ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক

JAM-Comilla-Dhaka-CTG-Highwayসিটিএন ডেস্ক:

ঈদকে সামনে রেখে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের মধ্যে। ডাকাতি রোধে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চট্টগ্রাম অংশে ডাকাতপ্রবণ ১২টি পয়েন্টের তালিকা করেছে জেলা পুলিশ। ডাকাতদের প্রস্তুতির সম্ভাব্য স্থান, ডাকাতির এলাকা ও ডাকাতি শেষে নির্বিঘ্নে নেমে যাওয়ার স্থান বিবেচনায় এনে এ তালিকা করা হয়েছে। এসব পয়েন্টে সার্বক্ষণিক পাঁচজন পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ডাকাতপ্রবণ ১২টি পয়েন্টের মধ্যে সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের দুই উপজেলায় ডাকাতপ্রবণ এলাকা রয়েছে ৬টি। অন্য ৬টি পয়েন্ট চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে।

এদিকে বৃষ্টির কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কিছু অংশে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। এসব স্থান দিয়ে গাড়ি যেতে হয় আস্তে আস্তে। ডাকাতরা এসব পয়েন্টকে ডাকাতির জন্য বেছে নিতে পারে বলে তথ্য দিয়েছেন গোয়েন্দারা।

গত ৬ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া কৌট্টা বাজার এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশের সাথে ডাকাত দলের বন্দুকযুদ্ধে নাজিম উদ্দিন চৌধুরী নামের এক ডাকাত নিহত হয়েছিল। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছিল। এসময় দুইটি অস্ত্র ও ১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

খোদ হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরাও বাদ যায়না ডাকাতির কবল থেকে। ডাকাত দমন-পীড়নের দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরাও ডাকাতের কবল থেকে পরিত্রাণ না পাওয়ায় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ক্রমেই হুমকির মুখে পড়ছে।

জানা গেছে, মহাসড়কে প্রত্যেকটি ডাকাতির ঘটনার পরপর পুলিশ সদস্যরা ছুটে আসেন। কিন্তু এ পর্যন্ত ডাকাত গ্রেপ্তার ও মালামাল উদ্ধারে উল্লেখযোগ্য কোন সফলতা পায়নি তারা। অভিযোগ রয়েছে, ডাকাতপ্রবণ নির্দিষ্ট এসব এলাকায় রাতের পর রাত ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়নি। ফলে মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে।

গত ১ জুলাই চট্টগ্রামের পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ বৈঠকে পরিবহন মালিকরা ডাকাতি বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে বলেছেন হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা পুলিশকে। জেলা পুলিশ সুপার সেসময় নিরাপত্তার বিষয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেন।

এদিকে ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে চাঁদাবাজি ও অপরাধীদের দৌরাত্ম্য রোধে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ। নানান বেশ ধারণ করে তারা মহাসড়ক মনিটরিং করছেন। জেলার সীতাকুণ্ড, সাতকানিয়ার কেরানিহাট ও হাটহাজারী থানা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বসানো আছে সিসি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরায় যানজট ও অপরাধীদের তৎপরতা পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি চলছে নজরদারিও।

চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বাংলামেইলকে বলেন, ‘মহাসড়কে টানা বৃষ্টিতে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। এসব স্থানে ডাকাতির আশঙ্কা আছে। খোদ হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরাও বাদ যায়না ডাকাতির কবল থেকে। জেলা পুলিশ এ বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) নাঈমুল হাছান বাংলামেইলকে বলেন, ‘মহাসড়কে যানবাহন চলাচল নিরাপদ করতে ডাকাতপ্রবণ পয়েন্টে সার্বক্ষণিক পুলিশ পাহারা থাকবে। ডাকাতি রোধে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের বিশেষ শাখা ও ডিবির সদস্যরা সাদা পোশাকে মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান করছেন।’


শেয়ার করুন