ছাত্রলীগের নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে যারা

114841_1সিটিএন ডেস্ক:

দুই বছর মেয়াদী কমিটি চার বছর দায়িত্ব পালনের পর আগামীকাল শনিবার শুরু হচ্ছে ছাত্রলীগের দুই দিনব্যাপী কাউন্সিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর সোহরাওয়র্দী উদ্যানে সকালে এই কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন।

এরপর দ্বিতীয় সেশন হবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিউশনে। রবিবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন, সেখানেই নতুন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন।

কাউন্সিল ঘিরে তাই শেষ মুহূর্তের দৌড়-ঝাঁপ চলছে পদ প্রত্যাশীদের। কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা থেকে ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষনেতাদের কাছে লবিং করছেন তারা।

কাউন্সিলরদের ভোটে, না সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন কমিটি হবে- সে বিষয়ে এখনো ছাত্রলীগের নেতাকর্মী স্পষ্ট নন। তবে বর্তমান সভাপতি এবং সাবেক এক সভাপতি ইঙ্গিত দিয়েছেন সমঝোতার কমিটিই হচ্ছে।

সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনটির নেতৃত্বে কারা আসছেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা বাড়ছে।

জানা গেছে, ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে ২৪০ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত যাচাই-বাছাই শেষে ৭৮ জন সভাপতি পদপ্রত্যাশীর মধ্যে ৬৪ জনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার সাধারণ সম্পাদক পদের ১৬২ জনের মনোনয়ন ফরম যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করা হবে।

এবারো সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি হচ্ছে তা অনেকটাই নিশ্চিত। আর এক্ষেত্রে এগিয়ে থাকছেন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি লিয়াকত শিকদারের অনুসারিরা। বিগত দুটি কমিটিতেও শীর্ষ পদ পেয়েছেন তার অনুসারিরা।

অবশ্য এ প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে ছাত্রলীগের বর্তমান এক নেতা বলেন, ‘দুই বছরের কমিটি চার বছর পার করায় অনেক ত্যাগী নেতা সংগঠন থেকে ছিটকে পড়েছেন। বয়সের ফাঁদে ফেলে যোগ্য নেতাদের বাদ দেওয়া হচ্ছে।’

লিয়াকত শিকদারকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘এর বাইরে রয়েছে সাবেক এক নেতা শক্তিশালী সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের কারণেই ছাত্রলীগ যোগ্য নেতৃত্ব পাচ্ছে না।’

কমিটি গঠনের বিষয়ে বর্তমান সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, ‘সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রথমে সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্ব ঠিক করার চেষ্টা হবে। সমঝোতা না হলে নির্বাচনের মাধ্যমে শীর্ষ দুই পদে নেতা নির্বাচন হবে।’

ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারীও একই কথা জানান। তিনি বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আগে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়, না হলে ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করা হয়।’

বর্তমান সভাপতি সোহাগ জানান, ১০১টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি থেকে ২৫ জন করে কাউন্সিলর থাকবেন। তাদের ভোটে শীর্ষ পদের নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে।

২০১১ সালের ১০ জুলাই ছাত্রলীগের সর্বশেষ সম্মেলনে বদিউজ্জামান সোহাগ সভাপতি এবং সিদ্দিকী নাজমুল আলম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে জড়িয়ে সমালোচনায় পড়তে হয় ছাত্রলীগকে। সমালোচনা আসে আওয়ামী লীগের নেতারাও কাছ থেকেও।

নতুন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন- বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামসুল কবির রাহাত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এইচএম আল-আমীন, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক রানা, কেন্দ্রীয় উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, সহ-সম্পাদক আসাদুজ্জামান নাদিম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু, সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক কাজী এনায়েত, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এরশাদুর রহমান চৌধুরী, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক রাইসুল ইসলাম জুয়েল, আইন সম্পাদক ময়েজউদ্দিন শরীফ রুয়েল, মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক শাহ নেওয়াজ প্রধান শুভ, উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক বিপ্লব হাসান পলাশ, উপ-সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক শেখ আসমান, উপ-ছাত্রবৃত্তি সম্পাদক ইমতিয়াজ বুলবুল বাপ্পী ও উপ-ধর্ম সম্পাদক নিউটন দাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহ-সভাপতি কামাল মোহাম্মাদ নাসের (রুবেল) ও যুগ্ম-সাধারণ আসাদুজ্জামান আসাদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক আদিত্য নন্দীর নাম।


শেয়ার করুন