খালেদার পরোয়ানা ‘রাজনৈতিক ট্রাফিক জ্যামেই’ থাক

pen-ink_400x300_77041_68898-400x279কাজী সিরাজ

বোমা-পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যার অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গত ১৩ মার্চ বিকালে গুলশানে তার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, তার দল মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করে, মানুষ মারার রাজনীতি করে না। উল্টো তিনি অভিযোগ করেন লীগ সরকারের বিরুদ্ধে। তার মতে সরকারই তার লোকজন দিয়ে এসব অপকর্ম করে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপাচ্ছে এবং মানুষের করুণ মৃত্যুকে রাজনীতির পণ্যে পরিণত করেছে। হিটলারের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য হিটলার এমন কৌশল প্রয়োগ করে তার প্রচার মাধ্যমে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপায় এবং তাদের বিরুদ্ধে নির্মম অভিযান চালায়। বিএনপি এবং তার মিত্রদের বিরুদ্ধে আগুনে দগ্ধ করে মানুষ মারার অভিযোগের জবাবে তিনি সরকারের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, এসব নিষ্ঠুর হত্যাকা-ের ব্যাপারে নিরপেক্ষ ও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিচারবিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা করা হোক; এমনকি তিনি আন্তর্জাতিক তদন্তও দাবি করেছেন। প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। সরকারই যে এসব অপকর্মে জড়িত তার স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, নানা প্রকার বাধা-নিষেধের পরও তাদের লোকজনের (এ ব্যাপারে তিনি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নাম উল্লেখ করেন) অপকর্মের খবর পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়ে গেলে তাদের নামকাওয়াস্তে গ্রেফতার করা হলেও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাদের ছাড়ার জন্য সার্টিফিকেট দেন দায়িত্বশীল নেতারা। তিনি তার দলের ও জোটের নেতাদের গ্রেফতার ও মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগও করেন সরকারের বিরুদ্ধে। ২০-দলীয় জোটের চলমান আন্দোলনকে তিনি জনগণের ভোটের অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন হিসেবে ঘোষণা করে স্পষ্ট করেই বলেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ একটি সরকারের অধীনে একটি অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই বর্তমান শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার অবসান ঘটাতে পারে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলনকে জঙ্গিবাদী আন্দোলনের রং দেওয়ার সরকারি প্রচারের বিরোধিতা ও সমালোচনা করে বেগম জিয়া বলেন, সরকার রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের জন্যই এ কৌশল নিয়েছে এবং বর্তমান সংকটকে আইনশৃক্সখলাজনিত সংকট বলে প্রতিপক্ষ দলনে আইনশৃক্সখলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে। তার দাবি, বর্তমান সমস্যা সম্পূর্ণই একটি রাজনৈতিক সমস্যা। যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত রাজনৈতিক লক্ষ্যাভিমুখী ২০ দলের বর্তমান আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
বেগম জিয়ার এই সংবাদ সম্মেলন আকস্মিক হলেও অস্বাভাবিক নয়। মনে রাখতে হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সপ্তাহখানেক ধরে সংসদে এবং সংসদের বাইরে বেগম জিয়াকে বারবার গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে যাচ্ছেন। এর প্রেক্ষিতে কিনা জানি না, তবে তার নিজের, নিজ দল ও জোটের ওপর নানামুখী চাপের প্রেক্ষাপটে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন এ কথা বলাই যায়। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় রাজনীতিতে একটা স্বস্তিদায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। গেল মাসের ২৫ তারিখ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চেরিটেবল ট্রাস্ট মামলায় হাজিরা না দেওয়ায় বিশেষ আদালত বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। কিন্তু তা তামিল হয়নি। বলা হয়েছিল, গ্রেফতারি পরোয়ানা থানায় পৌঁছায়নি বলে তা কার্যকর করা যাচ্ছে না। সারা দেশে জল্পনা-কল্পনা চলতে থাকে, বিএনপি নেত্রীর ব্যাপারে সরকার হয়তো নমনীয় মনোভাব দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঠিক সাত দিন পর ৪ মার্চ ছিল মামলার পরবর্তী তারিখ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে একটা ধারণা জনমনে জন্ম নেয় যে, সরকার হয়তো অপেক্ষা করেছে ওই তারিখে বেগম জিয়ার আদালতে হাজিরার জন্য। হাজিরা দিতে গেলেই তার গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর হয়ে যাবে, আর যদি তিনি হাজিরা না দেন, তবে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে