জানুয়ারি নিয়ে উত্তেজনা, সংঘাত এড়াতে চায় আ.লীগ-বিএনপি

165590_1দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ৫ জানুয়ারি বিএনপির ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। তবে সংঘাতে জড়াবেনা আওয়ামী লীগও বিএনপি।

ঢাকার বাইরে দুই দলেরই ৫ জানুয়ারি কর্মসূচি আছে। দুই দলেরই দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন, সংঘাত এড়াতে সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে। ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে ৫ জানুয়ারিতে ঢাকায় দুটি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। সারা দেশের জেলা ও উপজেলাতেও অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে দলটি।

বিএনপি গত দুই বছর দিবসটিকে ‘গণতন্ত্রের কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। তবে সব কর্মসূচি ঢাকার বাইরে। এবার ৫ জানুয়ারি তারা কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ ছাড়া সব মহানগর ও জেলা সদরে কালো পতাকা মিছিল করবে বলে জানিয়েছে। আর ৭ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের আয়োজন করেছে। তবে এখনো অনুমতি মেলেনি।

এদিকে ৫ জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাজিরার তারিখ নির্ধারিত আছে। এ জন্যই দলটি সমাবেশের তারিখ দুই দিন পিছিয়ে দিয়েছে।

২০১৬ সালে ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মুখোমুখি অবস্থানে চলে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকার কিছুটা নমনীয়তা দেখায়। বিএনপিকে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। আর আওয়ামী লীগ সমাবেশ করে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে। কোনো রকম সংঘাত ছাড়াই দুই দলের কর্মসূচি শেষ হয়।

সরকারের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির কর্মসূচিতে যাতে বেশি মানুষের জমায়েত না হয়, সে জন্য নানা প্রশাসনিক বাধা তৈরি করা হবে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিশ্চিত করারও পরিকল্পনা রয়েছে। তবে গায়ে পড়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো রকম সংঘাতে জড়ানোর পরিকল্পনা নেই আওয়ামী লীগের।

আওয়ামী লীগের সূত্র জানায়, ৫ জানুয়ারিতে বিএনপিকে ঢাকায় কোনো কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না—এই মনোভাব তারা আগেই নানাভাবে বিএনপিকে বুঝিয়ে দিয়েছে। আর বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, তারাও সব ধরনের সংঘাত এড়িয়ে কর্মসূচি পালন করার পক্ষে। এ জন্যই ৫ জানুয়ারি ঢাকায় কোনো কর্মসূচি দেওয়া হয়নি।

তবে ঢাকার বাইরে দুই দলেরই কর্মসূচি রয়েছে ৫ জানুয়ারিতে। দুই দলই ৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগরে সভা করার অনুমতি চেয়েছে পুলিশের কাছে। ফলে দুই দলের পক্ষ থেকেই সংযত হওয়ার নির্দেশনা থাকবে। তবে এরপরও একেবারেই সংঘাত হবেনা তা বলা মুশকিল।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের জন্য দুটি অনুমতি লাগে। একটি গণপূর্ত বিভাগের। অন্যটি পুলিশের। গণপূর্ত বিভাগ থেকে বলা হয়েছে পুলিশের অনুমতি পেলে তারা অনুমতি দেবে। অনুমতি পাওয়ার ব্যাপারে তারা আশাবাদী। আর সমাবেশ করার জন্য বিএনপির সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে তিনি জানান।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ভোট প্রতিহত করার লক্ষ্যে সারা দেশে হরতাল ডাকে। চলে জ্বালাও-পোড়াও। এরপর থেকে দিবসটিকে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। আর বিএনপি দিনটিকে গণতন্ত্রের কালো দিবস বা ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে।


শেয়ার করুন