খ্রিস্টধর্ম ছেড়ে ইসলামে ধর্মান্তরিত ম্যাকলিলান ক্রিকেটার উসমান খাজার বাগদত্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ক্যাথলিক ধর্ম ছেড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়ে মুখ খুললেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার উসমান খাজার বাগদত্তা রিচেল ম্যাকলিলান (২২)।

ব্রিসবেনের ২২ বছর বয়সী তরুণী রিচেল ম্যাকলিলান এবং তার মুসলিম বর উসমান খাজা (৩১) আগামী মাসেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছেন। তারা এটিকে ক্রিকেট সেশনের পর সবচেয়ে ‘বড় শ্বেতাঙ্গ বিবাহনুষ্ঠান’ বলে বর্ণনা করেছেন।

তাদের এই সাক্ষাতকারটি আজ রবিবার রাতে প্রচারিত হবে। ৬০ মিনিটের এই অনুষ্ঠানে কনে রিচেল ম্যাকলিলান স্বীকার করেন যে, খাজার সঙ্গে সাক্ষাত করার আগে ইসলামি বিশ্বাস নিয়ে তার মাঝে অনেক ভুল ধারণা ছিল।

রিচেল রিপোর্টার অ্যালিসন ল্যাংডনকে জানান, তিনি এর আগে কখনো কোনো মুসলমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। খাজাই ছিলেন তার সাক্ষাৎ করা প্রথম মুসলমান।

তিনি বলেন, ‘আমি উসমান খাজার চারপাশ সম্পর্কে খুবই অজ্ঞ ছিলাম, আমি তা স্বীকার করবো। খবরের যা শুনেছি আমি কেবল তাই জেনেছি। আমি যা শুনেছি, তার সবটাই ছিল সন্ত্রাসী এবং ভয়াবহ জিনিস।’

পাকিস্তানে জন্মগ্রহণকারী ব্যাটসম্যা

ন খাজা প্রথম মুসলিম হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেয়েছেন। রিচেল জানান, খাজার ধর্মীয় বিশ্বাস সবসময় তার জীবনে প্রথম এসেছে।

এবং তাই খাজা যখন একজন ক্যাথলিক মেয়ে সঙ্গে প্রেমে পড়েন, তখন এটি তার কাছেও একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা হিসাবে এসেছিল।

ইসলাম ধর্মের গৎবাঁধা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার চেষ্টা সত্ত্বেও খাজা বলেন, তাদের সম্পর্ক নিয়ে জনসম্মুখে তারা মানুষের অনেক ক্রোধের স্বীকার হয়েছেন।

উসমান খাজা বলেন, ‘সামাজিক প্রচার মাধ্যমে অধিকাংশ ঘৃণাসূচক বক্তব্য আমি অন্য মুসলিমদের কাছ থেকে পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে আমরা আমাদের দু’জনের ছবি পোস্ট দিলে এর প্রতিক্রিয়া হবে এরকম, ‘ওহ, তিনি মুসলিম নন। এটা হারাম, আপনি তাকে বিয়ে করতে পারেন না।’

২০১৬ সালের জুলাইয়ে নিউইয়র্কে রোমান্টিক ছুটি কাটানোর সময় খাজাই প্রথম তার একসময়কার বান্ধবী রিচেলকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। রিচেল বিসব্রেনের একটি ধার্মিক ক্যাথলিক পরিবারে জন্মগ্রহণ।

তাদের সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ার কারণে এই ব্যাটসম্যান বলছিলেন যে তিনি রিচেলকে তার জন্য ধর্ম পাল্টানোর জন্য কখনো কোনো চাপ দেননি এবং জোর দিয়ে বলেন, এই সিদ্ধান্তটি সম্পূর্ণরূপে রিচেল নিজেই নিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই রিচেলের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বলেনি যে তোমাকে ধর্মান্তর হতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি তাকে বলেছিলাম যে আমি তার ধর্মান্তরকে পছন্দ করি কিন্তু এটি হতে হবে সম্পূর্ণরূপে তার নিজের ইচ্ছার উপর। যদি এটি তার নিজের কাছ থেকে না আসে, অন্তর থেকে না আসে, তাহলে এটি করার কোনো অর্থ হয় না।’

নিজের ক্যাথলিক শিকড় ছেড়ে রিচেল গত বছর ইসলামে ধর্মান্তরের সিদ্ধান্ত নেন।

রিচেল বলেন, ‘আমার ধর্মান্তরের জন্য খাজার কাছ থেকে কোনো চাপ ছিল না। এমনকি তার পরিবার থেকেও কোনো চাপ ছিল না। আমি শুধু জানতাম এটা তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

তাদের গল্প শেয়ার করার মাধ্যমে এই জুটি সমাজে এখনো বিদ্যমান ধর্মীয় ও সামাজিক বাধাগুলি ভেঙ্গে ফেলার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেছেন।


শেয়ার করুন