নেওয়া হবে। কিন্তু কোনোটাই হয়নি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত লিখেছি গত ৮ মার্চ সংখ্যায় এ কলামেই। শুধু এটুকুই পুনরুল্লেখ করা যথেষ্ট হবে যে, দেশি-বিদেশি নানা উদ্যোগ-আয়োজন, একসঙ্গে ১৬ বিদেশি কূটনীতিকের বেগম জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলে যায়। স্পষ্টতই মনে হয়েছে, সরকার তাকে আইনের প্যাঁচে আটকে এ মুহূর্তে হেনস্তা করতে চাচ্ছে না। বিষয়টা রাজনৈতিকভাবেই বিবেচনা করা হয়েছে। কিন্তু গত ৭ মার্চ জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম জিয়াকে আবার গ্রেফতারেরই ভয় দেখালেন বলে মনে হলো। তিনি বলেছেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা থানায় পৌঁছলেই খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হবে। দু’দিন পরই আবার তাকে কিছুটা সফট মনে হলো। বললেন, তিনি আশা করছেন বেগম জিয়া আদালতে আৎদসমর্পণ করবেন, তা না হলে জনগণ তাকে ছাড়বে না। অর্থাৎ সরকার এ ব্যাপারে কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি করবে না। প্রধানমন্ত্রীর সংসদে দেওয়া বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, যেহেতু আদালত বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা বহাল রেখেছে, তাই প্রশাসন বিভাগ, বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওপর প্রভাব বিস্তার করে বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দিয়ে পরোয়ানা অতি দ্রুতই থানায় পৌঁছানো হবে এবং বিএনপি নেত্রীর গ্রেফতার এখন সময়ের সুতোয়ই বাঁধা। তাৎক্ষণিক একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে প্রায় সব মহলে। অনেকেই ভাবছিলেন, সরকার কি তাহলে কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে? জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা মহল থেকে বেগম জিয়ার গ্রেফতার, বিরোধী দলের ওপর সরকারি নিগ্রহ এবং সহিংসতা-নাশকতার পরিণতি মারাৎদক হবে বিবেচনায় অতি সম্প্রতি খুব জোরের সঙ্গেই সংলাপ ও সমঝোতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরই ব্রিটিশ আইন সভায় জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক করতে হস্তক্ষেপ করার জন্য সংশ্লিষ্টজনকে অনুরোধ করতে বলা হয়েছে। সেখানে এই মত প্রকাশ করা হয় যে, বাংলাদেশের ব্যাপারে জাতিসংঘের ভূমিকা চায় যুক্তরাজ্য। প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বক্তব্যটা এসেছে এরপর। অর্থাৎ, আবারও কিছুটা সফট এটিচিউড। অবশ্য এখানে একটা আইনি বিষয়ও আছে। গত ৪ মার্চ বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার বিরুদ্ধে জারিকৃত গ্রেফতারি পরোয়ানা বাতিল ও জামিন চেয়ে আদালতে যে প্রার্থনা পেশ করেছেন, বিশেষ আদালত তা বাতিল করেননি। নথিভুক্ত করেছেন। মামলার পরবর্তী তারিখ দিয়েছেন ৫ এপ্রিল। সাধারণের কাছে মনে হয়েছে দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আদালত বেগম জিয়াকে কিছুটা আইনি ‘স্পেস’ দিয়েছেন। উচ্চ আদালতেও জামিন প্রার্থনা ও বিচারক পরিবর্তনের একটি আবেদন শুনানির অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে বেগম জিয়াকে গ্রেফতার করে জটিলতা বাড়ানো সরকারের ঠিক হবে কিনা এটা একটা বড় প্রশ্ন।
বর্তমান পরিস্থিতিকে শ্বাসরুদ্ধকরই বলতে হবে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে আর সরকার আন্দোলন থামাতেও পারবে না এবং আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথাও বলবে না, এতে পরিস্থিতি আরও চরম আকার ধারণ করবে বলেই আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা। এ পরিস্থিতির অবসান হওয়া জরুরি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, ক্ষমতাকেন্দ্রিক চিন্তা-চেতনা থেকেই দুই পক্ষ স্ব স্ব অবস্থানে অনড় হয়ে আছে। বিএনপি-জামায়াত জোট ভাবছে, লীগ সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হলে তাদের সাংগঠনিক ভিত্তি নাস্তানাবুদ হয়ে যেতে পারে, দিনে দিনে নেতা-কর্মীরা আরও বেশি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে, অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। আবার নানা ফন্দিফিকিরের মাধ্যমে অর্থবিত্ত গড়ার স্বপ্নতো আছেই অনেকের মধ্যে। রাজনৈতিক দলকে বিনা পুঁজি বা স্বল্প পুঁজিতে অধিক লাভের একটা ব্যবসা-মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা লোকজনেরই তো ঠাসাঠাসি এসব দলে। যত তাড়াতাড়ি ক্ষমতা পাওয়া যাবে, তত তাড়াতাড়ি ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’ হওয়া যাবে। এ ছাড়া এতদিন ধরে শাসকলীগের হাতে নিগ্রহের প্রতিশোধ স্পৃহা থাকাও অসম্ভব নয়। অপরদিকে ক্ষমতা চলে গেলে সুখের স্বর্গ থেকে বিদায়- এটা মানতে চাইছেন না সরকার পক্ষ। তারা ভয় করছেন, গত ছয় বছরে