা জানান, তিনি প্রাপ্ত ত্রাণের টাকা আলতাফকে ফেরত দিতে না চাইলে আলতাফ হুমকী দিয়ে বলেন, আমি রেড ক্রিসেন্টের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা । আর আমি তোমাদেরকে কার্ড দিয়েছি। সুতরাং পরবর্তী কার্ডগুলো ও আমি দিবো, আর এখন যদি টাকা ফেরত না দাও তবে পরবর্তী ১৫ হাজার টাকা আর পাবে না এবং ত্রাণ ও পাবে না। তার কথায় সরল বিশ্বাসেই জুহারা তিন হাজার টাকার খাম আলতাফকে ফেরত দেয়। একই ভাবে জুহরার মতো সকলের কাছ তেকে সুকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা-এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

এ ব্যাপারে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের অবহিত করলে তারাও ভুক্তভোগীদের আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেয়। এরই প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক, ডিজিএফআই কক্সবাজার প্রধান, পুলিশ সুপার, র‌্যাব-৭ জেলা কমান্ডার, সদর মডেল থানার ওসিসহ বিভিন্ন দপ্তরে এর প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ প্রদান করেন ভুক্তভোগীরা। এর সূত্রে ধরে কক্সবাজার মডেল থানার পক্ষ থেকে প্রতারক আলতাফের বিরুদ্ধ তদন্ত শুরু করেছে। কিন্ত থানার তদন্তের টের পেয়ে প্রতারক আলতাফ এখন এলাকা ছেড়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ও তদন্তকারী কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। তদন্ত প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগেও প্রতারক আলতাফের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও স্থানীয় প্রশাসনের কোন ধরনের টনক নড়েনি।
এদিকে ওই প্রতারক আলতাফকে বাঁচিয়ে নেওয়ার জন্য প্রভাবশালী একটি চক্র তদবীর শুরু করেছে। কমিউনিটি পুলিশ ও জাতীয় পার্টির নামধারী নেতা দক্ষিণ রুমালিয়ার ছড়া এলাকার জয়নাল এই চক্রের নেতৃত্বে দিচ্ছে বলে জানা গেছে। জয়নাল সর্ম্পকে প্রতারক আলতাফের খালাত ভাই ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এস আই এম আক্তার কামাল জানান, এলাকার অসহায় লোকজনের জন্য রেড ক্রিসেন্ট থেকে দেয়া টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। আমার ওয়ার্ডে ১৮০ জনকে ত্রাণের কার্ড দেওয়া হয়েছে। তবে কাউকে নগদ টাকা দেয়া হয়নি বলে সবাই অভিযোগ করেছে। তার মতে প্রতারকচক্র ৫ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা হত-দরিদ্র কাছ থেকে আত্মসাৎ করেছে যুব রেড ক্রিসেন্টের দায়িত্বে থাকা নামধারী কিছু লোক।
গরীব ভুক্তভোগীদের ত্রাণের টাকা আত্মসাতকারীদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবী করেছে এলাকাবাসী।


শেয়ার করুন