টানা চতুর্থবার চেয়ারম্যান হচ্ছেন নুর আহমদ আনোয়ারী, ২৩৮৩ ভোটে এগিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

টানা চতুর্থবারের মতো ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন ‘আমজনতার চেয়ারম্যান’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী। সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের অন্যতম হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের এবারের নির্বাচনেও তিনি (চশমা প্রতীক) তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজিজুল হক থেকে ২ হাজার ৩৮৩ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। যদিও এই ইউনিয়নের ১১টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২টি ভোট কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ ও ফলাফল স্থগিত রয়েছে।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) উপজেলার চারটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মধ্যে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদেরও নির্বাচন ছিল। এই প্রতিবেদন তৈরি কালেও এই ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ হওয়া ৯টি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেননি রিটার্নিং কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের একজন ইউপি সদস্য প্রার্থী (মেম্বার প্রার্থী) ৫০০টি ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনায় দু’টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। ইউনিয়নের অন্য ৯টি ভোট কেন্দ্রে যথারীতি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়। পরে কেন্দ্রে ভোট গণনা শেষে প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা কেন্দ্রভিত্তিক ভোটের ফলাফল ঘোষণা করেন।

কেন্দ্রওয়ারি সেই ফলাফল মতে, ইউনিয়নের ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে চশমা প্রতীক নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ও চলমান নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী ৯ হাজার ৮২১ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজিজুল হক পান ৭ হাজার ৪৩৮ ভোট পান। সেই হিসাবে ঘোষিত ৯ কেন্দ্রের ফলাফলে চশমা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী ২ হাজার ৩৮৩ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।

এবারের নির্বাচনে হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন ৫ জন। এদের মধ্যে কেন্দ্রওয়ারি ফলাফলে অপর ৩ প্রার্থীর মধ্যে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে আবদুল্লাহ এক হাজার ৫২৪ ভোট, মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে আলমগীর চৌধুরী ২৮১ ভোট ও আনারস প্রতীক নিয়ে মো. ফরিদুল আলম মাত্র ১৯ ভোট পান।

সুত্র মতে, ওই ৯ কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলেন ২৬ হাজার ৯৫ জন। এদের মধ্যে ১৯ হাজার ৫০৫ জন ভোটার কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের যে দু’টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল স্থগিত রয়েছে তাতে দুই কেন্দ্র মিলে ৪ হাজার ৪২৫ জন ভোটার রয়েছেন। ৩নং নাম্বার কেন্দ্র উনচিপ্রাং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ হাজার ৪৯৩ ভোটার ও ৪নং কেন্দ্র লম্বাবিল এমদাদিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে এক হাজার ৯৩২ ভোট রয়েছে।

পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পরবর্তীতে ওই দুই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ হলে ৪ হাজার ৪২৫ ভোটের মধ্যে ২ হাজার ৪৩ ভোট পেলেই মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী চতুর্থবারের মতো চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিতে পারবেন। তবে এই পর্যালোচনা কেবল মাত্র তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী নৌকার প্রতীকের প্রার্থী আজিজুল হকের মধ্যে প্রতিদ্বন্ধিতা হলে। এখানে অন্য তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হিসেবে রাখা হয়নি। যদি তাদেরও হিসাবে ধরা হয় তাহলে আরও দুই হাজারেরও কম ভোট পেলেও নূর আহমদ আনোয়ারী টানা চতুর্থবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড গড়তে পারবেন।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্পষ্টত এগিয়ে থাকা চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী বর্তমান চেয়ারম্যান। তিনি টানা তিনবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্বশীলতার সাথে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন। এই সময়ে তিনি নিজেকে সাধারণ মানুষের অন্তরে এমন ভাবে জায়গা করে নিয়েছেন যে, তিনি এখন তাদের কাছে ‘আমজনতার চেয়ারম্যান’ ও ‘গরীবের চেয়ারম্যান’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।

ভোটারদের মতে, হোয়াইক্যং ইউনিয়নে মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী নিজেকে সকল ধর্ম-বর্ণ-পেশার মানুষের কাছে অনন্য এক মর্যাদায় উঠে এসেছেন। চেয়ারম্যান হিসেবে তিনদফায় দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তি মাওলানা আনোয়ারী নিজেকেই ইউনিয়ন পরিষদের অফিস বানিয়ে নিয়েছেন। ইউনিয়নের যে কোন মানুষকে প্রয়োজন হলে ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। যখন যেখানে যেভাবে পাওয়া গেছে তখনই সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় কাজটি করে দিয়েছেন অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী। হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের কাছে তিনি হয়ে উঠেছেন একজন দরদী, নিষ্টাবান এবং ‘নিজেদের লোক’! যারা তাঁকে ‘হুজুর’ নামেই ডাকতে অভ্যস্ত ও ভালোবাসেন।


শেয়ার করুন