রাষ্ট্রকর্মে যেসব অনিয়ম করেছেন বলে বিরোধীপক্ষ অভিযোগ করে চলেছে, ক্ষমতা হারালে সবকিছু উঠে আসবে সামনে, তুলে আনা হবে। মামলা-মোকদ্দমায় জর্জরিত হতে হবে। তাদের সবচেয়ে বড় ভয় হচ্ছে, ক্ষমতা না থাকলে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিকে সাহায্যের জন্য পাওয়া না গেলে সারা দেশে তাদের নেতা-কর্মীরা মারাৎদক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। বিশেষ করে সরকারি দলের লোক হিসেবে যারা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসে এবং যত্রতত্র অযথা ছড়ি ঘুরিয়েছেন, ক্ষমতা দেখিয়েছেন এবং মানুষের কষ্টের কারণ সৃষ্টি করেছেন তারা গণরোষে পতিত হতে পারেন- এ আশঙ্কা লীগ সরকারের বিবেচনাধীন থাকতে পারে। ফলে কেউ কারও কাছে হারতে চাচ্ছেন না। বিশেষ করে সরকার মনে করছে সংলাপে বসা মানে তো আল্টিমেটলি আগাম বা মধ্যবর্তী একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে একটা ফায়সালায় আসা। একই সঙ্গে নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট অন্য বিষয়াবলি নিয়েও সমঝোতায় পৌঁছানো। এটাকে তারা পরাজয় মনে করছেন। বিএনপি মনে করছে, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে তারাই বিজয়ী হবে এবং মধ্যবর্তী বা আগাম নির্বাচনের ব্যাপারে সরকার তাদের দাবির কাছে নতি স্বীকার করার অর্থই হচ্ছে নির্বাচনের আগেই শাসকলীগের হেরে যাওয়া। সংলাপ-সমঝোতার বিষয়টা এখানেই আটকে আছে। বিরোধ যদি রাষ্ট্রক্ষমতা ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক ইস্যুতে হতো তা মিটে যেত অনেক আগেই।
কিন্তু দেশের যে অবস্থা তা এভাবে অনির্দিষ্টকাল অমীমাংসিত থেকে যেতে পারে না। তাই দেশ-বিদেশের চতুর্দিক থেকেই দ্রুত সংলাপ ও সমঝোতার তাগিদ আসছে। এখন শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক একটি সমঝোতার কথাই ভাবা হচ্ছে না। নির্বাচন পরবর্তীকালীন অবস্থা কী হবে, কী হতে পারে এবং কী হওয়া উচিত তা নিয়েও কথা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা, ক্ষমতা এককেন্দ্রিকরণ রোধে একই ব্যক্তির একাধারে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও ক্ষমতাসীন দলের প্রধান হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতির আমূল সংস্কারের মাধ্যমে একক আঞ্চলিক এলাকাভিত্তিক নির্বাচন এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির সমন্বয়ে একটি মিশ্র নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন, দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা, সংসদের ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষণ করে ঘূর্ণায়ন পদ্ধতিতে এসব আসনে নির্বাচনের ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে। প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের অর্থায়ন প্রক্রিয়ায়ও স্বচ্ছতা আনার ওপর জোর দিচ্ছেন সমঝোতার তাগাদাদানকারীরা। এরা বলছেন, নির্বাচনে হেরে গেলেই অবিরাম সংসদ বর্জন, একদিনও শান্তিতে দেশ চালাতে না দেওয়ার মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। রাষ্ট্রীয় বিনির্মাণে সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অর্থমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, বর্তমান সংকট জাতীয় সংকট। এ সংকট সমাধানে প্রয়োজন জাতীয় সমঝোতা। সমঝোতা শুধু আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে হলেই চলবে না। দেশপ্রেমিক সব রাজনৈতিক দল, শক্তি এমনকি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবিশেষকেও এ ধরনের একটি উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করতে হবে। রচনা করতে হবে একটি জাতীয় রূপরেখা। নব্বইর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তিন জোটের রূপরেখার একটা মডেল হতে পারে।
কাক্সিক্ষত সংলাপ ও সমঝোতার পূর্বশর্ত হচ্ছে আলোচনার একটা উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা। এ জন্য প্রধান ও প্রবল দুপক্ষকে আচরণে-উচ্চারণে সংযত হতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারে সরকারি মহলে হঠাৎ আবার যে উৎসাহ উছলে উঠেছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
তার বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা ‘রাজনৈতিক ট্রাফিক জ্যামে’ আটকে আছে তো তা আরও কিছুদিন সেই জ্যামেই থাক না। বিএনপিরও উচিত হবে পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সাময়িকভাবে হলেও তাদের কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা। বিরোধীদলীয় নেতাদের (মানবতাবিরোধী অপরাধে দ-িত ও বিচারাধীন আসামিরা নয়) জামিনে মুক্তির প্রক্রিয়ায় সবুজ সংকেত দিয়ে সদিচ্ছার পরিচয় দিতে পারে সরকার। বাংলাদেশ প্রতিদিন
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট


শেয়ার করুন